ভবঘুরেকথা
শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব

১৮৮৫, ১লা সেপ্টেম্বর
জন্মাষ্টমীদিবসে নরেন্দ্র, রাম, গিরিশ প্রভৃতি ভক্তসঙ্গে
[বলরাম, মাস্টার, গোপালের মা, রাখাল, লাটু, ছোট নরেন, পাঞ্জাবী সাধু, নবগোপাল, কাটোয়ার বৈষ্ণব, রাখাল ডাক্তার]

আজ জন্মাষ্টমী, মঙ্গলবার। ১৭ই ভাদ্র; ১লা সেপ্টেম্বর, ১৮৮৫। ঠাকুর স্নান করিবেন। একটি ভক্ত তেল মাখাইয়া দিতেছেন। ঠাকুর দক্ষিণের বারান্দায় বসিয়া তেল মাখিতেছেন। মাস্টার গঙ্গাস্নান করিয়া আসিয়া ঠাকুরকে প্রণাম করিলেন।

স্নানান্তে ঠাকুর গামছা পরিয়া দক্ষিণাস্য হইয়া সেই বারান্দা হইতেই ঠাকুরদের উদ্দেশ করিয়া প্রণাম করিতেছেন। শরীর অসুস্থ বলিয়া কালীঘরে বা বিষ্ণুঘরে যাইতে পারিলেন না।

আজ জন্মাষ্টমী – রামাদি ভক্তেরা ঠাকুরের জন্য নববস্ত্র আনিয়াছেন। ঠাকুর নববস্ত্র পরিধান করিয়াছেন – বৃন্দাবনী কাপড় ও গায়ে লাল চেলী। তাঁহার শুদ্ধ অপাপবিদ্ধ দেহ নববস্ত্রে শোভা পাইতে লাগিল। বস্ত্র পরিধান করিয়াই তিনি ঠাকুরদের প্রণাম করিলেন।

আজ জন্মাষ্টমী। গোপালের মা গোপালের জন্য কিছু খাবার করিয়া কামারহাটি হইতে আনিয়াছেন। তিনি আসিয়া ঠাকুরকে দুঃখ করিতে করিতে বলিতেছেন, “তুমি তো খাবে না।”

শ্রীরামকৃষ্ণ – এই দেখো, অসুখ হয়েছে।

গোপালের মা – আমার অদৃষ্ট! – একটু হাতে করো!

শ্রীরামকৃষ্ণ – তুমি আশীর্বাদ করো।

গোপালের মা ঠাকুরকেই গোপাল বলিয়া সেবা করিতেন।

ভক্তেরা মিছরি আনিয়াছেন। গোপালের মা বলিতেছেন, “এ মিছরি নবতে নিয়ে যাই।” শ্রীরামকৃষ্ণ বলিতেছেন, “এখানে ভক্তদের দিতে হয়। কে একশ বার চাইবে, এখানেই থাক।”

বেলা এগারটা। কলিকাতা হইতে ভক্তেরা ক্রমে ক্রমে আসিতেছেন। শ্রীযুক্ত বলরাম, নরেন্দ্র, ছোট নরেন, নবগোপাল, কাটোয়া হইতে একটি বৈষ্ণব, ক্রমে ক্রমে আসিয়া জুটিলেন। রাখাল, লাটু আজকাল থাকেন। একটি পাঞ্জাবী সাধু পঞ্চবটীতে কয়দিন রহিয়াছেন।

ছোট নরেনের কপালে একটি আব আছে। ঠাকুর পঞ্চবটীতে বেড়াইতে বেড়াইতে বলিতেছেন, ‘তুই আবটা কাট না, ও তো গলায় নয় – মাথায়। ওতে আর কি হবে – লোকে একশিরা-কাটাচ্ছে।” (হাস্য)

পাঞ্জাবী সাধুটি উদ্যানের পথ দিয়া যাইতেছেন। ঠাকুর বলিতেছেন, “আমি ওকে টানি না। জ্ঞানীর ভাব। দেখি যেন শুকনো কাঠ!”

ঘরে ঠাকুর ফিরিয়াছেন। শ্যামাপদ ভট্টাচার্যের কথা হইতেছে।

বলরাম – তিনি বলেছেন যে, নরেন্দ্রের যেমন বুকে পা দিলে (ভাবাবেশ) হয়েছিলো, কই আমার তো তা হয় নাই।

শ্রীরামকৃষ্ণ – কি জানো, কামিনী-কাঞ্চনে মন থাকলে ছড়ান মন কুড়ান দায়। ওর সালিসী করতে হয়, বলছে। আবার বাড়ির ছেলেদের বিষয় ভাবতে হয়। নরেন্দ্রাদির মন তো ছড়ানো নয় – ওদের ভিতে এখনো কামিনী-কাঞ্চন ঢোকে নাই।

“কিন্তু (শ্যামাপদ) খুব লোক!”

কাটোয়ার বৈষ্ণব ঠাকুরকে প্রশ্ন করিতেছেন। বৈষ্ণবটি একটু ট্যারা।

[জন্মান্তরের খপর – ভক্তিলাভের জন্যই মানুষজন্ম ]

বৈষ্ণব – মশায়, আবার জন্ম কি হয়?

শ্রীরামকৃষ্ণ – গীতায় আছে, মৃত্যুসময় যে যা চিন্তা করে দেহত্যাগ করবে তার সেই ভাব লয়ে জন্মগ্রহণ করতে হয়। হরিণকে চিন্তা করে ভরত রাজার হরিণ-জন্ম হয়েছিল।

বৈষ্ণব – এটি যে হয়, কেউ চোখে দেখে বলে তো বিশ্বাস হয়।

শ্রীরামকৃষ্ণ – তা জানি না বাপু। আমি নিজের ব্যামো সারাতে পারছি না – আবার মলে কি হয়!

“তুমি যা বলছো এ-সব হীনবুদ্ধির কথা। ঈশ্বরে কিসে ভক্তি হয়, এই চেষ্টা করো। ভক্তিলাভের জন্যই মানুষ হয়ে জন্মেছ। বাগানে আম খেতে এসেছ, কত হাজার ডাল, কত লক্ষ পাতা, এ-সব খপরে কাজ কি? জন্ম-জন্মান্তরের খপর!”

[গিরিশ ঘোষ ও অবতারবাদ! কে পবিত্র? যার বিশ্বাস-ভক্তি ]

শ্রীযুক্ত গিরিশ ঘোষ দুই-একটি বন্ধু সঙ্গে গাড়ি করিয়া আসিয়া উপস্থিত। কিছু পান করিয়াছেন। কাঁদিতে কাঁদিতে আসিতেছেন ও ঠাকুরের চরণে মাথা দিয়া কাঁদিতেছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ সস্নেহে তাঁহার গা চাপড়াইতে লাগিলেন। একজন ভক্তকে ডাকিয়া বলিতেছেন – “ওরে একে তামাক খাওয়া।”

গিরিশ মাথা তুলিয়া হাতজোড় করিয়া বলিতেছেন, তুমিই পূর্ণব্রহ্ম। তা যদি না হয়, সবই মিথ্যা!

“বড় খেদ রইল, তোমার সেবা করতে পেলুম না! (এই কথাগুলি এরূপ স্বরে বলিতেছেন যে, দু-একটি ভক্ত কাঁদিতেছেন!)

“দাও বর ভগবন্‌, এক বৎসর তোমার সেবা করব? মুক্তি ছড়াছড়ি, প্রস্রাব করে দি। বল, তোমার সেবা এক বৎসর করব?”

শ্রীরামকৃষ্ণ – এখানকার লোক ভাল নয় – কেউ কিছু বলবে।

গিরিশ – তা হবে না, বলো –

শ্রীরামকৃষ্ণ – আচ্ছা, তোমার বাড়িতে যখন যাব –

গিরিশ – না, তা নয়। এইখানে করব।

শ্রীরামকৃষ্ণ (জিদ দেখিয়া) – আচ্ছা, সে ঈশ্বরের ইচ্ছা।

ঠাকুরের গলায় অসুখ। গিরিশ আবার কথা কহিতেছেন, “বল, আরাম হয়ে যাক! – আচ্ছা, আমি ঝাড়িয়ে দেব। কালী! কালী!”

শ্রীরামকৃষ্ণ – আমার লাগবে!

গিরিশ – ভাল হয়ে যা! (ফুঁ)। ভাল যদি না হয়ে থাকে তো – যদি আমার ও-পায়ে কিছু ভক্তি থাকে, তবে অবশ্য ভাল হবে! বল, ভাল হয়ে গেছে।

শ্রীরামকৃষ্ণ (বিরক্ত হইয়া) – যা বাপু, আমি ও-সব বলতে পারি না। রোগ ভাল হবার কথা মাকে বলতে পারি না। আচ্ছা ঈশ্বরের ইচ্ছায় হবে।

গিরিশ – আমায় ভুলোনো! তোমার ইচ্ছায়!

শ্রীরামকৃষ্ণ – ছি, ও-কথা বলতে নাই। ভক্তবৎ ন চ কৃষ্ণবৎ। তুমি যা ভাবো, তুমি ভাবতে পারো। আপনার গুরু তো ভগবান – তাবলে ও-সব কথা বলায় অপরাধ হয় – ও-কথা বলতে নাই।

গিরিশ – বল, ভাল হয়ে যাবে।

শ্রীরামকৃষ্ণ – আচ্ছা, যা হয়েছে তা যাবে।

গিরিশ নিজের ভাবে মাঝে মাঝে ঠাকুরকে সম্বোধন করিয়া বলিতেছেন,

“হ্যাঁগা, এবার রূপ নিয়ে আস নাই কেন গা?”

কিয়ৎক্ষণ পরে আবার বলিতেছেন, ‘এবার বুঝি বাঙ্গালা উদ্ধার!’

কোন কোন ভক্ত ভাবিতেছেন, বাঙ্গালা উদ্ধার, সমস্ত জগৎ উদ্ধার!

গিরিশ আবার বলিতেছেন, “ইনি এখানে রয়েছেন কেন, কেউ বুঝেছো? জীবের দুঃখে কাতর হয়ে সেছেন; তাঁদের উদ্ধার করবার জন্যে!”

গাড়োয়ান ডাকিতেছিল। গিরিশ গাত্রোত্থান করিয়া তাহার কাছে যাইতেছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ মাস্টারকে বলিতেছেন, “দেখো, কোথায় যায় – মারবে না তো।” মাস্টারও সঙ্গে সঙ্গে গমন করিলেন।

গিরিশ আবার ফিরিয়াছেন ও ঠাকুরকে স্তব করিতেছেন – “ভগবন্‌, পবিত্রতা আমায় দাও। যাতে কখনও একটুও পাপ-চিন্তা না হয়।”

শ্রীরামকৃষ্ণ – তুমি পবিত্র তো আছ। – তোমার যে বিশ্বাস-ভক্তি! তুমি তো আনন্দে আছ।

গিরিশ – আজ্ঞা, না। মন খারাপ – অশান্তি – তাই খুব মদ খেলুম।

কিয়ৎক্ষণ পরে গিরিশ আবার বলিতেছেন, “ভগবন্‌, আশ্চর্য হচ্ছি যে, পূর্ণব্রহ্ম ভগবানের সেবা করছি! এমন কি তপস্যা করিছি যে এই সেবার অধিকারী হয়েছি!”

ঠাকুর মধ্যাহ্নের সেবা করিলেন। অসুখ হওয়াতে অতি সামান্য একটু আহার করিলেন।

ঠাকুরের সর্বদাই ভাবাবস্থা – জোর করিয়া শরীরের দিকে মন আনিতেছেন। কিন্তু শরীর রক্ষা করিতে বালকের ন্যায় অক্ষম। বালকের ন্যায় ভক্তদের বলিতেছেন, “এখন একটু খেলুম – একটু শোব! তোমরা একটু বাহিরে গিয়ে বসো।”

ঠাকুর একটু বিশ্রাম করিয়াছেন। ভক্তেরা আবার ঘরে বসিয়াছেন।

[গিরিশ ঘোষ – গুরুই ইষ্ট – দ্বিবিধ ভক্ত ]

গিরিশ – হ্যাঁ গা, গুরু আর ইষ্ট; – গুরু-রূপটি বেশ লাগে – ভয় হয় না – কেন গা? ভাব দেখলে দশহাত তফাতে যাই। ভয় হয়।

শ্রীরামকৃষ্ণ – যিনি ইষ্ট, তিনিই গুরুরূপ হয়ে আসেন। শবসাধনের পর যখন ইষ্টদর্শন হয়, গুরুই এসে শিষ্যকে বলেন – এ (শিষ্য) ওই (তোর ইষ্ট)। এই কথা বলেই ইষ্টরূপেতে লীন হয়ে যান। শিষ্য আর গুরুকে দেখতে পায় না। যখন পূর্ণজ্ঞান হয়, তখন কে বা গুরু, কে বা শিষ্য। ‘সে বড় কঠিন ঠাঁই। গুরুশিষ্যে দেখা নাই।’

একজন ভক্ত – গুরুর মাথা শিষ্যের পা।

গিরিশ – (আনন্দে) হাঁ।

নবগোপাল – শোনো মানে! শিষ্যের মাথাটা গুরুর জিনিস, আর গুরুর পা শিষ্যের জিনিস। শুনলে?

গিরিশ – না, ও মানে নয়। বাপের ঘাড়ে ছেলে কি চড়ে না? তাই শিষ্যের পা।

নবগোপাল – সে তেমনি কচি ছেলে থাকলে তো হয়।

[পূর্বকথা – শিখভক্ত – দুই থাক ভক্ত – বানরের ছা ও বিল্লির ছা ]

শ্রীরামকৃষ্ণ – দুরকম ভক্ত আছে। একথাকের বিল্লির ছার স্বভাব। সব নির্ভর – মা যা করে। বিল্লির ছা কেবল মিউ মিউ করে। কোথায় যাবে, কি করবে – কিছুই জানে না। মা কখন হেঁশালে রাখছে – কখন বা বিছানার উপরে রাখছে। এরূপ ভক্ত ঈশ্বরকে আমমোক্তারি (বকলমা) দেয়। আমমোক্তারি দিয়ে নিশ্চিন্ত।

“শিখরা বলেছিল – ঈশ্বর দয়ালু। আমি বললাম, তিনি আমাদের মা-বাপ, তিনি আবার দয়ালু কি? ছেলেদের জন্ম দিয়ে বাপ-মা লালন-পালন করবে না, তো কি বামুনপাড়ার লোকেরা এসে করবে? এ-ভক্তদের ঠিক বিশ্বাস – তিনি আপনার মা, আপনার বাপ।

“আর-এক থাক ভক্ত আছে, তাদের বানরের ছার স্বভাব। বানরের ছা নিজে জো-সো করে মাকে আঁকড়ে ধরে। এদের একটু কর্তৃত্ব বোধ আছে। আমায় তীর্থ করতে হবে, জপতপ করতে হবে, ষোড়শোপচারে পূজা করতে হবে, তবে আমি ঈশ্বরকে ধরতে পারব, – এদের এই ভাব।

“দুজনেই ভক্ত (ভক্তদের প্রতি) – যত এগোবে, ততই দেখবে তিনিই সব হয়েছেন – তিনিই সব করছেন। তিনিই গুরু, তিনিই ইষ্ট। তিনিই জ্ঞান, ভক্তি সব দিচ্ছেন।”

[পূর্বকথা – কেশব সেনকে উপদেশ ‘এগিয়ে পড়ো’ ]

“যত এগোবে, দেখবে, চন্দন কাঠের পরও আছে, – রূপার খনি, – সোনার খনি, – হীরে মাণিক! তাই এগিয়ে পড়।

“আর ‘এগিয়ে পড়’ এ-কথাই বা বলি কেমন করে! – সংসারী লোকদের বেশি এগোতে গেলে সংসার-টংসার ফক্কা হয়ে যায়! কেশব সেন উপাসনা কচ্ছিল, – বলে, ‘হে ঈশ্বর, তোমার ভক্তিনদীতে যেন ডুবে যাই।’ সব হয়ে গেলে আমি কেশবকে বললাম, ওগো, তুমি ভক্তিনদীতে ডুবে যাবে কি করে? ডুবে গেলে, চিকের ভিতর যারা আছে তাদের কি হবে। তবে এককর্ম করো – মাঝে মাঝে ডুব দিও, আর এক-একবার আড়ায় উঠো।” (সকলের হাস্য)

[বৈষ্ণবের ‘কলকলানি’ – ‘ধারণা করো’! সত্যকথা তপস্যা ]

কাটোয়ার বৈষ্ণব তর্ক করিতেছিলেন। ঠাকুর তাঁহাকে বলিতেছেন, “তুমি কলকলানি ছাড়। ঘি কাঁচা থাকলেই কলকল করে।

“একবার তাঁর আনন্দ পেলে বিচারবুদ্ধি পালিয়ে যায়। মধুপানের আনন্দ পেলে আর ভনভনানি থাকে না।

“বই পড়ে কতকগুলো কথা বলতে পারলে কি হবে? পণ্ডিতেরা কত শ্লোক বলে – ‘শীর্ণা গোকুলমণ্ডলী!’ – এই সব।

“সিদ্ধি সিদ্ধি মুখে বললে কি হবে? কুলকুচো করলেও কিছু হবে না। পেটে ঢুকুতে হবে! তবে নেশা হবে। ঈশ্বরকে নির্জনে গোপনে ব্যাকুল হয়ে না ডাকলে, এ-সব কথা ধারণা হয় না।”

ডাক্তার রাখাল ঠাকুরকে দেখিতে আসিয়াছেন। তিনি ব্যস্ত হইয়া বলিতেছেন – “এসো গো বসো।” বৈষ্ণবের সহিত কথা চলিতে লাগিল।

শ্রীরামকৃষ্ণ – মানুষ আর মানহুঁশ। যার চৈতন্য হয়েছে, সেই মানহুঁশ। চৈতন্য না হলে বৃথা মানুষ জন্ম!

[পূর্বকথা – কামারপুকুরে ধার্মিক সত্যবাদী দ্বারা সালিসী ]

“আমাদের দেশে পেটমোটা গোঁফওয়ালা অনেক লোক আছে। তবু দশ ক্রোশ দূর থেকে ভাল লোককে পালকি করে আনে কেন – ধার্মিক সত্যবাদী দেখে। তারা বিবাদ মিটাবে। শুধু যারা পণ্ডিত, তাদের আনে না।

ঠাকুর বালকের মতো ডাক্তারকে বলিতেছেন – “বাবু আমার এটা ভাল করে দাও।”

ডাক্তার – আমি ভাল করব?

শ্রীরামকৃষ্ণ (সহাস্যে) – ডাক্তার নারায়ণ। আমি সব মানি।

[Reconciliation of Free Will and God’s Will – of Liberty and Necessity – ঈশ্বরই মাহুত নারায়ণ ]

“যদি বলো সব নারায়ণ, তবে চুপ করে থাকলেই হয়, তা আমি মাহুত নারায়ণও মানি।

“শুদ্ধমন আর শুদ্ধ-আত্মা একই! শুদ্ধমনে যা উঠে, সে তাঁরই কথা। তিনিই ‘মাহুত নারায়ণ।’

“তাঁর কথা শুনব না কেন? তিনিই কর্তা। ‘আমি’ যতক্ষণ রেখেছেন, তাঁর আদেশ শুনে কাজ করব।”

ঠাকুরের গলার অসুখ এইবার ডাক্তার দেখিবেন। ঠাকুর বলিতেছেন – “মহেন্দ্র সরকার জিব টিপেছিল, যেমন গরুর জিবকে টিপে।”

ঠাকুর আবার বালকের ন্যায় ডাক্তারের জামায় বারংবার হাত দিয়ে বলিতেছেন, “বাবু! বাবু! তুমি এইটে ভাল করে দাও!”

Laryngoscope দেখিয়া ঠাকুর হাসিতে হাসিতে বলিতেছেন – “বুঝেছি, এতে ছায়া পড়বে।”

নরেন্দ্র গান গাইলেন। ঠাকুরের অসুখ বলিয়া বেশি গান হইল না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!