ভবঘুরেকথা
শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব

১৮৮৫, ১১ই অগস্ট
মৌনাবলম্বী শ্রীরামকৃষ্ণ ও মায়াদর্শন

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দক্ষিণেশ্বর – মন্দিরে সকাল ৮টা হইতে বেলা ৩টা পর্যন্ত মৌন অবলম্বন করিয়া রহিয়াছেন। আজ মঙ্গলবার ১১ই অগস্ট, ১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দ; (২৭শে শ্রাবণ, ১২৯২, শুক্লা প্রতিপদ)। গতকল্য সোমবার অমাবস্যা গিয়াছে।

শ্রীরামকৃষ্ণের অসুখের সঞ্চার হইয়াছে। তিনি কি জানিতে পারিয়াছেন যে, শীঘ্র তিনি ইহলোক পরিত্যাগ করিবেন? জগন্মাতার ক্রোড়ে আবার গিয়া বসিবেন? তাই কি মৌনাবলম্বন করিয়া রহিয়াছেন? তিনি কথা কহিতেছেন না দেখিয়া শ্রীশ্রীমা কাঁদিতেছিলেন। রাখাল ও লাটু কাঁদিতেছেন। বাগবাজারের ব্রাহ্মণীও এই সময় আসিয়াছিলেন, তিনিও কাঁদিতেছেন। ভক্তেরা মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসা করিতেছেন, আপনি কি বরাবর চুপ করিয়া থাকিবেন?

শ্রীরামকৃষ্ণ ইঙ্গিত করিয়া বলিতেছেন, ‘না’।

নারাণ আসিয়াছিলেন, বেলা ৩টার সময়, ঠাকুর নারায়ণকে বলিতেছেন, “মা তোর ভাল করবে।”

নারাণ আনন্দে ভক্তদের সংবাদ দিলেন, ‘ঠাকুর এইবার কথা কহিয়াছেন।’ রাখালাদি ভক্তদের বুক থেকে যেন একখানি পাথর নামিয়া গেল। তাঁহারা সকলে ঠাকুরের কাছে আসিয়া বসিলেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ (রাখালাদি ভক্তদের প্রতি) – ‘মা’ দেখিয়ে দিচ্ছিলেন যে, সবই মায়া! তিনি সত্য, আর যা কিছু সব মায়ার ঐশ্বর্য।

“আর একটি দেখলুম, ভক্তদের কার কতটা হয়েছে।”

নারাণাদি ভক্ত – আচ্ছা কার কতদূর হয়েছে?

শ্রীরামকৃষ্ণ – এদের সব দেখলাম – নিত্যগোপাল, রাখাল, নারাণ, পূর্ণ, মহিমা চক্রবর্তী প্রভৃতি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!