ভবঘুরেকথা
শনি দেব

: বন্দনা :
বন্দিদেব গজানন পার্বতী নন্দন।
ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর আর দেবগণ।।
সর্ববিঘ্ন নাশ হয় তোমার শরণে।
অগ্রেতে তোমার পূজা করিনু যতনে।।
আদিদেব নিরঞ্জন ক্ষীরোদ শয়ন।
বন্দিলাম ভূমি লুন্ঠিত তাঁহার চরণ।।
যাঁহার হুঙ্কারে সৃষ্টি এই ত্রিভুবন।
বিধি বিষ্ণু মহেশ্বর আর দেবগণ।।
ত্রিনয়নী তারার বন্দিনু চরণ।
বেদমাতা স্বরস্বতী লইনু শরণ।।
বন্দিলাম করজোড়ে পদ কমলার।
বৃন্দাবনে বন্দিলাম রাধাশক্তিকার।।
সকলের পাদপদ্মে করিলাম নতি।
সূর্য্যপুত্র শনৈশ্চর কহিব বর্ণন।
সকলেতে মনদিয়া করহ শ্রবণ।
স্কন্দপুরাণেতে লিখেছেন মুনিবর।
শনির চরিত্রগুণ অতি মনোহর।
তপ-জল উপহারে য্ পূজা করে।
সেই জন সুখি হয় শনৈশ্চয় বরে।
অপুত্র হইলে তার পুত্র জন্মে ঘরে।
সর্বসুখে সুখি হয় সেই শনি বরে।
সেবক লিখিত গ্রন্থ করিয়া সন্ধান।
শনির পাঁচালী কথা পুরাণ আখ্যান।।

ব্রাহ্মণের উপাখ্যান
শ্রীহরি নামেতে এক ছিল বিপ্রবর।
করিতে ব্রাহ্মণ সেবা ছিল মন তাঁর।
সিত্য ভিক্ষা করি করে উদর পূরণ।
তাহাতে দ্বিজসেবাও হয় অনুক্ষণ।
বিনা চিন্তামণি চিন্তা, অন্য চিন্তা নাই।
কেমনে সে চিন্তামণি চিনিবার পাই।।
অন্তরে সদাই সুখি অন্ন নাই পেটে।।
তথাপি কৃষ্ণের নাম লয় অকপটে।
হেনকালে এক পুত্র ভূমিষ্ট হইল।
হেরিয়া তাহার মুখ আনন্দে ভাসিল।।

হরিদাস পুত্র নাম রাখিল ব্রাহ্মণ।
পাঠশালে দেন তারে করিতে পঠন।
হরিদাস সুশীল সকলে গুণ গায়।
অল্পদিন মাঝে সে শিখে সমুদয়।
শাস্ত্রজ্ঞ হইল ক্রমে শাস্ত্র আলোচনে।
পণ্ডিত বলিয়া তারে সকলেই গণে।
কিন্তু তার কিছুতেই নাই অন্য মতি।
সদা চিন্তা কিসে পাবে কমলার পতি।
সকল বিদ্যায় ক্রমে হইল নিপূণ।
চারিদিকে সকলেতে গায় তার গুণ।।
কালেতে সকলি হয় কে করে খণ্ডন।
পড়িল শনির দৃষ্টে দ্বিজের নন্দন।।

শনিতেহরিল বল, বুদ্ধি গেল দূরে।
ভ্রমিতে ভ্রমিতে দ্বিজ গেল বহুদূরে।
যে দশাতে আপনি পড়িয়া ভগবান।
গণ্ডকীতে শিলাকাটি পাইলেক ত্রাণ।।
চতুর্দশ বর্ষ যে শিলা কাটিছিল।
শালগ্রাম তাহাতে শিলা নাম হৈল।।
ইন্দ্র অঙ্গে ভাগের যে চিহ্ন হইয়েছিল।
সেই শনি কোপে পড়ে ভ্রমিতে লাগিল।।
বিদর্ভ নগরে গিয়ে হলো উপনীত।
আশ্চর্য হইল দেখি রাজার চরিত।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!