ভবঘুরেকথা

(শ্রীহরিভক্তি-বলিাস, স্কন্ধপুরাণাদি মতে)
প্রথমত: মালা পঞ্চগব্য দ্বারা উত্তমরূপে মার্জ্জন করিবে।

(গো-মুত্র, গো-ময়, গো-দুগ্ধ, গো-দধি, গো-ঘৃত এই পাঁচটি একত্রে করিলে পঞ্চগব্য হয়)। তারপর ধৌত করিয়া তদুপরি মুলমন্ত্র দশবার এবং গায়ত্রী আটবার জপ করিবে। পরে গুলগুলাদি ধূপের ধূম স্পর্শ করিয়া চন্দন পুষ্প দ্বারা সজ্জ্বিত করিয়া ‘ওঁ সদ্যোজাতং প্রপদ্যামি সদ্যজাতায় বৈ নম:। ভবে ভবে নাদি তবে ভজস্বেমাং ভবোদ্ভাবায় নম:।” এই সদ্যোজাত মন্ত্র দ্বারা পূজা করিয়া গুরু, বৈষ্ণব ও কৃষ্ণকে মন:রূপী ধারণ করাইয়া স্বয়ং জপ বা ধারণ করিবে।

জপ মালা

মালা গোপনে রাখিয়া জপের জন্য নূতন কাপড়ের একটি থলি প্রস্তুত করিয়া তন্মেধ্যে মালা রাখিতে হয়। ঐ থলির মধ্যে দক্ষিণ হস্ত প্রবেশ করাইয়া তর্জ্জনী অঙ্গুলিকে ছিদ্র দিয়া থলির বাহিরে রাখিতে হইবে। কারণ তর্জ্জনী দ্বারা স্পর্শ করিতে নাই। মোটা মালার দিক হইতে জপ আরম্ভ করিতে হয় এবং সমস্ত মালা একবার জপ শেষ হইলে ঘুরাইয়া লইয়া সরু দিক হইতে পুনরায় জপ করিতে হয়; যেহেতু মেরুলঙঘন করিয়া জপ করিতে নাই, করিলে তাহা বিফল হয়। মধ্যমাঙ্গুলির মধ্যভাগের উপর মালা রাখিয়া অঙ্গুষ্ঠ দ্বারা এক একটি মালা আকর্ষণপূর্বক এক একবার শ্রীহরিনাম মহামন্ত্র জপ করিতে হয়। এইরূপ ১০৮টি মালা সব একবার জপ হইলে এক ফেরা হয়। এরূপ ৪ ফেরায় এক গ্রন্থি হয়। ১৬ গ্রন্থিতে লক্ষ নাম জপ হয়। লক্ষ নাম জপের নিয়ম করা পরম সৌভাগ্যের বিষয়। থলির বাহিরে চারটি ক্ষুদ্র মালা বাধিয়া ফেরার সংখ্যা রাখিতে হয় এবং এক গ্রন্থির অধিক জপ করিতে হইলে, প্রয়োজনানুযায়ী আরও গোটাকতক ক্ষুদ্র মালা পৃথক বাঁধিয়া গ্রন্থির সংখ্যা করিতে হয়। এক গ্রন্থির কমে নাম জপের নিয়ম করিতে নাই। মালা জপান্তে নিম্নরূপ জপ সমর্পণ করিতে হয়।

গুহ্যাতিগুহ্য গোপ্তা ত্বং গৃহাণাস্মৎ কৃতং জপং।।
সিদ্ধির্ভবতু মে নাশ। তৎপ্রসাদাৎ ত্বয়ি স্থিতে:।।

ভ্রমক্রমে বা কোনও অনিবার্য্য কারণবশত: কোন দিন মালা জপ বন্ধ থাকিলে, তৎপরদিন তার প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ চতুর্গুণ জপ করিয়া পরে দৈনিক নিয়মের জপ করিবেন।

মূলমন্ত্র বা ইষ্টমন্ত্র মালায় এইরুফ ভাবে জপ করিবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!