ভবঘুরেকথা
সত্যনারায়ণ

অঙ্গন্যাস করন্যাস করি সাবধানে।
পুষ্পহস্ত হয়ে দ্বিজ বসিবেক ধ্যানে।
অর্ঘ্য স্থাপন করি ধ্যান পুনর্বার।
বিষ্ণুবীজ মন্ত্রে দিবে সর্ব উপচার।
সমস্ত করিয়া সেবা প্রণাম করিবে।
ইষ্টপদ লইয়া শেষে প্রসাদ পাইবে।
এইরূপে কর পূজা গোকুল নগরে।
অবশ্য পাইবে পার দারিদ্র্য-সাগরে।।
ইহা বলি নারায়ণ গমন করিল।
শয্যা হতে দ্বিজবর উত্থিত হইল।।

প্রাত:ক্রিয়া করি দ্বিজ এল নিজে ঘরে।
কহিল স্বপ্নের কথ ব্রাহ্মণীর তরে।।
স্বপ্নের বৃত্তান্ত যত শুনিয়া ব্রাহ্মণী।
করজোড়ে কহে কথা মুন দ্বিজমণি।।
সত্যনারায়ণ যদি হইল সদয়।
অবশ্য করিব পূজা শুন মহাশয়।।
শুনিয়া ব্রাহ্মণী বাক্য সানন্দ হইল।
নগরে করিয়া ভিক্ষা পূজা আরম্ভিল।।
যেরূপ কহিল প্রভু সত্যনারায়ণ।
সেইরূপ দ্বিজবর করিল পূজন।
ভক্তিভাবে ব্রাহ্মণ করিল প্রণতি।
দারিদ্র-সাগরপার হইল দ্বিজপতি।।

হেমময়ী পূরী হইল কি কহিব কথা।
ছাড়িয়া বৈকুণ্ঠপুরী শ্রীআইল তথা।
সরস্বতী অধিষ্ঠান হইল অধরে।
সম্প্রতি রহিল দোহে দ্বিজের উপরে।।
দিনে দিনে হইল সে মহাধনবান।
পৃথিবী মণ্ডলে দ্বিজ কুবের সমান।।
দাস-দাসীগণ হইল অখণ্ড ভাণ্ডার।
অপূর্ব হইল রীতি কিবা ব্যবহার।
বন্ধু-বান্ধব যত ছিল দেশান্তরে।
দ্বিজের সম্পত্তি দেখি এল ত্বরাকরে।
সত্যনারায়ণ সেবা করে নিরন্তর।
গোকুলনগরে সুখে রইল দ্বিজবর।।
ব্রাহ্মণের উপাখ্যান হইল সমাপন।
কাঠুরিয়া উপাখ্যান শুন সর্বজন।
মাধব-বিনোদ আদি কাঠুরিয়াগণ।
বিক্রয় করিয়া কাষ্ঠ করিতেছে গমন।
গগনে অধিক বেলা ক্ষুধায় কাতর।
আকস্মাৎ হরিধ্বনি শুনিল নগর।।

জিজ্ঞাসিল কাঠুরিয়া হয়ে হৃষ্টমতি।
সবে বলে সত্য সেবা করে কাশীপতি।।
এতেক শুনিয়া তবে কাঠুরিয়া বর।
উপস্থিত হইল আসি গোকুল নগর।
মনেরে ভাবিয়া সত্যকমল চরণ।
রচিল পাঁচালী দ্বিজ গঙ্গানারাায়ণ।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!