ভবঘুরেকথা

-সত্যানন্দ মহারাজ

‘গুরু ব্রহ্মা, গুরু বিষ্ণু, গুরুদেব মহেশ্বর
গুরু সাক্ষাৎ পরমব্রহ্ম, তস্মৈ শ্রী গুরুবে নমো:।।’

গুরুজী বলতেন, ‘প্রসাদ তো বহু খেয়েছ, এবার প্রসাদ হয়ে যাও।’

প্রসাদ খেলে মনের মলিনতা নষ্ট হয়, দেহ-মন পবিত্র হয়ে ওঠে, মনে সাত্ত্বিক ভাবের সঞ্চার হয়। কিন্তু প্রসাদ হওয়ার অর্থ যে নিজেকে শুদ্ধ-পবিত্র-সাত্ত্বিক করে ফেলা।

অপূর্ব! শুনে মনটা আনন্দে ভরে গেল। কারণ আমি যদি প্রসাদ না হতে পারি তাহলে ভগবানের নিবেদনে লাগবে না বা ভক্তের সেবায় লাগবে না।

আর তা হলে জীবনটা সার্থক হয়ে উঠবে না। এই মানব জনম অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। গুরু কৃপাহীন হয়ে বেঁচে থাকা পশুর মত জীবন যাপনের থেকেও নিকৃষ্ট।

গুরু হলেন মাতা-পিতা। মাতা-পিতার কৃপাও আর্শীবাদ না থাকলে যেমন এই দেহটা পৃথিবীর আলো দেখতে পারতো না।

ঠিক তেমনি গুরু কুপা বা আর্শীবাদ না থাকলে মানুষ মোহ-মায়ার-অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে আনন্দঘন জ্ঞানামৃতের আলো দেখতে পারতো না।

আমরা বলি জ্ঞানালোক। জ্ঞানই আলো, অজ্ঞানতাই অন্ধকার। মায়ামুক্ত অবস্থাই আলো, মায়াবদ্ধ অবস্থাই অন্ধকার। জ্ঞানই শক্তি, অজ্ঞানতাই দুর্বলতা। জ্ঞানই আনন্দ, অজ্ঞানতাই দু:খ।

‘গুরু ব্রহ্মানন্দং পরমসুখদং কেবলম্ জ্ঞানমূর্তিম্।’

আমরা জ্ঞান অর্জনের জন্য স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে যাই। এই শিক্ষা আমাদের জাগতিক ও ভোগ সর্বস্ব জীবনে উন্নতি ঘটানোর সহায়ক হয়। কিন্তু মোহ মায়ার অজ্ঞানতার অন্ধকার থেকে মুক্ত করতে পারে না বলেই আমরা দু:খ-কষ্ট-জ্বালা-যন্ত্রণার শিকার হই।

কিন্তু সদগুরু সঙ্গ লাভ থেকে মুক্ত পুরুষ পরমব্রহ্ম স্বরূপ সেই শ্রীগুরুর কাছ থেকে যে জ্ঞান আমরা পাই তা আমাদেরও মায়ামুক্ত পরম জ্ঞানী করে।

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

……………………………………
আরো পড়ুন:
গুরুজ্ঞান
গুরু শিষ্য ধারণা
ত্রিতাপ জ্বালা

সদগুরু সঙ্গ
এটা মহাপুরুষের দেশ
জীবাত্মা ও পরমাত্মা
ভগবান কোথায় থাকেন?

সংসার ধর্ম
কি ভাবে সংসার করবো?

ভগবানের সর্বব্যাপীত
ভগবানকে কেন ডাকি?
পরশ পাথর
খারাপ দিন
রথ ও রথের মেলা
জীবনধারা
আমরা সাধারণ মানুষ
সব থেকে বড় হৃদয়
আমার জীবন জুড়িয়ে দাও

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!