ভবঘুরেকথা

মহাত্মা সুধন্যকুমারের জীবন কথা

প্রভুর মধ্যম পুত্র সুধন্য ঠাকুর।
হরিভক্ত সুবিনয়ী মহিমা প্রচুর।।
বার শত অষ্টাত্তর সালে জন্ম নিল।
শ্রীহরির স্পর্শ পেয়ে ভক্তিমান হ’ল।।
জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা সম পিতা মানে মহাশয়।
“বিনয়ের অবতার” সবে তারে কয়।।
বৃদ্ধ কি বালক কিংবা যুবক যুবতী।
দেখা হ’লে অগ্রভাগে করিতেন নতি।।
পূর্ব হ’তে নমস্কার করে সর্বজনে।
সুমিষ্ট আলাপ করে সকলের সনে।।
ভাবুক রচক বটে ছিল মহাশয়।
গ্রন্থ মধ্যে পাই মোরা সেই পরিচয়।।
“সদ্বাক্য সংগ্রহ” নামে নীতি পূর্ণ গ্রন্থ।
মানব জীবন পথে বান্ধব একান্ত।।
“হরি সংকীর্তন” নামে গীতিকা লহরী।
ভক্তি-সিন্ধু মাঝে যেন শুদ্ধ শান্ত বারি।।
আর কত গ্রন্থ বটে করিল লিখন।
তার জীবকালে নাহি হয়েছে মুদ্রণ।।
সংসারের ক্ষেত্রে তার জ্ঞান অতিশয়।
সমস্ত হিসাবপত্র স্মৃতিপটে রয়।।
প্রধান মতুয়াবর্গে ডাকি নিজ কাছে।
তত্ত্ব-আলাপন অন্তে আশীর্বাদ যাচে।।
রাজার নন্দন বটে বেশেতে কাঙ্গাল।
শ্রীহরি বলিয়া চোখে সদা ঝরে জল।।
তিন ভ্রাতা পূর্বে তার দেহ ছাড়ি যায়।
কোমল অন্তরে তা’তে বহু ব্যাথা পায়।।
তের শত পঁয়ত্রিশ সাল পরিচয়।
রথযাত্রা যে দিবসে সমাপন হয়।।
পূর্বে হ’তে কিছুকাল রোগ ছিল দেহে।
নীরবে সকল ব্যাথা মনোমধ্যে বহে।।
রথযাত্রা শুভকার্য নির্বাহ হইল।
অপরাহ্ণে শ্রীসুধন্য দেহে ছেড়ে গেল।।
পাষাণ সাজিয়া প্রভু চুপ করে রহে।
সত্যভামা দেবী প্রতি উপদেশ কহে।।
এইভাবে চারি পুত্র পরপারে যায়।
অচল অটল প্রভু উচ্চশিরে রয়।।
দিবারাতি দিন গণে’ প্রভু ঘনে ঘন।
কবে ফিরে আসিবেন প্রমথরঞ্জন।।
জীবনের শেষ আশা রাখে তার পরে।
বর্ষ পরে সে প্রমথ এল ফিরে ঘরে।।
তার পূর্বে এ ভারতে কিবা কাণ্ড হয়।
শুন সবে বলিতেছি সেই পরিচয়।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!