ভবঘুরেকথা

স্বামী পরমানন্দের বাণী: দুই

৪৬.
প্রেমিক গুরুর পাল্লায় না পড়লে সাধনার শেষ ধাপ অতিক্রম করা যায় না।

৪৭.
যদি পরম সত্যকে বোধে বোধ করতে চাও তাহলে দোষদৃষ্টি পরিহার কর।

৪৮.
যাঁর স্মরণে বা অনুশীলনে মানুষের সমস্ত অনিষ্ট দূর হয়, তাই মানুষের ইষ্ট।

৪৯.
প্রিয় আত্মন্! নিজের বিবেককে কুসংস্কারে বন্ধক রেখ না। মুক্তিবিবেক হও।

৫০.
অহংকার প্রধান ব্যক্তিরাই কামুক হন আর অহংকারমুক্ত ব্যক্তিরা প্রেমিক হন।

৫১.
প্রিয় আত্মন্! অক্রোধী ব্যক্তি জগতে বিরল। অক্রোধ দ্বারা ক্রোধকে জয় করো।

৫২.
প্রিয় আত্মন্! ক্ষমাতুল্য জগতে তপস্যা নাই। ক্ষমা দ্বারা বৈরীভাবকে জয় করো।

৫৩.
পার্থিব বিষয়ের জন্য দু:খ কোর না, অজ্ঞানে কাল কাটছে- এই ভেবে দু:খ কর।

৫৪.
জগতে পাপ বলে যদি কিছু থাকে তবে তা হলো দুর্বলতা, অজ্ঞানতা এবং স্বার্থপরতা।

৫৫.
সংসারে দোষ নাই। সংসার-আসক্তিই বন্ধন। আসক্তি ত্যাগ করলেই আর বন্ধন নেই।

৫৬.
অলসতায় কর্মনাশ, অভাবে বুদ্ধিনাশ ও পাপে সর্বনাশ- এটা সব সময় খেয়াল রাখবে।

৫৭.
সাধু কে? -যিনি সত্যে প্রতিষ্ঠিত। নিত্যানিত্যবোধ যাঁর হয়েছে, যাঁর বিবেক সদাজাগ্রত।

৫৮.
দল বেঁধে কখনই ঈশ্বরলাভ করা যায় না। সে জন্য চাই একান্তে খোঁজ- কোণে-বনে-মনে।

৫৯.
ক্রূরতা ব্যক্তিকে অবিবেকী করিয়া তোলে। বিবেককে জাগ্রত করো। ক্রূরতাকে দূর করো।

৬০.
যিনি আত্মানুভের স্পৃহাকে বিসর্জন দিয়ে কৃষ্ণেন্দ্রিয় প্রীতিতে উন্মত্ত, উন্মাদ, তিনিই বাউল।

৬১.
অসংযম দ্বারা শান্তিলাভ হয় না। সংযমই শান্তিলাভের উপায়। ইহাই সনাতন শাশ্বত নিয়ম।

৬২.
সব কিছুই অভ্যাস করতে হয়। অভ্যাসের দ্বারা অসম্ভবও সম্ভব হয়। শুধু আন্তরিক নিষ্ঠা চাই।

৬৩.
সর্বপ্রথমে মানবিক চেতনার উন্মেষ দরকার। তারপর দিব্য চিতনা, তারপর ভগবৎ চেতনা।

৬৪.
যিনি সদাচার-সম্পূর্ণ, আত্মজয়ী, পরোপকারী, স্বার্থবুদ্ধি রহিত ও প্রেমিক-তিনিই প্রকৃত সাধু।

৬৫.
ঈশ্বরভীতি বা ধর্মভীতি ধার্মিকের লক্ষণ নয়, ঈশ্বরপ্রেম ও ধর্মানুরাগ প্রকৃত ধার্মিকের লক্ষণ।

৬৬.
স্বভাবের অনুকূল হলেই শান্তির ছোঁয়া পাওয়া যায় আর স্বারূপকে জানলেই আনন্দপ্রাপ্তি ঘটে।

৬৭.
জ্ঞান, প্রেম ও সেবা -এর দ্বারাই মানুষের হৃদয় জয় করা যায়, আর এটাই শান্তির একমাত্র পথ।

৬৮.
আত্মবিশ্বাসী হও। স্বভাবকে নোংরা বা কলুষিত না করে স্বভাবকে সুন্দর করো। চরিত্রবান হও।

৬৯.
সেবা, জ্ঞান ও প্রেম -এই তিনটেই মধ্যে যে কোন একটাকে ধরে মানুষের জীবনে উত্তরণ সম্ভব।

৭০.
ইন্দ্রিয় থেকে ও যে কোন মোহ থেকে যিনি স্বাধীন হয়ে থাকেন বা কর্ম করেন তিনিই জীবনবাদী।

৭১.
হিংসার দ্বারা হিংসা কখনো শান্ত হয় না, প্রেমের দ্বারাই হিংসার সমাপ্তি হয়, এটাই শাশ্বত নিয়ম।

৭২.
অপরকে কষ্ট বা ব্যাথা দিয়ে যদি তুমি সুখ বোধ কর, তবে তা সুখ নয়- অসুস্থতা বা মনোবিকৃতি।

৭৩.
নারীর ঈর্ষা আর পুরুষের দম্ভ। যে নারীর ঈর্ষা নেই সে দেবী। আর যে পুরুষের দম্ভ নেই সে শিব।

৭৪.
যারা আত্মসুখ জলাঞ্জলি দিয়ে জগতের সুখের জন্য প্রাণপাত করেন, তাঁরাই পূজনীয় এবং নমস্য।

৭৫.
ব্রহ্মচর্যের অভাবে শরীর পরিপুষ্ট হয় না চিত্তে দৃঢ়তা আসে না, ধীশক্তি ও স্মৃতিশক্তি প্রকট হয় না।

৭৬.
ভালবাসার গভীরতায় দিব্য প্রেমের উন্মেষ হয়, জীবনে নেমে আসে পরম শান্তি ও আনন্দের হিল্লোল।

৭৭.
দৈহিক সুখভোগের পর ক্লেশ উপস্থিত হয়। কিন্তু আত্মিক সুখ থেকে অনাবিল আনন্দের আবির্ভাব হয়।

৭৮.
এই শরীর যখন রোগে, শোকে ও ভোগে নষ্ট হবেই তখন তাকে সেবা ও সাধনায় ব্যয়িত করাই শ্রেয়।

৭৯.
প্রকৃত সাধু নিজেকে পুড়িয়ে জীবনপাত করে ধূপের গন্ধ ছড়ানোর মতোই সমাজের কল্যাণ করে যান।

৮০.
ঘৃণা ও স্বার্থের উপত্যকা হতে প্রেমের সুউচ্চ শিখরে আরোহণ কর, তাহলে সমস্ত অন্ধকার কেটে যাবে।

৮১.
মলমূত্র ত্যাগে দেহের আরাম, স্বার্থত্যাগে মনের সুখ ও শান্তি এবং অহংকার ত্যাগে চিদানন্দ লাভ সম্ভব।

৮২
তোমরা স্বার্থদুষ্ট গোষ্ঠীচেতান ও সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক চেতান পরিহার কর এবং মুক্তমনের অধিকারী হও।

৮৩.
ভগবানের অকপট ভালোবাসা এবং অটুট বিশ্বাসের নামই ভক্তি। তাঁর কাছে সর্বদা ঐটিই প্রার্থনা করবে।

৮৪.
সমাজে শান্তি ও কল্যাণ আসবে এবং সমাজ সুস্থ হবে তখনই যখন প্রেমকে কেন্দ্র করে সমাজ প্রতিষ্ঠা হবে।

৮৫.
আমাদের সুখ-দু:খ আমাদের মাসনিক অবস্থার উপর নির্ভর করে, বাইরের অবস্থা বা পরিবেশের উপর নয়।

৮৬.
বাসনা হল সর্বপ্রকার দু:খ এবং অশান্তির মূল, এই বাসনাকে কেন্দ্র করে মানব স্বার্থপর ও সংকীর্ণ হয়ে পড়ে।

৮৭.
ধর্মকে বাদ দিয়ে মানবজাতির কল্যাণ করতে যাওয়া যেন একটা মেরুদণ্ডহীন সরীসৃপকে দাঁড় করাবার চেষ্টা।

৮৮.
সমস্ত রকম রোগ-ব্যাধির মূলে আহার এবং বিহারের অসংযম। অসংযম থেকেই মানুষের যত দুরাগ্রহ বা দু:খ।

৮৯.
যিনি প্রকৃত সাধু, তিনি নিজ স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে সমষ্টির অনুকূল কল্যাণকর্মে নিজেকে নিয়োজিত করে থাকেন।

৯০.
কোন বোধি ব্যক্তির সন্ধান পেলে তাঁর সামনে কৃতাঞ্জলিপুটে অধ্যাত্ম জিজ্ঞাসার দ্বারা অজ্ঞান অন্ধকার দূর কর।

স্বামী পরমানন্দের বাণী: তিন>>

………………………………………….
আরো পড়ুন:
স্বামী পরমানন্দের বাণী: এক
স্বামী পরমানন্দের বাণী: দুই
স্বামী পরমানন্দের বাণী: তিন
স্বামী পরমানন্দের বাণী: চার
স্বামী পরমানন্দের বাণী: পাঁচ
স্বামী পরমানন্দের বাণী: ছয়

……………….
আরও পড়ুন-
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: এক
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: দুই
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: তিন
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: চার
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: পাঁচ
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: সাত
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: আট
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: নয়

……………….
আরও পড়ুন-
মহানবীর বাণী: এক
মহানবীর বাণী: দুই
মহানবীর বাণী: তিন
মহানবীর বাণী: চার
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: এক
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: এক
গৌতম বুদ্ধের বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: তিন
গৌতম বুদ্ধের বাণী: চার

গুরু নানকের বাণী: এক
গুরু নানকের বাণী: দুই
চৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী
কনফুসিয়াসের বাণী: এক
কনফুসিয়াসের বাণী: দুই

…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন- voboghurekotha@gmail.com

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!