ভবঘুরেকথা
সতীমাতা ভবেরগীত কর্তাভজা

কর্তাভজা সত্যধর্মের ৩০ ধারা

ধারা : এক

ঠাকুর আউল চাঁদ প্রবর্তিত কর্তাভজা সত্যধর্ম কোন ব্যক্তি গ্রহণ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে তাকে এক বাক্যে সত্যনামে দীক্ষা দিবে না। সত্যনাম গ্রহণেচ্ছুককে প্রথমে কর্তাভজা সত্যধর্মের মূলস্তম্ভ, মূলনীতি, আদর্শ-উদ্দেশ্য বিষয়ে অবগত করাবে, এসব বিষয় অবগত হওয়ার পর যদি পূর্ণ শ্রদ্ধা-ভক্তি-বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নীতি-আদর্শ-বিধি-নিষেধ যথাযথভাবে পালনের অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়, তাহলে তাকে সত্যনামের আংশিক মূলতত্ত্ব “জয়গুরু সত্য” নামে দীক্ষা প্রদান করবে।

সে যদি স্ব-ধর্ম সৎ-আচরণ শুদ্ধভাবে যাজনের জন্য সচেষ্ট হয় তাহলে পরবর্তীতে তাকে পূর্ণ সত্যনামে দীক্ষা প্রদান করবে। পূর্ণ সত্যনামে দীক্ষাগ্রহণের পূর্বেই যদি তার দীক্ষাগুরু দেহান্তর/দেশান্তর হয় তাহলে পরবর্তীতে তার পছন্দমত সত্যমতাশ্রিত যে কোন গুরুদেবের কাছে থেকে পূর্ণ সত্যনামে দীক্ষাগ্রহণ করতে কোন নিষেধ নেই।

কর্তাভজা সম্প্রদায়ভুক্ত পিতা-মাতার ঘরে জন্ম হলে জন্মসুত্রেই সে একজন কর্তাভজা। কর্তাভজা সম্প্রদায়ভুক্ত ঐরূপ একজন প্রাপ্ত-অপ্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির আংশিক বা পূর্ণ সত্যনামে দীক্ষা প্রদানে কোন নিষেধ নেই। কর্তাভজা সত্যধর্মের সমাজ ব্যবস্থায় নব বিবাহিত বর-বধুর সত্যনামে দীক্ষাগ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। (যদি বিবাহের পূর্বে সত্যনামে দীক্ষাগ্রহণ করে না থাকে)।

দীক্ষা প্রদানকারী গুরুদেব দীক্ষাগ্রহণকারী শিষ্য উভয়ে উপবাস থেকে পবিত্রভাবে বেলা দ্বি-প্রহরের পূর্বেই দীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সু-সম্পন্ন করবে, দীক্ষা গ্রহনান্তে-শিষ্য-গুরুদেবকে যথাসম্ভব দক্ষিণা দান করবে। কর্তাভজা সত্যধর্মে দীক্ষাগুরু ও শিক্ষাগুরু একই জন, আত্মজ্ঞান পিপাসু ব্যক্তি অবশ্যই চৈতন্যজ্ঞান সম্পন্ন সদ্গুরুর কাছে থেকে দীক্ষাগ্রহণ করবে।

ধারা : দুই

কর্তাভজা সত্যধর্ম পালন করতে হলে দেহ-মন-বাক্য এই তিন বিষয়ে অবশ্যই সংযত থেকে হবে।

কায়িক: দেহ দ্বারা কোন প্রাণীকে হিংসা করবে না।

মানষিক: একে অপরের বিরুদ্ধে শঠতা-চাতুরী-কুমন্ত্রনা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকবে, মনে মনেও কখন অহংকার করবে না এবং কারো অমঙ্গল বা অনিষ্ঠ চিন্তা করবে না।

বাচনিক: সত্যমতাশ্রিত ব্যক্তি সদাসর্বদা সত্য কথা বলবে, মিথ্যা ভাষণ, কটুক্তি, পর নিন্দা অপ্রয়োজনীয় বাক্য ব্যয় সর্বতোভাবে পরিত্যজ্য।

এমন কোন কার্য করবে না যাতে দেহ- মন-বাক্য এই তিনটি ব্যভিচার দোষে পতিত হয়।

ধারা: তিন

সত্য মতাশ্রিত কোন ব্যক্তি পরস্ত্রী বা পর পুরুষের সাথে হাসি-ঠাট্টা-উপহাস ও ধর্মীয় আচার বহির্ভূত কোন বাক্যালাপ করবে না।

সত্য মতাশ্রিত কোন পুরুষ বা নারীর কামনামূলক মন নিয়ে রূপ সেবন সবিশেষ নিষিদ্ধ। মনে মনেও কখনো পরস্ত্রী বা পর পুরুষে আসক্তি করবে না। সত্যমতাশ্রিত একজন ভক্ত ব্যভিচার দোষ থেকে নিজেকে সদাসর্বদা মুক্ত রাখবে।

সৎ চরিত্র মানুষের মহৎ গুণ ও অমূল্য সম্পদ। অর্থ-সম্পদের বিনিময়ে চরিত্র অর্জন করা যায় না, ব্যাভিচার ও চৌর্য বৃত্তির দ্বারা মানুষ চরিত্রহীন হয় চরিত্রহীন মানুষ পশুর সমতূল্য। সত্য মতাশ্রিতরা অবশ্যই চরিত্রবান ও মহৎগুণের অধিকারী থেকে সচেষ্ট থাকবে।

ধারা: চার

মদ বা মাদক জাতীয় দ্রব্য পান-আহার এবং মাংস-ডিম ও উচ্ছিষ্ট ভোজন সর্বতোভাবে নিষিদ্ধ।

মাদক সেবনে মানুষ ক্রমান্বয়ে বিবেকহীন হয়। প্রজনন ক্রিয়ায় যাদের মা-সন্তান জ্ঞান নেই সেই সব পশু-পাখীর মাংস-ডিম ভক্ষণ সাধন-ভজনের পথে বিশেষ অন্তরায়, এতে আত্মা ক্রমান্বয়ে অধঃগতি প্রাপ্ত হয়। উচ্ছিষ্ট ভোজনের মাধ্যমে সংক্রামক ব্যধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সত্যমতাশ্রিত একজন ভক্ত স্বপ্রোণদিত হয়ে নিজের উচ্ছিষ্ট দ্রব্য কারো দিবে না আবার কারো উচ্ছিষ্ট ভোজন করবে না, এমন কি একজন গুরুদেব পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে স্বপ্রোণদিত হয়ে তার শিষ্যকেও উচ্ছিষ্ট ভোজন করাবে না।

শুধুমাত্র মুখরোচক খাদ্য হিসাবে ব্যবহার হয় ঐ জাতীয় পশু-পাখি গৃহে পালন করবে না, সত্যমতাশ্রিত ব্যক্তি ২/৩/৪ ধারামতের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করলে ঐ ব্যক্তি ভগবজ্জন বলে বিবেচিত হবে না।

ধারা: পাঁচ

পবিত্রতা ধর্মের একটি বিশেষ অঙ্গ তাই দেহ-মন-বাক্য সদাসর্বদা সাধ্যমত পবিত্রতা রক্ষায় স্বচেষ্ট থাকবে।

বিধিমত নাম স্মরণের সময়, উপাসনালয়ে প্রবেশের সময়, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দানের সময়, ধর্মগ্রন্থ পাঠ, কীর্তণ এবং সাধু সেবার রন্ধন কার্যের সময় বিশেষভাবে পবিত্রতা রক্ষা করবে।

দেহ-মন-বাক্য অপবিত্র অবস্থায় কারো প্রণাম করবে না এবং কারো প্রণাম গ্রহণ করবে না।

ধারা: ছয়

কর্তাভজা সত্যধর্মের যাবতীয় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে নারী পুরুষের সমান অধিকার।

যে স্ত্রীলোক সত্যমতের নীতি-আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, বিধি-নিষেধ পালনে সচেষ্ট এবং ভক্ত ভাবাপন্ন তার সাথে বৈঠক অনুষ্ঠান ও সত্য মত সংক্রান্ত আলাপ আলোচনায় নিষেধ নাই।

যদি কোন স্ত্রীলোক ২/৩/৪ ধারামতে শুদ্ধাচারী-নিষ্ঠাবান এবং কর্তাভজা সত্যধর্ম বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞ হয় তাহলে ঐ ব্যক্তি গুরুদেবের আজ্ঞাক্রমে কর্তাভজা সম্প্রদায়ের গুরুদেব/দীক্ষাগুরু থেকে পারবে।

ধারা: সাত

ইহজাগতিক দৃষ্টিতে পিতামাতই প্রথম ও প্রধান গুরু, সত্যমতাশ্রিত প্রত্যেক ব্যক্তিই পিতা-মাতাকে সর্বাঙ্গীণভাবে সেবাযত্ন করবে, সন্তানের ব্যবহারে পিতা-মাতা সন্তুষ্ট হয়ে আশীর্বাদ করলে সন্তানের সকল আশা পূর্ণ হয় আর দুঃখ পেয়ে অভিশাপ দিলে সন্তানের অমঙ্গল হয়। সত্যমতাশ্রিত ভক্তগণ তার পিতা-মাতা গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধাবনত: চিত্তে প্রত্যেকদিন ভক্তিপূর্ণ প্রণাম করবে এবং তাদের অবাধ্য হবে না।

সন্তানের জাগতিক শান্তি ও পারমার্থিক মুক্তি উভয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া ও সেই পথে পরিচালিত করা প্রত্যেক পিতা-মাতার নৈতিক দায়িত্ব। প্রত্যেক পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের সু-শিক্ষায়-শিক্ষিত করে গড়ে তুলবে এবং সৎ চরিত্রবান হওয়ার জন্য ধর্মীয় নীতি-আদর্শ অনুস্মরণ করার উপদেশ দিবে। তবে অজ্ঞতা বা অবজ্ঞা বশত: যদি কোন পিতা-মাতা সন্তানের প্রতি ধর্মীয় নীতি-আদর্শ বিরুদ্ধ বা পারমার্থিক মুক্তি পথের অন্তরায় ঐ রূপ কোন নির্দেশ প্রদান করে তাহলে ঐ নির্দেশ পালন না করলেও সন্তানের কোন অপরাধ হবে না।

পারমার্থিক জগতের দৃষ্টিতে দীক্ষা দাতা গুরুদেবই সর্বশ্রেষ্ঠ গুরু। সত্য মতাশ্রিত ভক্তগণ গুরুদেবের শ্রীচরণ কমলে দেহ-মন সমর্পণ করতঃ বিনম্র চিত্তে শ্রদ্ধা-ভক্তি সহকারে গুরুকে প্রণতি করবে। তবে কোন গুরুদেব তার ভক্ত দ্বারা কোন প্রকার শারীরিক সেবা করাবে না কারণ ইহা অতীব অনর্থের মূল। গুরুদেব যদি স্বপ্রণোদিত হয়ে ঐ রূপ কোন আজ্ঞা দেয় তাহলে ঐ বাক্য পালন না করলেও শিষ্যের কোন অপরাধ হবে না।

ধারা: আট

সত্যনামে দীক্ষিত সত্যমতাশ্রিতগণ প্রত্যেকদিন ৪ বার (ব্রহ্মমূহুর্ত, মধ্যাহ্ন, সান্ধ্যকালীন ও মধ্যরাত্রি) বিধিমতো নাম স্মরণ ও প্রার্থনা করবে। নাম স্মরণের সময় দেহ-মন ও পরিধেয় বস্ত্র অবশ্যই পবিত্র থাকতে হবে। নাম স্মরণের বিষয়সমূহ গুরুদেবের কাছে থেকে জেনে নিবে।

প্রত্যেকদিন চারবার নামস্মরণ ও প্রার্থনা করা সম্ভব না হলে দিনান্তে অন্তত: সকাল-সন্ধ্যা ২বার অবশ্যই বিধিমতো মালিকের নাম স্মরণ ও প্রার্থনা সু-সম্পন্ন করবে। তাছাড়া প্রত্যেকদিন রাত্রিবেলা শয়নকালে কম পক্ষে ১০ বার সত্যনাম স্মরণ করত: করজোড়ে [হে দয়াময় মালিক এ কায়িকের গাফিলী-তস্কির-কসুর সকল মাপ করহ্।] ৩ বার এই ক্ষমা প্রার্থনা করে নিদ্রা যাবে, আবার প্রত্যুষে ঘুম থেকে উঠে পবিত্র/অপবিত্র যে অবস্থায় থাক না কেন ১০ বার সত্যনাম স্মরণ করত: ঐ ক্ষমা প্রার্থনা করবে তারপর শয্যা ত্যাগ করতঃ আপন কর্মে নিযুক্ত হবে।

যিনি পরিবারের কর্তা তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণকেও স্ব-ধর্মের আদর্শে গড়ে তুলবে, এটা তার নৈতিক দায়িত্ব।

ধারা: নয়

কর্তাভজা সত্যধর্মে শুক্রবার অতীব পবিত্র এবং উপাসনা-প্রার্থনার গুরুত্বপূর্ণ দিন, কর্তাভজা সম্প্রদায়গণের এই দিনটি বিশেষভাবে পালনীয়।

সত্যমতাশ্রিত ভক্তগণ শুক্রবারের ব্রহ্মমুহুর্ত থেকে অষ্ট প্রহর নিরামিষ দ্রব্য পান-আহার করবে, তবে উপবাসের কোন বিধান নেই; উপবাস করা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়।

শুক্রবারে সন্ধ্যাকালে কর্তাভজা উপাসনালয়ে ভক্তগণ একত্রে মিলিত হয়ে মালিকের পূজা ভোগ নিবেদন মহাগ্রন্থ ভাবেরগীতের আলোকে উপাসনা প্রার্থনা-ভাবেরগীত পাঠ-শ্রবন-কীর্ত্তন করতঃ স্ব-স্ব-স্থানে গমন করবে ইহা মালিকের হুকুম। শুক্রবারে উপাসনা প্রার্থনার নির্দিষ্ট দিন ধার্য থাকায় রাত্রিকালীন সময়ে ঐদিন সার্বজনীন বা ব্যক্তিগত কোন বৈঠক অনুষ্ঠানের দিন ধার্য করবে না।

ধারা: দশ

যে স্থানে সত্যমতাশ্রিত একাধিক পরিবার বসবাস করবে সেখানে ভক্তগণ সম্মিলিতভাবে সার্বজনীন কর্তাভজা উপাসনালয় প্রতিষ্ঠা করবে এবং সার্বজনীন ভাবে বৎসরের যে কোন দিনে মহতী বৈঠক অনুষ্ঠান সত্যসভা, দেবী পক্ষের প্রতিপদ তিথীতে সতীমায়ের স্মরণ উৎসব ও ফাল্গুনী পূর্ণিমায় সতীমায়ের দোল উৎসবের আয়োজন করবে। তাছাড়াও সাধ্য থাকলে ব্যক্তিগতভাবে নিজগৃহে সাধুসেবার নিমিত্তে বৈঠক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।

একজন সত্যমতাশ্রিত যেখানে যে অবস্থাতে বসবাস করবে সেখানে পারিবারিকভাবে প্রত্যেকদিন নাম স্মরণ ও সন্ধ্যা প্রদীপ দেওয়ার জন্য ক্ষুদ্র পরিসরে বাড়ির আঙ্গিনায় বা নিজ গৃহে সতীমায়ের আসন প্রতিষ্ঠা করবে।

যদি কাছেধারে সার্বজনীন কর্তাভজা উপাসনালয় থাকে তাহলে নিজ বাড়িতে মায়ের আসন থাকা সত্ত্বেও উপাসনালয়ে হাজির হয়ে শুক্রবারের উপাসনা-প্রার্থনার কাজ সু-সম্পন্ন করবে, শুক্রবারে একাধিক ভক্ত-একস্থানে হাজির হয়ে উপাসনা প্রার্থনা করা কর্তাভজা সত্যধর্মের বিধানে বাধ্যতামূলক ইহা মালিকের হুকুম।

তাছাড়াও উপাসনালয়ের পরিচর্যার কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য উপাসনালয়ে উপস্থিত হয়ে ভক্তগণ প্রত্যেকদিন মালিকের নাম স্মরণ-উপাসনা-প্রার্থনার কার্যাদি সু-সম্পন্ন করবে। সত্যনামাশ্রিত একজন ভক্ত প্রতি মাসে অন্ততঃ একবার গুরুদেবের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে।

ধারা: এগারো

গুরুদেব তার ভক্ত কর্তৃক আয়োজিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা ধর্মীয় সম্পর্কযুক্ত সামাজিক অনুষ্ঠানে স্ব-দেহে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান সু-সম্পন্ন করবে।

ভক্ত কর্তৃক আয়োজিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা ধর্মীয় সম্পর্কযুক্ত সামাজিক অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্দ্ধারণ অবশ্যই গুরুদেব কর্তৃক থেকে হবে, গুরুদেব সত্যমতের উপর দৃষ্টি রেখে আলোচনা সাপেক্ষে অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্দ্ধারণ করবে।

যদি অনিবার্য কারণবশতঃ উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা গুরুদেবের পক্ষে সম্ভব না হয় তাহলে গুরুদেবের আজ্ঞামত সত্যমতাশ্রিত অন্য একজন গুরুদেব দ্বারা উক্ত অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্দ্ধারণ ও গুরুদেবের করণীয় কাজ সু-সম্পন্ন করবে। গুরুদেবের অজ্ঞাতসারে অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ নির্দ্ধারণ করলে উক্ত অনুষ্ঠানে গুরুদেব উপস্থিত থেকে বাধ্য থাকবে না, গুরুদেবকে উপেক্ষা করে ধর্মীয় বৈঠক অনুষ্ঠান করা কর্তাভজা সত্যধর্মের নীতি বিরুদ্ধ।

ধারা: বারো

বৈঠক অনুষ্ঠানের কার্য সম্পাদনকারী দায়িত্বপ্রাপ্ত গুরুদেব নিমন্ত্রিত হয়ে অনিবার্য কারণে যদি বৈঠক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে না পারে তাহলে পূর্বেই তা যে কোন মাধ্যম দ্বারা দ্বাদশ দণ্ডের (৬ ঘণ্টা) মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠান আহ্বানকারীকে জানাবে।

বৈঠক অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট ভক্তগণ ও ভাবেরগীত কীত্তনীয়া দল নিমন্ত্রিত হয়ে অনিবার্য কারণে যদি বৈঠক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে না পারেন তাহলে পূর্বেই তা যে কোন মাধ্যম দ্বারা দ্বাদশ দণ্ডের মধ্যে বৈঠক আহ্বানকারীকে জানাবে।

বৈঠক অনুষ্ঠান আহ্বানকারী বৈঠক অনুষ্ঠান সু-সম্পন্ন করার জন্য গুরুদেব ও ভক্তগণকে নিমন্ত্রণ করার পর অনিবার্য কারণে যদি বৈঠক অনুষ্ঠান আহ্বানকারীর পক্ষে ঐদিন নির্দ্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠান সু-সম্পন্ন করা সম্ভব না হয় তাহলে পূর্বেই তা যে কোন মাধ্যম দ্বারা দ্বাদশ দণ্ডের মধ্যে গুরুদেব ও ভক্তগণকে জানাবে, অন্যথায় বৈঠকের প্রবর্তকেরা তাকে যে দন্ড দিবে তা সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহণ করতে হবে।

ধারা: তের

কর্তাভজা সম্প্রদায়গণ সত্যমত সংক্রান্ত যাবতীয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় সম্পর্কযুক্ত সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন অন্তেষ্টিক্রিয়া, বিবাহ, অন্নপ্রাশন, গৃহ প্রবেশ ইত্যাদি মাঙ্গলিক কার্যসমূহ অবশ্যই গুরুদেবের উপস্থিতিতে বা গুরুদেবের আজ্ঞামত যে কোন অভিজ্ঞ নিষ্ঠাবান ব্যক্তির কর্তৃত্বে সু-সম্পন্ন করবে। সত্যমতাশ্রিত নয় বা ২/৩/৪ ধারা মতে শুদ্ধাচারী নয় এমন কারো দ্বারা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, ধর্মীয় সম্পর্কযুক্ত সামাজিক অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন করবে না।

ভক্ত কর্তৃক আয়োজিত সত্যমত সংক্রান্ত ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় সম্পর্কযুক্ত সামাজিক অনুষ্ঠান সু-সম্পন্ন করার জন্য অনুষ্ঠান সম্পাদনকারী গুরুদেবকে পরিমাণ মত দক্ষিণা দিবে।

ভক্ত সেচ্ছামতে যা প্রদান করবে গুরুদেব তা আনন্দচিত্তে গ্রহণ করবে, ভক্তের কাছ থেকে কোন কিছু চেয়ে নিবে না। যদি কোন কিছু না দিতে পারে তবু কোন অবস্থাতেই অসন্তুষ্ট হবে না।

ধারা: চৌদ্দ

গুরুদেব কর্তৃক নির্দেশিত সত্যমত সংক্রান্ত বাক্যসমূহ অর্থাৎ গুরুবাক্যই কর্তাভজা সত্যধর্মের মূল পালনীয় বিষয়। বরাতি বা শিষ্য গুরুদেবের বাক্য দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করবে এবং তা যথাযথভাবে পালনের জন্য স্বচেষ্ট থাকবে।

গুরুদেবের বাক্যসমূহ অবশ্যই সত্যমত সংক্রান্ত ও ভাবেরগীতের আলোকে থেকে হবে, সত্যমত বহির্ভূত কোন বাক্য গুরুদেব তার শিষ্যকে পালন করার জন্য নির্দেশ দিবে না।

যদি সত্যমত বহির্ভূত কোন বাক্য পালনের জন্য গুরুদেব নির্দেশ করে তাহলে উক্ত বাক্য পালন না করলেও শিষ্যের কোন হানি হবে না।

ধারা: পনের

কোনো ভক্ত সত্যনামে দীক্ষাগ্রহণ করার পর গুরুত্যাগ করে অন্য কারো কাছে থেকে দীক্ষাগ্রহণ করবে না তবে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জনের জন্য স্বধর্মের আদর্শের অনুসারী একাধিক গুরুদেবের উপদেশ গ্রহণ ও সাধুসঙ্গে কোন বিধিনিষেধ নেই। সত্যমতাশ্রিত চৈতন্য জ্ঞানসম্পন্ন গুরুদেব তার নিজ ভক্ত ছাড়াও কর্তাভজা সম্প্রদায়ভুক্ত যে কোন ব্যক্তিকে ধর্মীয় বিষয়ে উপদেশ দিতে কুণ্ঠাবোধ করবে না, তবে অভক্ত-ঠক-প্রতারক-অবিশ্বাসীকে সাধন-ভজন ও আধ্যাত্মিক বিষয়ে উপদেশ দিবে না।

একজন সত্যমতাশ্রিত ব্যক্তি দীক্ষাগ্রহণের পর প্রত্যেকদিন নিয়মিত নাম স্মরণ প্রার্থনাদি না করার কারণে যদি দীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় বিস্মৃতি হয়ে যায় আর ঐ অবস্থায় যদি তার গুরুদেব দেহান্তর বা দেশান্তর হয় তাহলে প্রয়োজনবোধে অন্য সত্যমতাশ্রিত গুরুদেবের কাছে থেকে দীক্ষাগ্রহণে নিষেধ নেই।

একজন ব্যক্তি সত্যনামে দীক্ষাগ্রহণের পর প্রত্যেকদিন নিয়মিত নাম স্মরণ, প্রার্থনাদি করত ধর্মীয় বিধি নিষেধ মেনে চললে এবং ঐ অবস্থায় যদি তার গুরুদেব দেহান্তর বা দেশান্তর হয় তাহলে ঐ ব্যক্তির আর পূণরায় দীক্ষাগ্রহণের প্রয়োজন নেই, তার গৃহে ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদি করার জন্য গুরু পরিবারে যদি যোগ্যতম ব্যক্তি থাকে তাহলে তাকে দিয়ে অনুষ্ঠানাদি কার্যসম্পন্ন করবে, নতুবা সত্যমতাশ্রিত অন্য যে কোন গুরুদেব দ্বারা অনুষ্ঠানের কার্যাদি সুসম্পন্ন করবে, ঐ অবস্থায় উক্ত ব্যক্তির গৃহে ধর্মীয় বা সামাজিক অনুষ্ঠানাদি করতে সত্যমতাশ্রিত কোন গুরুদেব ও ভক্তবৃন্দের আপত্তি থাকবে না।

ধারা: ষোল

যিনি কর্তাভজা সত্যধর্মের মূল স্তম্ভের উপর দৃঢ় বিশ্বাসী, ধর্মের মূলনীতি-আদর্শ যথাযথভাবে পালনে সচেষ্ট ২/৩/৪ ধারা মতে শুদ্ধাচারী ১৭ ধারা মতে গুণযুক্ত, সত্যনাম মহামন্ত্রে দীক্ষিত এবং ভাবেরগীত বিষয়ে বিশেষ জ্ঞানী একমাত্র সেই ব্যক্তিই গুরুদেব বা গুরুদেব হওয়ার যোগ্য ব্যক্তি এখানে নারী পুরুষ উভয়ের সমান অধিকার। তবে গুরুদেবের পুত্র হলেই গুরুদেব হয় না। কর্তাভজা সত্যধর্মের গুরুদেব বংশগত নয়, গুণ ও কর্মই একমাত্র বিবেচ্য। এ বিষয়ে জাত-পাত, বর্ণবৈষম্য সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাজ্য

একজন গুরুদেব মহাপ্রয়াণের পূর্বে তার পরিবারের সদস্য স্ত্রী/পুত্র বা ভক্তগণের মধ্য থেকে উপরে উল্লেখিত বিষয়ে যোগ্য বিবেচিত এক বা একাধিক ব্যক্তিকে যে কোন মহৎ বৈঠক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গুরুদেবের করণীয় কাজের ভার অর্পণ করবে।

কোন গুরুদেব যদি তার মহাপ্রয়াণের পূর্বে গুরুদেবের করণীয় কাজের জন্য ভার অর্পণ করে যেতে না পারেন তাহলে গুরুদেবের পরিবারের সদস্যগণ/ভক্তগণ মহৎ বৈঠক অনুষ্ঠানে আলোচনার মাধ্যমে গুরুদেবের স্ত্রী/পুত্র বা ভক্তদের মধ্য থেকে যোগ্যতম এক বা একাধিক ব্যক্তিকে গুরুদেবের করণীয় কাজের ভার অর্পণ করবে। বা এক বা একাধিক অভিজ্ঞ গুরুদেবের উপর নির্ভর করবে তবে ভারপ্রাপ্ত গুরুদেবকে এক বছরের মধ্যে নিত্যধাম ঘোষপাড়া থেকে গুরুদেব হিসাবে দায়িত্ব পালনের আজ্ঞা নিতে হবে। গুরুদেব যদি দেশান্তর-ধর্মান্তর হয় তাহলেও একই নিয়ম প্রযোজ্য।

ধারা: সতের

যিনি কর্তাভজা সত্যধর্মের ধর্মযাজক গুরুদেব বা গুরুদেব পদ বাচ্য হবেন তাকে অবশ্যই সত্যনামে দীক্ষিত হতে হবে এবং স্ব-ধর্ম সৎ আচরণ যথাযথভাবে পালনে স্বচেষ্ট থেকে হবে।

যিনি গুরুদেব তিনি অবশ্যই পরনিন্দা করা ও পরনিন্দা শ্রবণ করা থেকে বিরত থাকবে এবং তাকে ২/৩/৪ ধারামতে শুদ্ধাচারী রাগ রহিত, ক্ষমাযুক্ত, নেশাবর্জিত, সংযমী, জিতেন্দ্রীয়, নির্লোভী, নিস্কামী, অকপট, পরের দুঃখে দুঃখী, পরের সুখে সুখী, সত্যবাদী ধৈর্য্য ও সহনশীলতা গুণের অধিকারী-অধিকারীণি হতে হবে।

যিনি গুরুদেব তাকে অবশ্যই কর্তাভজা সত্যধর্মের মূল স্তম্ভের উপর অটল বিশ্বাস ধর্মের মূল নিতি-আদর্শ, বিধি-নিষেধ পালনে যত্নবান থেকে হবে এবং নিয়মিত নাম স্মরণ ও শুক্রবারের উপাসনা-প্রার্থনা যথাযথভাবে পালনের জন্য বাধ্য থাকবে।

ধারা: আঠার

বৈঠক অনুষ্ঠানে বসে অনুষ্ঠান চলাকালীন সময় সেচ্ছাচারী ভাবে উঠে যাওয়া অভক্তের লক্ষণ। বৈঠক অনুষ্ঠানে বসে কোন ব্যক্তি পায়ে হাত দিবে না এবং পদ প্রসারিত করবে না।

গুরুদেব বা ভক্তগণের মধ্যে যে কোন ব্যক্তির যদি বিশেষ কারণে বৈঠক অনুষ্ঠান থেকে উঠে যেতেই হয় তাহলে ভাবেরগীত কীর্ত্তণ সমাপ্ত হলে বৈঠকের নিয়মাবলীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পাশে উপবেশনকারী অন্ততঃ একজন ভক্তকে বলে তারপর বৈঠক অনুষ্ঠান থেকে উঠে যেতে হবে।

কোন প্রকার মাদক জাতীয় দ্রব্য পান-আহার করে বৈঠক অনুষ্ঠানে যোগদান করবে না এবং বৈঠকে বসে কোন প্রকার নেশা জাতীয় দ্রব্য পানাহার করবে না। কোন গুরুদেব বা ভক্তবৃন্দ এই নিয়মের ব্যতিক্রম করলে বৈঠকের প্রবর্তকেরা তাকে যে দন্ড দিবে তা তাকে সানন্দে গ্রহণ করতে হবে। একজন গুরুদেব বা তার শিষ্য কর্তৃক আয়োজিত বৈঠক অনুষ্ঠানে অন্য একজন গুরুদেব ও তার শিষ্যগণ শ্রদ্ধাবনতঃ চিত্তে যোগদান করবে তবে একজন গুরুদেব অন্য একজন গুরুদেবকে, একজন ভক্ত অন্য একজন ভক্তকে যোগ্য সম্মান দিতে বাধ্য থাকবে। আমন্ত্রিত/নিমন্ত্রিত না হয়ে শুধু শ্রবণ মাত্র ধর্মীয় বৈঠক অনুষ্ঠানে যোগদান করতে কুণ্ঠা বোধ করবে না।

ধারা: উনিশ

কর্তাভজা সম্প্রদায়ের কাছে ভাবেরগীত পবিত্র, পূজনীয় একমাত্র ধর্মগ্রন্থ। ঠাকুর দুলাল চাঁদ কর্তৃক রচিত ভাবেরগীতে উপাসনা তত্ত্ব ও ১৪টি সাটে- ৪২৫টি গীত, ১৫৯৯টি কলি, ১০০৮১টি লহরে লিপিবদ্ধ।

ভাবেরগীত গ্রন্থটি সদাসর্বদা পবিত্র অবস্থায় রাখবে, কোন অবস্থাতেই অপবিত্র অবস্থায় ভাবেরগীত পাঠ ও কীর্ত্তন করবে না, যে ব্যক্তির গৃহে ভাবেরগীত থাকবে সেই ব্যক্তি নিজে বা সত্যনামে দীক্ষিত পরিবারের যে কোন সদস্যদ্বারা সন্ধ্যাকালীন সময়ে বা দিন রাতের যে কোন সময়ে সত্যনাম স্মরণ পূর্বক প্রার্থনাদি করতঃ ভাবেরগীতের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি নিবেদন করবে।

ভাবেরগীতের প্রতিটি শব্দ-বাক্য কর্তাভজা ভক্তের কাছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও এর নির্দেশাবলী যথাযথভাবে পালনীয়, কর্তাভজা সম্প্রদায়ের যাবতীয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় সম্পর্কযুক্ত সামাজিক অনুষ্ঠান যেমন ধর্মীয় বৈঠক অনুষ্ঠান, অন্তেষ্টিক্রিয়া, অন্নপ্রাশন, গৃহ প্রবেশ ইত্যাদি ভাবেরগীতের আলোকেই পরিচালিত হবে।

ধারা: বিশ

ভক্তগণ কর্তৃক গুরুদেবের কাছে প্রদানকৃত বার্ষিক খাজনা ও মানসিক বিষয়ের অর্থসমূহ প্রত্যেক বছরে দোল পূর্ণিমায় গুরুদেব নিজে উপস্থিত হয়ে বা যে কোন মাধ্যম দ্বারা নিত্যধাম ঘোষপাড়ায় দাখিল করবে।

কর্তাভজা সত্যধর্মের প্রত্যেক গুরুদেব বছরে কমপক্ষে একবার নিত্য ধাম ঘোষপাড়ার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে।

ভক্তগণ কর্তৃক প্রদেয় অন্যান্য বিষয়ের অর্থসমূহ অর্ধেক নিত্যধাম ঘোষপাড়ায় দাখিল করবে আর অর্ধেক অর্থ নিজে ভোগ করবে এবং কিছু সাধু সেবা দিবে, তবে মায়ের আসনে মানসিক করা অর্থ বা যে কোন দ্রব্যাদি কদাচিৎ নিজে ভোগ করবে না।

ধারা: একুশ

কেউ যদি সত্যমতাশ্রিত ভক্তগণকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা সামাজিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভক্তগণের কিছু ভোজন করানোর জন্য মনস্থির করেন তাহলে পূর্বেই ভক্তগণকে নিমন্ত্রণ করবে।

 

যে সত্যমতাশ্রিত ২/৩/৪ ধারা মতে শুদ্ধাচারী এক মাত্র সেই ভক্ত দ্বারা পবিত্রতা ও অন্যান্য নিয়মাবলীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ভক্ত সেবার জন্য রন্ধন ও পরিবেশনের কাজ সু-সম্পন্ন করবে। ধর্মীয় বৈঠক অনুষ্ঠানের ভোজন দ্রব্যগুলো অবশ্যই নিরামিষ থেকে হবে।

কর্তাভজা সত্যধর্মে বর্ণ বৈষম্যমূলক বংশগত জাতিভেদের কোন স্থান নেই। ভক্ত সেবার জন্য রন্ধন ও পরিবেশনে জাত-পাত বিচার্য নয়, সত্যনামাশ্রিত একজন কর্তাভজা তার একমাত্র পরিচয়।

ধারা: বাইশ

একজন মানুষ জন্মসূত্রে যে জাতিই হোক না কেন সে যদি কর্তাভজা সত্যধর্মের মূল স্তম্ভ-নীতি-আদর্শ-উদ্দেশ্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় এবং সত্যমতাশ্রিত একজন গুরুদেবের কাছে সত্যনামে দীক্ষাগ্রহণ করে তখন তার পূর্বের জাতি-বর্ণ গোত্রের পরিচয় আর থাকে না তখন কর্তাভজা সত্যধর্ম তার স্ব-ধর্ম, জাতি হিসাবে সে একজন কর্তাভজা। আর কর্তাভজা সম্প্রদায়ভুক্ত পিতামাতার ঘরে জন্ম হলে জন্মসূত্রেই সে একজন কর্তাভজা। কর্তাভজা সম্প্রদায়ের কোন গোত্র পরিচয় থাকবে না।

কর্তাভজা সম্প্রদায়ভূক্ত একজন মানুষ তার স্ব-ধর্মের বিধি-নিষেধ-আচার-অনুষ্ঠান যথাযথভাবে পালন করতে না পারলেও যতক্ষণ পর্যন্ত সে স্ব-ধর্মের মূলস্তম্ভ-নীতি-আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে, অন্য মতাদর্শ গ্রহণ করে ধর্মান্তরিত না হয়, স্ব-ধর্মের নীতি-আদর্শ ও সমাজ ব্যবস্থার প্রতি-অবজ্ঞা প্রদর্শন করতঃ স্ব-ধর্মের বিধি-নিষেধ আচার অনুষ্ঠানের বিপরীতে কোন কর্মানুষ্ঠান না করে ততক্ষণ পর্যন্ত সে কর্তাভজা।

সত্যমতাশ্রিত একজন মানুষ যখন তার স্ব-ধর্মের মূল স্তম্ভ-নীতি-আদর্শের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল, অচলা ভক্তি-অটল বিশ্বাসে অবিচল থাকে এবং ২/৩/৪ ধারা মতে শুদ্ধাচারী হয়, স্ব-ধর্মের বিধি-নিষেধ-আচার অনুষ্ঠান-উপাসনা-প্রার্থনা যথাযথভাবে পালনে সচেষ্ট হয় সর্বোপরি সকল কামনা-বাসনা শ্রী গুরুর চরণে সমার্পণ করতঃ স্ব-ধর্ম তথা মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করে তখনই সে হয় একজন পরম ভক্ত।

কর্তাভজা সম্প্রদায়ভুক্ত একজন ব্যক্তি অসাম্প্রদায়িকতার নিদর্শন স্বরূপ ধর্মের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট কোন বেশ-ভূষা ও প্রতীক (চিহ্ন) দেহে ধারণ করবে না। সত্যমতাশ্রিত একজন ভক্ত সমমনা একজন ভক্তের সাথে “জয়গুরু সত্য” বলে সম্বোধন করবে, “জয়গুরু সত্য” কর্তাভজা সম্প্রদায়ের পরিচয় বহন করে।

ধারা: তেইশ

কোন ব্যক্তি শারীরিক পীড়ার কারণে বা যে কোন দায় থেকে নিস্তার পাওয়ার আশায় যদি বৈঠক অনুষ্ঠানে জানায় তাহলে বৈঠক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ভক্তবৃন্দ-গুরুদেবগণ আলোচনা স্বাপেক্ষে ২০ ধারা মতে তার সুব্যবস্থা করবে।

সত্যের উপর অটল বিশ্বাস স্থাপন করলে মালিকের কৃপায় অসাধ্য সাধন হয়, এমনকি কঠিন দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তিলাভ হয়, যদি ঐরূপ দায়গ্রস্থ কোন ব্যক্তি দায় মুক্তির জন্য গুরুদেবের শরণাপন্ন হয় তাহলে দায়িক বৈঠকের বিধান মত দায়িক বৈঠক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। দায়িক বৈঠকের বিধি-বিধান সবকিছুই গুরুদেবের উপর নির্ভরশীল।

অভক্ত-অবিশ্বাসী ব্যক্তির জন্য দায়িক বৈঠক অনুষ্ঠান করবে না এবং কোন অবস্থাতেই যেচে সেধে স্বপ্রণোদিত হয়ে কোন ব্যক্তিকে দায়িক বৈঠক অনুষ্ঠান আয়োজন করতে রাজী করাবে না।

ধারা: চব্বিশ

সত্যমতাশ্রিত কর্তাভজা সম্প্রদায়গণ সুখে-সম্পদে, দুঃখে বিপদে সর্বাবস্থায় মালিকের উপর অটল ভক্তি-বিশ্বাস রেখে চলবে।

সত্যমতাশ্রিত ভক্তগণ রোগে-শোকে, দুঃখে-বিপদে যে কোন আপদকালীন সময়ে মানসিক করলে তা কর্তাভজা সত্যধর্মের আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে মালিকের নামে মালিকের কাছে মানসিক করবে। স্ব-ধর্মের আদর্শের পরিপন্থী কোন মানসিক করবে না।

মালিকের কৃপায় আপদ-বিপদ থেকে মুক্ত হলে গুরুদেব ও ভক্তবৃন্দকে সাক্ষী স্বরূপ রেখে যথাসময়ে মানসিক এর দায়মুক্ত হবে।

ধারা: পঁচিশ

সত্যমতাশ্রিত কোন ব্যক্তি যদি ২/৩/৪ ধারার ব্যতিক্রম করে এবং ধর্মীয় নীতি-আদর্শ বহির্ভূত কোন কাজ বা সামাজিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী কোন কাজ করে তাহলে সে একজন অপরাধী। ঐ ব্যক্তি তখন থেকে আর ভক্ত বলে বিবেচিত হবে না।

সত্যমতাশ্রিত কোন ব্যক্তি উপরে উল্লেখিত অপরাধে অপরাধী হয়েও সে যদি অনুতপ্ত হয়ে নিজের দোষ স্বীকার করে এবং পুনরায় ঐ জাতীয় অপরাধ আর না করার অঙ্গীকার করে তাহলে তার সাথে বৈঠক অনুষ্ঠান ও উপাসনা প্রার্থনা করতে নিষেধ নেই।

একজন সত্যমতাশ্রিত ব্যক্তি অপরাধ করার পর ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়ে সে যদি পূণরায় ঐ জাতীয় অপরাধ করে তাহলে বৈঠকের প্রবর্তকরা তার সাথে বৈঠক করবে না। তবে ঐ অবস্থায় বৈঠকের প্রবর্তকরা তাকে যে দন্ড দিবে তাকে সাদরে তা গ্রহণ করতে হবে নতুবা তাকে বহিষ্কার করবে।

ধারা: ছাব্বিশ

সত্যমতাশ্রিত প্রত্যেক ব্যক্তিই স্বধর্মের প্রতি অচলা ভক্তি-অটল বিশ্বাস রেখে চলবে এবং সাধ্যানুযায়ী স্ব-ধর্ম তথা মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখবে।

কর্তাভজা সম্প্রদায়গণের মধ্যে মালিকের কৃপায় যারা অর্থ-সম্পদের অধিকারী তারা অনিবার্য কারণবশত: স্ব-ধর্ম তথা মানব কল্যাণে শ্রম-বা সময় দিতে না পারলেও সৎ পথে উপার্জিত অর্থ-সম্পদ স্ব-ধর্ম তথা মানবকল্যাণে ব্যয় করবে, সৎকর্মে অর্থ-সম্পদ দান করা ধর্মের একটি বিশেষ অঙ্গ।

অর্থ-সম্পদ না থাকলেও যাদের সামাজিক বিষয় ও ধর্মতত্ত্ব-মালিকতত্ব সম্বন্ধে বিশেষ জ্ঞান আছে তারা লেখনী শক্তি বা বক্তব্য বিবৃতি ও সংগীতের মাধ্যমে স্ব-ধর্ম তথা মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করবে, অজ্ঞানকে জ্ঞান দান করা ধর্মের একটি বিশেষ অঙ্গ। যাদের অর্থ-সম্পদ নেই, অল্পশিক্ষিত-স্বল্পজ্ঞানী তারা শ্রম ও ভক্তির মাধ্যমে স্ব-ধর্ম তথা মানব কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করবে, ভক্তিই ধর্মের প্রধান অঙ্গ।

ধারা: সাতাশ

কর্তাভজা সম্প্রদায়ভূক্ত ভক্তগণের মধ্যে যদি একে অপরের সাথে সামাজিক-বৈষয়িক বা যে কোন বিষয়ে মতভেদ সৃষ্টি হয় তাহলে উক্ত বিষয় মীমাংসার জন্য গুরুদেব এবং ভক্ত সমাজে নেতৃত্ব দানকারী বিজ্ঞ ব্যক্তি ও ভক্তগণকে জানাবে।

গুরুদেব/ভক্ত সমাজের বিজ্ঞ ব্যক্তিগণ সত্যের প্রতি দৃষ্টি রেখে বিষয়টি সুষ্ঠ ভাবে মীমাংসা করার জন্য স্বচেষ্ট হবে।

গুরুদেব/বিচারকগণ বিচারের বিধান ক্রমে যে মীমাংসা করে দিবে উভয় পক্ষকে তা সন্তুষ্ট চিত্তে রক্ষা করতে হবে।

ধারা: আটাশ

সত্যনামাশ্রিত কর্তাভজা সম্প্রদায়গণ স্ব-ধর্মের নীতি-আদর্শ সমুন্নত রেখে সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে, প্রতিবেশীর সাথে সু-সম্পর্ক বজায় রেখে চলবে এবং ধর্মীয় বিশ্বাসে ভিন্ন মতালম্বীগণের সাথেও সৌহার্দ্যপূর্ণ পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহবস্থানের মাধ্যমে বসবাস করবে।

সত্যনামাশ্রিত একজন ব্যক্তি দেহ রাখলে তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনার জন্য অন্তেষ্টিক্রিয়ানুষ্ঠান গুরুদেব বা গুরুদেবের আজ্ঞামত অন্য একজন সত্যমতাশ্রিত সদাচারী-নিষ্ঠাবান গুরুদেব দ্বারা, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও ভক্তবৃন্দের সমন্বয়ে মহামন্ত্র সত্যনাম এবং মহাগ্রন্থ ভাবের গীতের আলোকে সু-সম্পন্ন করবে।

কর্তাভজা সম্প্রদায়ভুক্ত একজন ব্যক্তির পিতামাতা দেহত্যাগ করলে পিতামাতার অচৈতন্য দেহ সমাধিস্থ করার পর থেকে অন্তেষ্টিক্রিয়ার পূর্ব দিন পর্যন্ত পিতামাতার বিদেহী আত্মা নিত্যধাম প্রাপ্ত হোক এই উদ্দেশ্যে প্রত্যেকদিন সকাল-সন্ধ্যা দুইবার মালিকের কাছে প্রার্থনা করবে ও প্রার্থনা নিবেদন করবে।

কর্তাভজা সম্প্রদায় ভুক্ত একজন মানুষ দেহ রাখার পর সাতদিন ব্রহ্মচর্য পালন করতঃ অষ্টম দিবসে বা ১০ দিন ব্রহ্মচর্য পালন করতঃ একাদশ দিবস এর মধ্যে যে কোন একটি দিনে অন্তেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান সু-সম্পন্ন করবে। এক বছরের মধ্যে যে কোন দিন মহাতীর্থ নিত্যধাম ঘোষপাড়ায় পরলোকগত বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় মালিকের নামে ভোগ নিবেদন করলে পরলোকগত পিতা-মাতা পরমপদ প্রাপ্ত হয়। অন্তেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে পুত্র-কন্যার সমান অধিকার। ভাবেরগীতে উল্লেখ আছে-

আমি অভূক্ত ভাই এ সপ্ত দিবস,
অন্ন জল ফল মূল কিছুই হয় নাই পরশ।
কান্ডারি বলছি হে তোমায় (ভাবেরগীত নং- ২৭৫, কলি নং-৩)

একদিন ঐ মানুষের তল্লাসে দেশ বিদেশে ঘুরে,
এক তামাসা দেখতে পেলাম খাসা দশ দশার পাথারে।
কিন্তু ভাই মনের মানুষ চিনতে পারিনে (ভাবেরগীত নং- ৩২৬, কলি নং- ৩)

গুণ ও কর্মগত গুরুবাদের সমাজ ব্যবস্থাই কর্তাভজা সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য আর বর্ণ বৈষম্যমূলক বংশগত জাতিভেদ তথা ব্রাহ্মণ্যবাদের সমাজ ব্যবস্থার কু-সংস্কার পূর্ণ যাবতীয় বিধি-নিষেধ পরিত্যাজ্য।

ধারা: ঊনত্রিশ

জন্মসূত্রে কর্তাভজা সম্প্রদায়ভূক্ত একজন ব্যক্তি তার স্ব-ধর্মের প্রতি বিশ্বাস আছে সাধু মহতের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি আছে ধার্মীয় বৈঠক অনুষ্ঠানেও যোগদান করে, পারমার্থিক তত্ত্ব বিষয়ে জ্ঞানপিপাসু কিন্তু অদীক্ষিত এবং ২/৩/৪ ধারা মতে সদাচারী নয়, বা জন্মসূত্রে ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ সত্যনামে দীক্ষিত নয় কর্তাভজা সত্যধর্মের নীতি-আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি-প্রদর্শন করে এরা যাজক শ্রেণীর ভক্ত বলে বিবেচিত; ঐ সব ব্যক্তিগণকে কর্তাভজা সত্যধর্মের বৈঠক অনুষ্ঠানে যোগদান করতে এবং তাদের কে বৈঠক অনুষ্ঠানে আহ্বান করতে বিধি-নিষেধ নেই।

যাজক শ্রেণীর ভক্তগণ আপদে-বিপদে, রোগমুক্তিসহ বিভিন্ন কারণে মালিকের চরণে মানসিক রাখিয়া মালিকের কৃপায় মনের বাসনা পূর্ণ হলে মানসিক এর দায়মুক্ত হওয়ার নিমিত্তে বা গৃহপ্রবেশ, অন্নপ্রাশন, নবান্ন উৎসব, গৃহের মাঙ্গলিক কারণে বা কোন কারণ ছাড়াই মনের ইচ্ছাবশতঃ বৈঠক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সাধুসেবা দেওয়ার মানষে যদি নিজ গৃহে বৈঠক অনুষ্ঠান আহ্বান করতে আগ্রহ প্রকাশ করে তাহলে তাকে সর্বপ্রথম কর্তাভজা সত্যধর্মের মূল স্তম্ভ-নীতি-আদর্শের প্রতি ভক্তি-বিশ্বাস স্থাপন ও ২/৩/৪ ধারা মতে সদাচারী হওয়ার উপদেশ দিবে।

পরবর্তীতে ঐ ব্যক্তি যোগ্য বিবেচিত হলে মহামন্ত্র সত্যনামে দীক্ষাগ্রহণ করতঃ অতপর তার গৃহে বৈঠক অনুষ্ঠান করবে অন্যথায় ঐ ব্যক্তির গৃহে বৈঠক অনুষ্ঠান করবে না। ঐ অবস্থায় তার মানসিক এর দায় মুক্তির জন্য কাছেবর্তী কর্তাভজা উপাসনালয়ে, পার্শ্বস্থ কোন ভক্তের বাড়ি বৈঠক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, বা মহাতীর্থ নিত্যধাম ঘোষপাড়ায় স্ব-দেহে উপস্থিত হয়ে বা একজন গুরুদেবের মাধ্যমে মানসিক এর বিষয়সমূহের মোট মূল্য নির্দ্ধারণ করে মহাতীর্থ নিত্যধাম ঘোষপাড়ায় দাখিল করবে।

কোন ব্যক্তির আচার-আচরণ, চরিত্রগত দোষ, ২/৩/৪ ধারার সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয়সমূহ বৈঠক অনুষ্ঠানে উপস্থাপন করবে না, এবং কোন ব্যক্তিকে কটাক্ষ করে প্রকাশ্যে বৈঠক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আলোচনা করবে না। প্রয়োজন বোধে উক্ত ব্যক্তিকে নির্জনে ধর্মের নীতি-আদর্শ বিষয়ে সদ্ উপদেশ দিবে। তবে সামগ্রিকভাবে বৈঠক অনুষ্ঠানে ধর্মীয় নীতি-আদর্শ বিধি নিষেধ-আলোচনা করতে কোন নিষেধ নেই।

ধারা: ত্রিশ

সত্যমতাশ্রিত কর্তাভজা সম্প্রদায়গণের নিজেদের মধ্যে ধর্মীয় বিষয়ে যে কোন প্রকার সমস্যা বা মতভেদ হলে প্রথমে তা গুরুদেবের উপদেশকে গ্রাহ্য করতঃ তা সমাধান করবে, তবে গুরুদেবকে অবশ্যই কর্তাভজা সত্যধর্মের মূল স্তম্ভ-নীতি-আদর্শ-উদ্দেশ্যের প্রতি দৃষ্টি রেখে উপদেশ/নির্দেশ দিতে হবে।

গুরুদেব কর্তৃক উপদেশকৃত বা নির্দেশিত পথে যদি সমাধান না হয় তাহলে ৩০ ধারায় বর্ণিত বিধি-নিষেধের মাধ্যমে তা সমাধানের জন্য চেষ্টা করবে, তাতেও যদি সম্ভব না হয় তাহলে মহাগ্রন্থ ভাবেরগীতের আলোকে সমাধানের জন্য স্বচেষ্ট হবে।

গুরুদেব বাক্য/৩০ ধারা/ভাবেরগীতে সবের মাধ্যমে যদি সমস্যার সমাধান সম্ভব না হয় তাহলে ধর্ম বিষয়ে অভিজ্ঞ গুরুদেববৃন্দ ও ভক্তবৃন্দ সম্মিলিতভাবে আলোচনা স্বাপেক্ষে সত্যের উপর দৃষ্টি রেখে তা সমাধানের সর্বাত্মক চেষ্টা করবে, আলোচনার মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত গৃহিত হবে সকলে তা এক বাক্যে মেনে নিতে বাধ্য থাকবে।

নির্দেশিকা:
৩০ ধারার প্রত্যকটি ধারা উপধারা কর্তাভজা সম্প্রদায়গণ সর্বতো ভাবে মেনে চলবে।

…………………………………..
সূত্র ও কৃতজ্ঞতা:
১. ভবের গীত
২. কর্তাভজা সত্যধর্ম

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

…………………..
আরও পড়ুন-
কর্তাভজা সত্যধর্মের ৩০ ধারা
রামশরণ ও সতীমার দীক্ষাগ্রহণ
সতী মা
কর্তাভজা সত্যধর্ম
কর্তাভজার দশ আজ্ঞা
গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর আবির্ভাব
ডালিম তলার মাহাত্ম্য
বাইশ ফকিরের নাম
কর্তা
দুলালচাঁদ
কর্তাভজা সত্যধর্মের পাঁচ স্তম্ভ
সাধন-ভজন ও তার রীতি নীতি
ভাবেরগীত এর মাহাত্ম্য
কর্তাভজা সত্যধর্মের আদর্শ ও উদ্দেশ্য
শ্রীযুতের জীবনী

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!