ভবঘুরেকথা

কবি জন্মোপাখ্যান।
পয়ার।

ওরে বৎস শোন তোর জন্ম বিবরণ।
তুই যে জন্মিলি তোর পিতার সাধন।।
দেখেছিস বাল্যকালে তোর খুল্লতাত।
জন্ম-অন্ধ নাম তার ছিল শম্ভুনাথ।।
তোর জন্ম বিবরণ তোর মনে নাই।
মৌখিক শুনিলি তোর পিসিমার ঠাই।।
তোর পিতা কাশীনাথ ছিল কালী ভক্ত।
শক্তি আরাধিত কালীপদে অনুরক্ত।।
অপুত্রক ছিল বংশে পুত্র না জন্মিল।
বংশ রক্ষা হেতু দুর্গা বলিয়া কাঁদিল।।
বটপত্রে লক্ষ দুর্গা নাম লিখে পরে।
সপ্তাহ পর্যন্ত শিব স্বস্ত্যয়ন করে।।
আচার্য ফকিরচাঁদ করে স্বস্ত্যয়ন।
স্বস্ত্যয়ন করি বলে বলে জন্মিবে নন্দন।।
স্বর্ণময়ী দশভুজা মূর্তি গঠি লয়।
পূজা করিলেন শুভ-নবমী সময়।।
শ্রীনবকুমার শর্মা পুরোহিত এসে।
পূজা করে জগদ্ধাত্রী পূজার দিবসে।।
সপ্তাহ পর্যন্ত চণ্ডী করিল পঠন।
অষ্টম দিবসে দিল ব্রাহ্মণ ভোজন।।
নবমী দিবসে পূজা কৈল ভবানীর।
তব পিতা বুক চিরে দিলেন রুধির।।
মার্গশীর্ষ অমাবস্যা শনিবার দিনে।
তোর মাতা প্রসব করিল শুভক্ষণে।।
নাম করণেতে নাম রাখিল তারক।
আচার্য বলিল পুত্র হইবে রচক।।
যেই নারী স্তবাস্টক দিলেন তোমায়।
সেই শক্তি দিবে শক্তি রচনা সময়।।
যে কথা লিখিতে সন্দেহ হইবে তব।
সেও শক্তি দিবে তোরে আমি শক্তি দিব।।
যে সময় জীবনান্ত হইল আমার।
কোলে করি ধরেছিলি মম কলেবর।।
হরিসুত গুরুচাঁদ আজ্ঞা অনুসারে।
রচনা করহ শীঘ্র নির্ভয় অন্তরে।।
পূর্বে ছিল মুনিগণ করিতেন ধ্যান।
এবে সেই ধ্যান হয় জ্ঞানেতে বিজ্ঞান।।
পঙ্গুজন লঙ্ঘে গিরি বোবা কথা কয়।
অন্ধজন চক্ষে দেখে মহৎ কৃপায়।।
বাজীকর ছায়াবাজী দেখায় বিপুল।
নাচাইতে পারে তারা কাষ্ঠের পুতুল।।
গোস্বামী গোলোক দশরথ মৃত্যুঞ্জয়।
তুই কাষ্ঠ পুত্তলিকা তেমনি নাচায়।।
বালকেরা খেলে যেন কড়িখেলা দান।
নানাভাবে পড়ি কড়ি গড়াগড়ি যান।।
কড়িতে না জানে আমি কি খেলা খেলাই।
খেড়ুবিনে সে খেলা বুঝিতে সাধ্য নাই।।
মৃত্যুঞ্জয় দশরথ আর মহানন্দ।
তোরে করে ফেলাফেলি তাদের আনন্দ।।
শীঘ্র করি লেখ মোর প্রভুর মহিমে।
লেখ লেখ যাহা তোর উঠিবে কলমে।।
যা দেখিস যা শুনিস তাহাতো লিখিবি।
না দেখিলি না শুনিলি কেমনে পারিবি।।
কোন ঠাই লিখিতে হইলে কিছু সন্ধ।
আরোপে দেখিল হরি চরণারবিন্দ।।
অজ্ঞান অবিদ্যা নাশ হবে অত্রানন্দ।
হৃদয় আসিয়া লেখাইবে হরিচন্দ্র।।
এভাবে গোলোকচন্দ্র সদয় হইল।
হরি হরি বল ভাই তারক রচিল।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!