ভবঘুরেকথা
শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী

সেদিন সহসা ব্রহ্মচারী বাবা ঘর থেকে বাইরে এসে দাঁড়ালেন। কয়েকজন ভ্ক্ত ঘরের বারান্দায় বসেছিল, এমন সময় একজন স্ত্রীলোক এসে তারঁ সামনে দাঁড়ালেন। তাঁর পারণে ছিল ঘোর লাল শাড়ী। তিনি বাবাকে বললেন- আমি বসন্ত রোগের অধিষ্ঠাত্রী দেবী শীতলা ; আমি এখান দিয়ে যাব, আমার পথ ছাড়।

লোকনাথবাবা আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন বলে ঠিক সময়ে ঘর থেকে বাইরে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। যিনি শীতলাদেবী, তাঁর সারামুখে বসন্তের দাগ ছিল।

লোকনাথ বাবা বললেন- মা, তুমি এখান দিয়ে যেতে পারবে না। এরপর দু’জনেই কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলেন, তারপর শীতলাদেবী বললেন- আমি যাচ্ছি।

এই বলে দেবী বাবার সামনে দিয়ে যাবার জন্য এক পা বাড়িয়েছেন, অমনি বাবা গম্ভীরকণ্ঠে বললেন- আমি কিন্তু এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছি ; দেখি কার সাধ্য এদিকে যায়।

এই ঘটনার দিনকতক পর এক ভুঁইমালীর বাড়িতে অনেকে বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলো। ভুঁইমালী তখন আশ্রমে বাবার কাছে রোগের প্রতিকারের জন্য কান্নাকাটি করতে লাগলেন। বাবা জানতে পারলেন, তার বাড়ি বাঘিনী নদীর তীরে ঢালভূমিতে অবস্থিত। সেইদিকেই শীতলাদেবী গেছেন।

একথা শুনে দেবী যে পা’টি যাবার জন্য বাড়িয়েছিলেন, সে পা সেইখানেই নামিয়ে রাখলেন। তারপর বললেন- আমি কি তাহলে যাবার পথ পাব না? এখানেই দাঁড়িয়ে থাকব?

তখন বাবা বললেন- না মা, তোমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। ঐ যে বাঘিনী নদী দেখছ, তার তীরবর্তী ঢালভূমি ধরে চলে যাও। তবে সাবধান করে দিচ্ছি, উঁচু সমতলভূমিতে উঠতে যেও না।

শীতলাদেবী বাবার আদেশমত সেইদিকে চলে গেলেন।

এই ঘটনার দিনকতক পর এক ভুঁইমালীর বাড়িতে অনেকে বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলো। ভুঁইমালী তখন আশ্রমে বাবার কাছে রোগের প্রতিকারের জন্য কান্নাকাটি করতে লাগলেন। বাবা জানতে পারলেন, তার বাড়ি বাঘিনী নদীর তীরে ঢালভূমিতে অবস্থিত। সেইদিকেই শীতলাদেবী গেছেন।

বাবা তখন ভুঁইমালীকে বললেন- ভয় নেই। তোদের কোন ক্ষতি হবে না, তবে কিছুদিনের জন্য তুই বাড়ির লোকজনদের নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যা, এখানে থাকবি না।

মহাযোগী লোকনাথ ছিলেন ব্রহ্মজ্ঞ, ব্রহ্মলোকের অধিকারী। তাই দেবলোকের উপর তাঁর আধিপত্য জন্মায়। ফলে দেব-দেবীরাও তাঁর আদেশ লঙ্ঘন করতে পারতেন না।

<<লোকনাথ বাবার লীলা : বারো ।। লোকনাথ বাবার লীলা : চৌদ্দ>>

………………………
সূত্র:
শ্রীযামিনী কুমার দেবশর্ম্মা মুখোপাধ্যায়ের ধর্ম্মসার সংগ্রহ গ্রন্থ থেকে।

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

…………………
আরও পড়ুন-
লোকনাথ বাবার লীলা : এক
লোকনাথ বাবার লীলা : দুই
লোকনাথ বাবার লীলা : তিন
লোকনাথ বাবার লীলা : চার
লোকনাথ বাবার লীলা : পাঁচ
লোকনাথ বাবার লীলা : ছয়
লোকনাথ বাবার লীলা : সাত
লোকনাথ বাবার লীলা : আট
লোকনাথ বাবার লীলা : নয়
লোকনাথ বাবার লীলা : দশ
লোকনাথ বাবার লীলা : এগারো
লোকনাথ বাবার লীলা : বারো
লোকনাথ বাবার লীলা : তের
লোকনাথ বাবার লীলা : চৌদ্দ
লোকনাথ বাবার লীলা : পনের
লোকনাথ বাবার লীলা : ষোল
লোকনাথ বাবার লীলা : সতের
লোকনাথ বাবার লীলা : আঠার
লোকনাথ বাবার লীলা : উনিশ
লোকনাথ বাবার লীলা

……………..
আরও পড়ুন-
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : এক
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : দুই
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : তিন
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : চার
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : পাঁচ
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর উপদেশ : উপসংহার

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!