ভবঘুরেকথা
মতুয়া সংগীত

শ্লোক
পরিত্রানায় সাধুনাং বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম্।
ধর্মসংস্থাপনার্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে।।

পয়ার
বৈষ্ণবের কুটিনাটি খণ্ডন কারণ।
সে কারণে অবতার পুনঃ প্রয়োজন।।
দ্বাপরেতে যদুবংশে অনেক হইল।
নিজবংশ ধ্বংস বাঞ্ছা কেন বা করিল।।
আপনি এলেন ভার হরণ করিতে।
ভাবিলেন আরো ভার হ’ল আমা হতে।।
যদি বল তারা সতী গান্ধারীর শাপ।
শ্রীকৃষ্ণ ভাবিল কেন মম বংশ পাপ।।
আপনি রাখিতে হরি ব্রাহ্মণের মান্য।
হৃদয় ধরিল ভৃগুমনি পদচিহ্ন।।
যুধিষ্ঠির রাজসূয় যজ্ঞের সময়।
স্বহস্তে ব্রাহ্মণপদ শ্রীকৃষ্ণ ধোয়ায়।।
দুর্বৃত্ত যদু বালক কারে নাহি মানে।
অহংকারে মত্ত হ’য়ে না মানে ব্রাহ্মণে।।
শাম্বের পেটে কেন মুষল বাঁধিল।
কপালে সিন্দূর দিয়ে শাড়ী পরাইল।।
পথমধ্যে বসাইল নারী সাজাইয়া।
দুর্বাসাকে কহে সবে কপট করিয়া।।
কহ মুনি এই গর্ভে হবে কি সন্তান।
দ্বিজে উপহাস করে এমন অজ্ঞান।।
কৃষ্ণ যারে মানে এরা করে অপমান।
প্রকারেতে অপমান হন ভগবান।।
ইচ্ছা ক’রে ইচ্ছাময় নাশিবারে বংশ।
দুর্বাসা মুনির শাপে যদুকুল ধ্বংস।।
নিম্ববৃক্ষে কৃষ্ণ মরে মারিল অঙ্গদ।
সে তারা-সতীর শাপ এই স্থলে শোধ।।
গান্ধারীর শাপে যদি যদুবংশ ক্ষয়।
তবে কেন যদুবংশে বজ্রবীর রয়।।
যদি বল দুর্বাসার শাপে হয় ক্ষয়।
ইচ্ছাময়ের ধ্বংস ইচ্ছা এর অগ্রে হয়।।
দেখিতে দেখার আছে অনেক দ্রষ্টব্য।
মূলে ভূ-ভার হরণ মারণ সুসভ্য।।
তিনযুগে পাষণ্ডীর মস্তক ছেদন।
কলিতে পাষণ্ডী সব নামাস্ত্রে দলন।।
ধন্য ধন্য অবতীর্ণ চৈতন্য নিতাই।
নাম দিয়া উদ্ধারিল জগাই মাধাই।।
সেই নাম প্রেমমধ্যে কলি প্রবেশিল।
প্রকৃতির স্থানে বিন্দু প্লাবিত হইল।।
এইসব কুটি-নাটি খণ্ডন কারণ।
জীব উদ্ধারের জন্য হইল মনন।।
সে কারণ অবতার হৈল প্রয়োজন।
সফলানগরী যশোমন্তের নন্দন।।
সুযুক্তি বিধানে প্রভু অবতীর্ণ হ’ল।
হরিচাঁদ নামে যত ভক্তে শিক্ষা দিল।।
করিবে গৃহস্থধর্ম ল’য়ে নিজ নারী।
গৃহে থেকে ন্যাসী বাণপ্রস্থী ব্রহ্মচারী।।
ঋতুরক্ষা করিবেক জীবহত্যা ভয়।
কেহ বা পূর্ণ সন্ন্যাসী নিষ্কাম আশ্রয়।।
গৃহধর্ম গৃহকর্ম করিবে সফল।
হাতে কাম মুখে নাম ভক্তিই প্রবল।।
পরনারী মাতৃতুল্য মিথ্যা নাহি কবে।
পর দুঃখে দুঃখী সচ্চরিত্র সদা রবে।।
অদীক্ষিতে না করিবে তীর্থ পর্যটন।
মুক্তি স্পৃহা শূন্য নাই সাধন ভজন।।
এইভাবে করিবেন জীবের উদ্ধার।
একারণ হৈল যশোমন্তের কুমার।।
কৃষ্ণের প্রতিজ্ঞা ভাগবতের বচন।
যুগে যুগে করিবেন ভূ-ভার হরণ।।
সে কারণ- অবতার হৈল প্রয়োজন।
অবনীতে অবতীর্ণ পূর্ণব্রহ্ম হন।।
অগ্রে পাতকীর শিরোচ্ছেদ ধনু অস্ত্রে।
এ যুগে প্রেমদান হরিনাম মন্ত্রে।।
সব যুগে ভূ-ভার হরিল নারায়ণ।
এব কৃষ্ণভক্ত আদি করিতে শোধন।।
কৃষ্ণভক্ত শৌচ আচরণ কুটিনাটি।
শুদ্ধ প্রেমভক্তি বৈষ্ণবেতে পড়ে ত্রুটি।
অনেক কারণে হ’ল এই অবতার।
জীবের উপায় শূন্য গতি নাহি আর।।
জীবের উদ্ধার প্রেমদান প্রতিজ্ঞা পালন।
অন্নপূর্ণা শচী বাঞ্ছা করিতে পূরণ।।
নারদপুরাণে আছে নারদ সংবাদে।
নারদের কাছে হরি কহিলা আহ্লাদে।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!