ভবঘুরেকথা
চাণক্য

চাণক্য বাণী : এক

১.
সদগুণসম্পন্ন একজন পুত্র অযোগ্য শত শত পুত্রের চেয়েও শ্রেয়। যেমন একটি চাঁদই রাতের অন্ধকার দূর করে, অথচ হাজার হাজার তারা তা করতে পারে না।

২.
ঋণগ্রহণকারী পিতা, অসতী মাতা, অধিক সুন্দরী স্ত্রী এবং অজ্ঞ পুত্র পারিবারিক জীবনের শত্রু।

৩.
প্রথম পাঁচ বছর পুত্রকে স্নেহ দিয়ে লালনপালন করবে। পরবর্তী দশ বছর তাকে কঠোরভাবে শাসন করবে। ষোল বছর বয়সে পৌঁছালে তার সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করবে।

৪.
স্বভাবত কেউই আমাদের বন্ধু বা শত্রু নয়। একমাত্র কাজের দ্বারাই মানুষ আমাদের বন্ধু বা শত্রু বলে পরিগণিত হয়।

৫.
কারো অধিকারে যা আছে তার সবই বরং সৎ উদ্দেশ্যে অর্থাৎ পরমেশ্বর ভগবানের উদ্দেশ্যে ব্যয় করা উচিত; কারণ মৃত্যুকালে কেউ তার সম্পদ সঙ্গে নিয়ে যেতে পারে না।

৬.
অতিরিক্ত স্নেহ করার ফলে সন্তানের অনেক দোষ জন্মায়, কিন্তু কঠোরতায় সুন্দর চরিত্র গড়ে ওঠে। তাই সন্তান ও শিষ্যের প্রতি কোমল নয়, কঠোর হোন।

৭.
যে গাভী গর্ভধারণ ও দুগ্ধ দান করতে পারে না, তার কী প্রয়োজন? সে পুত্র বিদ্বান বা ভগবদ্ভক্ত কোনটিই নয়, তারই বা কী প্রয়োজন।

৮.
দুর্জনের সঙ্গ ত্যাগ করো। সাধুসঙ্গে ভজন করো। দিন-রাত শুধু পূণ্যকর্ম করো এবং সর্বদা এ জগতের অনিত্যতা স্মরণ রেখো।

৯.
সৌভাগ্যের অধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মীদেবী সেখানেই বাস করেন, যেখানে দুষ্ট ব্যক্তিরা পূজিত হয় না, ধান্যাদি শস্য প্রচুর পরিমাণে সঞ্চিত থাকে এবং দাম্পত্য কলহ নেই।

১০.
দুর্জন বিদ্বান হলেও যেকোনো মূল্যে তাকে এড়িয়ে চলা কর্তব্য। মণিভূষিত বিষাক্ত সর্প কি অধিক ভয়ঙ্কর নয়?

১১.
যিনি পরস্ত্রীকে মায়ের মতো, পরের দ্রব্যকে মাটির ঢেলার মতো এবং সমস্ত জীবকে নিজের মতো দর্শন করে, তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।

১২.
মহৎগুণের দ্বারাই মহৎ হওয়া যায়, শুধু উচ্চপদ অধিকার করে নয়। কাক রাজপাসাদের ছাদের উপর বসতে পারে, তাই বলে সে গরুড় বা পক্ষীরাজ হয়ে যায় না।

১৩.
অগুন, শত্রু ও রোগব্যাধি সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা উচিত, না হলে তা বাড়তেই থাকবে।

১৪.
সাধুগণ সকল জীবকে কৃপা প্রদান করে, এমনকি যাদের সদগুণ নেই তাদেরও, ঠিক যেমন সমাজচ্যুত ব্যক্তির ঘরে আলো বিতরণ করতে চাঁদ বিরত হয় না।

১৫.
বিষের পাত থেকে অমৃত, অপবিত্র স্থান থেকে স্বর্গ, নিচ ব্যক্তির কাছ থেকেও জ্ঞান এবং নিচ বংশের পরিবার থেকেও গুণবতী পত্নী গ্রহণ করার উচিত।

১৬.
নখযুক্ত প্রাণী, নদী, শিংওয়ালা জন্তু, অস্ত্রধারী ব্যক্তি, নারী অথবা রাজনীতিবিদকে কখনোই বিশ্বাস করতে নেই।

১৭.
যে ব্যক্তির গৃহে স্নেহময়ী মা অথবা সুশীলা স্ত্রী কোনোটাই নেই, তার উচিত তৎক্ষণাৎ সেই শূণ্য পরিত্যাগ করে বনে গমণ করা। এমন ব্যক্তির কাছে বনবাস গৃহে বাস করার চেয়ে কিছুমাত্র খারাপ নয়।

১৮.
চাঁদ নক্ষতরাজির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, সুশাসক পৃথিবীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং পতি-পত্নীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। কিন্তু বিদ্যা সবার এবং সমস্ত জিনিসের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে।

১৯.
স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হয়, কিন্তু দ্রুতই তারা তা ভুলে যায়। খুব হালকাভাবেই এদের গ্রহণ করা উচিৎ ঠিক ছাগলের সাথে ছাগলের যুদ্ধের মতো, বনবাসী সাধুর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান কিংবা সূর্যোদ্বয়ে মেঘের গর্জনের মতো।

২০.
দু’ধরনের হিংসুক প্রাণী আছে; যথা- সাপ ও সাপের মতো ক্রূর স্বভাবের মানুষ। এ দুইয়ের মধ্যে সাপের ক্রূর স্বভাবের মানুষ বেশি ভয়ানক। কারণ মন্ত্রের দ্বারা সাপকে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও ক্রূর স্বভাবের মানুষকে বশীভূত করা যায় না।

২১.
জীবনের একটি মুহূর্তও যদি বৃথা ব্যয় হয়, তাহলে কোটি কোটি স্বর্ণমুদ্রার বিনিময়েও তা আর ফিরে পাওয়া যায় না। সুতরাং বৃথা সময় নষ্ট করার চেয়ে বেশি ক্ষতি আর কী হতে পারে?

চাণক্য বাণী : দুই>>

……………………
আরও পড়ুন-
চাণক্য বাণী : এক
চাণক্য বাণী : দুই
চাণক্য সংস্কৃত বাণী : এক
চাণক্য সংস্কৃত বাণী : দুই

…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন- voboghurekotha@gmail.com

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

……………….
আরও পড়ুন-
মহানবীর বাণী: এক
মহানবীর বাণী: দুই
মহানবীর বাণী: তিন
মহানবীর বাণী: চার
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: এক
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: এক
গৌতম বুদ্ধের বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: তিন
গৌতম বুদ্ধের বাণী: চার

গুরু নানকের বাণী: এক
গুরু নানকের বাণী: দুই
চৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী
কনফুসিয়াসের বাণী: এক
কনফুসিয়াসের বাণী: দুই
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: এক
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: দুই
স্বামী পরমানন্দের বাণী: এক
স্বামী পরমানন্দের বাণী: দুই
স্বামী পরমানন্দের বাণী: তিন
স্বামী পরমানন্দের বাণী: চার
স্বামী পরমানন্দের বাণী: পাঁচ
স্বামী পরমানন্দের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: এক
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: দুই
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: তিন
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: চার
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: পাঁচ
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: সাত
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: আট
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: নয়
শ্রী শ্রী কৈবল্যধাম সম্পর্কে
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বাণী
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ১ম খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ২য় খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ৩য় খন্ড
সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেবের বাণী: এক
সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেবের বাণী: দুই
সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেবের বাণী: তিন
সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেবের বাণী: চার

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!