ভবঘুরেকথা
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী

রজতগিরিসন্নিভ তাঁর অঙ্গচ্ছটা, ভস্মানুলেপিত গাত্রচর্ম, ত্রিপুণ্ডক অঙ্কিত বিশাল ললাট, মস্তকে সর্পাকৃতি জটাজাল, পরিধানে সামান্য কৌপীন। এ এক অদ্ভুত সন্ন্যাসী। ইনি যেন কোন মানুষ নন, যেন সাক্ষাৎ কৈলাসপতি মহাদেব।

কিন্তু ইনি মানুষ বা দেবতা যেই হোন, একটি ছয় মাসের শিশুর পক্ষে এঁকে এমন মুগ্ধভাবে চেয়ে দেখাটা সত্যিই এক অস্বাভাবিক ঘটনা। শিশুর বাবা মা এ ঘটনা দেখে আশ্চর্য না হয়ে পারেন নি। ভীষণাকার কোন সাধু-সন্ন্যাসী দেখে শিশুরা সাধারণতঃ ভয় পায়। কিন্তু এ শিশু ভয় পাওয়া ত দূরের কথা, অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে রয়েছে তাঁর দিকে। ভীতিবিহ্বলতার চিহ্নমাত্র নেই চোখেমুখে। ঢলঢলে কাঁচা লাবণ্যভরা মুখখানি জুড়ে রয়েছে এক স্নিগ্ধ বিমুগ্ধতা।

শুধু শিশু মনোমোহনই সন্ন্যাসীকে দেখছে না, সন্ন্যাসী নিজেও মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন তার দিকে। সহকারী পরিদর্শক হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী বিনয়নী দেবী গুরুদর্শন করতে গিয়ে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। এই ঘটনাটির কোন তাৎপর্য খুঁজে পেলেন না।

শুধু ভাবলেন, তাঁদের গুরুদেবের দেহ সাধারণ মানুষের মত নয় বলে শিশু এমনভাবে দেখছে, আবার তাঁদের সন্তানটিও দেখতে খুব সুন্দর বলে হয়ত গুরুদেব এমন করে খুঁটিয়ে দেখছেন।

অনেকক্ষণ দেখার পর গুরুদেব বিনয়নী দেবীকে প্রসন্নভাবে বললেন, মায়ী! তেরা লেড়কা বহুৎ সজ্জন হোগা।

শিশু মনোমোহনের জন্মসংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যদিও আশীর্বাদ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন গুরুদেব তথাপি গুরুদেবকে একবার ছেলে দেখিয়ে তাঁর আশীর্বাদ নেওয়ার কথাটা অনেকদিন থেকেই ভাবছিলেন বিনয়নী। আজ তাঁর সে আশা পূরণ হলো।

গুরুদেব শুধু দায়সারা গোছের আশীর্বাদ করলেন না, ছেলের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এক উজ্জ্বল আশ্বাস দিলেন। ছেলে তাঁদের সচ্চরিত্র হবে। এর থেকে তাঁদের গৌরবের আর কি থাকতে পারে।

শুধু ধর্মপ্রাণা‌ সরলহৃদয়া বিনয়নী দেবী নন, ইংরাজি শিক্ষায় শিক্ষিত হেমচন্দ্রও ভালভাবে জানেন, তাঁদের গুরুদেব বালানন্দ ব্রহ্মচারী একজন সাধারণ সাধক নন, তিনি সিদ্ধবাক্ মহাপুরুষ। তাঁর কথা মিথ্যা হবার নয়। ভারতীয় ধর্ম ও সংস্কৃতির ইতিহাসে যা কিছু শ্রেষ্ঠ ঐতিহ্য তার সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে তাঁর আত্মা।

তিনি দধিচির মত ত্যাগী, বশিষ্ঠের মত ক্ষমাশীল, বিশ্বামিত্রের মত কঠোরতপা। তিনি একধারে জ্ঞান ও ভক্তিযোগে সিদ্ধ। তিনি ছিলেন সমস্ত সঙ্কোচ হতে মুক্ত। সমস্ত মত ও পথের ঊর্ধ্বে উঠে গিয়ে ধর্মসাধনার সার সত্যটিকে উপলব্ধি ও আয়ত্ত করে ফেলেছিলেন তিনি যেন। তাই তিনি শৈবমার্গের সাধক হয়েও হরিনাম সংকীর্তন শোনার সঙ্গে সঙ্গে পরম বৈষ্ণবের মতো বিগলিত হয়ে উঠতেন এক গভীর ভক্তিভাবে।

দেহ বিজ্ঞানীদের মতে, গর্ভাবস্থায় মা যা গভীরভাবে চিন্তা করেন সেই চিন্তা পরবর্তীকালে সন্তানের চরিত্রগত উপাদানে পরিণত হয়।

এ কথার সত্যতা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয় মনোমোহনের জীবনে। তিনি যখন মাতৃগর্ভে ভ্রূণরূপে বিরাজ করতেন তখনি যেন গুরুভক্তির এক স্বতঃসিদ্ধ ভাবরস তাঁর দেহের প্রতিটি রক্তকণিকায় ও অস্থিমজ্জার প্রতি অণুপরমাণুর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে যায়। এই স্বতঃসিদ্ধ ভক্তিভাবের নিগূঢ় তাড়নাতেই হয়ত ছয় মাসের অবলা শিশু মনোমোহন কুলগুরু বালানন্দ ব্রহ্মচারীর প্রতি এই আশ্চর্য নিবিড় কৌতূহলে ফেটে পড়েছিলেন।

মনোমোহন তখন কলেজে আইএস-সি পড়তেন। এই সময় প্রায়ই তাঁর মনে হত, এই পার্থিব জগতে যে জীবন তিনি যাপন করছেন সে জীবন মিথ্যা। এত কষ্ট করে যে-বিদ্যা তিনি লাভ করবার চেষ্টা করছেন তা প্রকৃতবিদ্যা নয়, অবিদ্যা। সেই পরম অমৃতময় পরমার্থকে লাভ করাই হলো জীবনের প্রকৃত অর্থ। তাঁকে জানাই হলো প্রকৃত বিদ্যা। তাঁকে পাওয়াই হলো প্রকৃত আনন্দ।

কুলগুরুর প্রতি এক অকৃত্রিম ও অলৌকিক কৌতূহল, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমার পরিবর্তে দিনে দিনে বেড়ে যেতে থাকে মনোমোহনের। মায়ের মুখে কখনো কোন ভাবে গুরুদেবের কথা উঠলেই হলো। বালক মনোমোহন অমনি একরাশ প্রশ্নের বোঝা চাপিয়ে দেবেন মার উপর। তিনি কোথায় থাকেন, যেমন তাঁর ঘর, সঙ্গে কে কে থাকে এই সব অজস্র শিশুসুলভ প্রশ্ন।

বিনয়নী দেবী কিন্তু সেদিন ভাবতে পারেননি, এই সব সহজ সরল প্রশ্নের ঘাত-প্রতিঘাতের ভিতর দিয়ে ধীরে ধীরে এক জটিল আধ্যাত্মিক প্রশ্নের মেঘ জমে উঠছে শিশুর নির্মল অন্তরাকাশে। তিনি বুঝতে পারেননি সেই মেঘ থেকে একদিন যে আত্মঘাতী ঝড়ের সৃষ্টি হবে, সে ঝড় তাঁর সন্তানকে সংসার জীবন থেকে চিরতরে উৎপাটিত করে বিশ্বাত্মবোধ ও ঈশ্বরোপলব্ধির অনন্ত সমুদ্রে নিক্ষেপ করবে।

সেই সমুদ্র মন্থন করে পরমানন্দের যে অমৃতভাণ্ড উদ্ধার করে আনবেন মনোমোহন, তা অকাতরে অজস্র মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে সঞ্জীবিত করে তুলবেন তাদের।

ছেলেবেলায় কথা খুব কম বলতেন মনোমোহন। কিন্তু যখন যা বলতেন তা প্রত্যেকের মনে রেখাপাত করত। পড়াশুনাতেও বেশ ভাল ছিলেন। বিদ্যালয়ের পড়া শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতায় হোস্টেলে থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করার ব্যবস্থা হলো মনোমোহনের। ছোট ভাইও সঙ্গে রইল। তাছাড়া বহুবাজার অঞ্চলে তাঁদের বড় দিদির বিয়ে হয়েছে। ছুটির দিন হলেই দুই ভাই বড়দিদির কাছে গিয়ে থাকেন।

মনোমোহন যে হোস্টেলে থাকতেন সেখানে থাকত যত ধনী ঘরের ছেলেরা। ভোগ সুখ ও আরাম উপভোগের প্রচুর উপকরণ চাইতে না চাইতেই হাতের কাছে পাওয়া যেত। ফরমাস খাটবার জন্য ঝি চাকরেরা তৈরি থাকত সব সময়।

কিন্তু ওসব দিকে কোন খেয়াল ছিল না মনোমোহনের। ভোগ সুখ আরাম স্বাচ্ছন্দ্য আনন্দ উৎসব কিছুই ভাল লাগত না তাঁর। দুরান্বিত প্রত্যয়ের এক অস্পষ্ট সুর অলৌকিক গীতধ্বনির মত বেজে উঠতে তাঁর অন্তরের শূন্যতার মাঝখানে। ক্রমে ওই ব্যাকুলতা দিনে দিনে আরও গভীর হয়ে উঠল। আরও দৃঢ় হয়ে উঠল তাঁর প্রত্যয়।

মনোমোহন তখন কলেজে আইএস-সি পড়তেন। এই সময় প্রায়ই তাঁর মনে হত, এই পার্থিব জগতে যে জীবন তিনি যাপন করছেন সে জীবন মিথ্যা। এত কষ্ট করে যে-বিদ্যা তিনি লাভ করবার চেষ্টা করছেন তা প্রকৃতবিদ্যা নয়, অবিদ্যা। সেই পরম অমৃতময় পরমার্থকে লাভ করাই হলো জীবনের প্রকৃত অর্থ। তাঁকে জানাই হলো প্রকৃত বিদ্যা। তাঁকে পাওয়াই হলো প্রকৃত আনন্দ।

মনোমোহনের আরও মনে হত এই জগতের সবখানে সবকিছুর মধ্যেই তিনি ছড়িয়ে রয়েছেন। কিন্তু কোথাও তাঁকে দেখতে পাচ্ছেন না তিনি। অবিদ্যার মায়াজালে লিপ্ত চোখ দুটিতে অনুভব করছেন যেন এক দুঃসহ অন্ধত্ব‌। সহসা যেন একদিন আলো দেখতে পেলেন মনোমোহন।

দেওঘরের আশ্রম চোখে না দেখলেও তার ছবিও যেন ভাসছে চোখের সামনে। ক্রমে একটা বিশ্বাস দিনে দিনে দানা বেঁধে উঠতে লাগল তাঁর মনে‌। দেওঘরের আশ্রমে গিয়ে বাস করলে তিনি পরমানন্দ লাভ করবেন। জীবন তাঁর ধন্য হয়ে উঠবে।

তাঁর পরিচিত জনকতক ছাত্র মিলে একটি হরিসভা স্থাপন করে তাঁকে তারা নিয়ে যায়। মনোমোহন সেখানে গিয়েই প্রাণভরে হরিনাম সংকীর্তন শুরু করে দেন। এক অলৌকিক ভক্তিভাবে বিভোর মনোমোহন যখন নাচতে নাচতে কীর্তন করতেন সেই সভায়, তখন তাঁকে দেখে দর্শকদের মনে হত, এ যেন নূতন গৌরাঙ্গ। যেমনি গৌরবরণ অঙ্গ, তেমনি দীঘল নয়ন। কুঞ্চিত ঘনকৃষ্ণ কেশপাশ, তেমনি দিব্যভাবে মাতোয়ারা মনপ্রাণ। যে দেখত সেই মুগ্ধ হয়ে যেত।

যতক্ষণ এইভাবে কীর্তন করতেন মনোমোহন ততক্ষণই তিনি ভাল থাকতেন। তিনি আশ্চর্য হয়ে অনুভব করতেন, তখন আর কোন অন্ধকার নেই তাঁর চোখে। এক অলৌকিক আলোর প্রস্রবণ খেলে যাচ্ছে যেন দুচোখের সামনে। সেই আলোর অত্যুজ্জ্বল বিভায় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে এই জগৎ ও জীবনের প্রকৃত স্বরূপটি।

হরিসভায় যতক্ষণ থাকেন ভাল থাকেন মনোমোহন। কিন্তু হরিসভা থেকে হোস্টেলে ফিরে এসেই অত্যন্ত খারাপ লাগে। দুচোখে আবার সেই অবিদ্যার অন্ধকার নেমে আসে। মনে হয় তিনি চোখ থাকতেও অন্ধ। ছোট ভাই মনোমোহনের সঙ্গে থাকে। তবু তাকে হরিসভার কথা কিছু জানান না। হরিসভা যেন তাঁর ব্যক্তিগত আনন্দ বিনোদনের স্থান।

কিন্তু এ আনন্দ বড়ই সাময়িক। মনোমোহনের তৃপ্তি হয় না। এই ধরনের স্থায়ী আনন্দের জন্য দিনে দিনে ব্যাকুল হয়ে উঠতে লাগল তাঁর মন। চকিত বিদ্যুতের আলো যেমন চোখের আঁধারকে ঘন করে দিয়ে যায় তেমনি হরিসভার ক্ষণস্থায়ী আনন্দ তাঁর মনের আঁধারকে বাড়িয়ে দিয়ে যায় মনোমোহনের।

এই সময় কুলগুরু বালানন্দ ব্রহ্মচারীর কথা মনে পড়ে গেল মনোমোহনের। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে আর তাঁকে চোখে না দেখলেও মায়ের কাছে তাঁর কথা বহুবার শুনে শুনে তাঁর সব কথা মুদ্রিত হয়ে গেছে মনের উপর।

দেওঘরের আশ্রম চোখে না দেখলেও তার ছবিও যেন ভাসছে চোখের সামনে। ক্রমে একটা বিশ্বাস দিনে দিনে দানা বেঁধে উঠতে লাগল তাঁর মনে‌। দেওঘরের আশ্রমে গিয়ে বাস করলে তিনি পরমানন্দ লাভ করবেন। জীবন তাঁর ধন্য হয়ে উঠবে।

তখন সন্ধ্যার শান্ত অন্ধকার নেমে এসেছে আশ্রমে। পূজার প্রদীপের মেদুর আলোয়, আরতির ঘণ্টাধ্বনিতে ও ধূপধুনোর গন্ধে এক অপূর্ব ভাবরসঘন পরিমণ্ডল গড়ে উঠেছে সেখানে। অবিদ্যার সমস্ত অন্ধকার, বিভিন্ন অভাবের বিষাদখিন্ন শুষ্কতা মন থেকে মুহূর্তে দূর হয়ে যায়। আত্মা আপন স্বভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, ভূমার নিরবচ্ছিন্ন আনন্দে সারা মন ভরে ওঠে।

মনোমোহন তখন আইএস-সি পাশ করে বিএস-সিতে ভর্তি হয়েছেন। এমন সময় একদিন তাঁর মনের সঙ্গে সংসারের শেষ বন্ধনটুকু চিরদিনের মত ছিঁড়ে গেল। কাপড়-জামা, বাক্স, বইপত্র, টাকা-কড়ি হোস্টেলে রেখে দিয়ে একদিন শুধু দেওঘর যাবার ট্রেনভাড়াটি নিয়ে এক কাপড়ে বেরিয়ে পড়লেন মনোমোহন।

ভাই-এর কাছে শুধু একটি চিঠি লিখে রেখে গেলেন। তাতে লেখা ছিল, আমি যে পথে যাইতেছি সে পথে গেলে আর ভাবনার কিছু থাকে না।

দেওঘরে বালানন্দ ব্রহ্মচারীর আশ্রমের নাম জানে না এমন লোক নেই। সকালে ট্রেনে রওনা হয়ে বিকালে দেওঘর স্টেশনে পৌঁছে আশ্রমের খোঁজ করতে লাগলেন মনোমোহন। আশ্রমের তোরণদ্বারে গিয়ে লজ্জায় একপাশে দাঁড়িয়ে রইলেন। একজন আশ্রমবাসী শিষ্য গিয়ে স্বামীজীকে খবর দিতে স্বামীজী ডেকে পাঠালেন মনোমোহনকে।

সারাদেশ জুড়ে তখন চলছিল প্রবল স্বাধীনতা আন্দোলন। অনেক বিপ্লবী যুবক যখন তখন আশ্রমে এসে আশ্রয় চাইত। এজন্য অনেকে স্বামীজীকে নিষেধ করলেন এই নতুন আগন্তুকের সঙ্গে দেখা না করার জন্য‌। কিন্তু স্বামীজী শুধু একজন সিদ্ধ যোগীপুরুষ ছিলেন না, তিনি ছিলেন করুণা ও মমতার অবতার। আশ্রমে আগত কাউকেই তিনি কখনো বিফল মনোরথে ফিরিয়ে দেন না।

মনোমোহনের কাছ থেকে তাঁর নাম-ধাম প্রভৃতি যাবতীয় পরিচয় জেনে নিলেন স্বামীজী। যখন তিনি শুনলেন, মনোমোহন তাঁর প্রিয় শিষ্য হেমচন্দ্রের ছেলে তখন তাঁর বিস্ময় ও আনন্দের এক মিশ্র অনুভূতি জাগল মনে। তিনি শান্তভাবে অনেক করে ফিরে যেতে বললেন।

কিন্তু মনোমোহন তখন বললেন, আমি সংসার ত্যাগ করে ব্রহ্মচারীর জীবনযাপন করার জন্য আপনার চরণে আশ্রয় নিতে এসেছি। আপনি আশ্রয় না দিলে আমি হরিদ্বারে গিয়ে অন্য সাধুর আশ্রয় নেব।

তখন সন্ধ্যার শান্ত অন্ধকার নেমে এসেছে আশ্রমে। পূজার প্রদীপের মেদুর আলোয়, আরতির ঘণ্টাধ্বনিতে ও ধূপধুনোর গন্ধে এক অপূর্ব ভাবরসঘন পরিমণ্ডল গড়ে উঠেছে সেখানে। অবিদ্যার সমস্ত অন্ধকার, বিভিন্ন অভাবের বিষাদখিন্ন শুষ্কতা মন থেকে মুহূর্তে দূর হয়ে যায়। আত্মা আপন স্বভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, ভূমার নিরবচ্ছিন্ন আনন্দে সারা মন ভরে ওঠে।

মনোমোহনের খাওয়া থাকার সব ব্যবস্থা হয়ে গেল। গুরুদেবের স্নেহের অন্ত নেই। মনে মনে স্থিরপ্রতিজ্ঞ হয়ে উঠলেন মনোমোহন। তিনি আর সামান্য বিদ্যা অভ্যাস করে বৃথা সময় নষ্ট করবেন না; এবার থেকে তিনি এই তপোসিদ্ধ গুরুদেবের চরণে ব্রহ্মবিদ্যা শিক্ষা করবেন।

(চলবে…)

………………………..
আরো পড়ুন:
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী : এক
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী : দুই
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী : তিন

………………………..
ভারতের সাধক ও সাধিকা সুধাংশুরঞ্জন ঘোষ

………………….
পুনপ্রচারে বিনীত: প্রণয় সেন

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

………………….
আরও পড়ুন-
স্বামী অড়গড়ানন্দজী
ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায়
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব
শিরডি সাই বাবা
পণ্ডিত মিশ্রীলাল মিশ্র
নীলাচলে মহাপ্রভুর অন্ত্যলীলার অন্যতম পার্ষদ ছিলেন রায় রামানন্দ
ভক্তজ্ঞানী ধর্মপ্রচারক দার্শনিক রামানুজ
সাধক ভোলানন্দ গিরি
ভক্ত লালাবাবু
লাটু মহারাজ শ্রীরামকৃষ্ণের অদ্ভুত সৃষ্টি
কমলাকান্ত ভট্টাচার্য
ব্রাহ্মনেতা কেশবচন্দ্র সেন
পরিব্রাজকাচার্য্যবর শ্রীশ্রীমৎ দূর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেব
আর্যভট্ট কাহিনী – এক অজানা কথা
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
কঠিয়াবাবা রামদাস
সাধু নাগ মহাশয়
লঘিমাসিদ্ধ সাধু’র কথা
ঋষি অরবিন্দ’র কথা
অরবিন্দ ঘোষ
মহাত্মাজির পুণ্যব্রত
দুই দেহধারী সাধু
যুগজাগরণে যুগাচার্য স্বামী প্রণবানন্দজি মহারাজ
শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর
বাচস্পতি অশোক কুমার চট্টোপাধ্যায়ের লেখা থেকে
মুসলমানে রহিম বলে হিন্দু পড়ে রামনাম
শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্র দেব : প্রথম খণ্ড
শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্র দেব: দ্বিতীয় খণ্ড
শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্র দেব : অন্তিম খণ্ড
মহামহোপাধ্যায় কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ
শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর
শ্রীশ্রী ঠাকুর সত্যানন্দদেব
মহাতাপস বালানন্দ ব্রহ্মচারী: এক
মহাতাপস বালানন্দ ব্রহ্মচারী: দুই
মহাতাপস বালানন্দ ব্রহ্মচারী: তিন
সাধক তুকারাম
সাধক তুলসীদাস: এক
সাধক তুলসীদাস: দুই
সাধক তুলসীদাস: তিন
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী: এক
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী: দুই
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী: তিন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!