ভবঘুরেকথা

ভোলা কুকুরের বিবরণ
পয়ার

ভোলা নামে কুকুর প্রভুর বাড়ী রয়।
দৈবে কোথা হ’তে এসে রয়েছে তথায়।।
ঠাকুরের মন জানি সে ভোলা কুকুর।
সাথে সাথে যায় যথা গমন প্রভুর।।
ভক্তগণ যায় যদি প্রভুর বাটীতে।
প্রিয় ভক্ত গেলে আসে তার নিকটেতে।।
স্কন্ধ পরে হাতা দিয়া মুখ দিয়া মুখে।
অনিমিষ নেত্রে মুখ তাকাইয়া দেখে।।
কোন কোন ভক্তের সাথে বসি খায়।
নির্বিকার ভক্ত হ’লে কিছু নাহি কয়।।
একদিন তারক আহারে বসেছিল।
সঙ্গেতে কুকুর ভোলা খাইতে লাগিল।।
তারক বলেনা কিছু দেখিয়া ঠাকুর।
ডেকে বলে তাড়াইয়া দেওরে কুকুর।।
তখনে তারক কুকুরের মাথা ধরে।
তখনে উঠিল ভোলা চলে গেল দূরে।।
তাহাতে তারক বড় পাইলেন স্বাদ।
খাইলেন কুকুর সে ভোলার প্রসাদ।।
একদিন অনেক মতুয়া ভাদ্রমাসে।
প্রভু দরশনে গেল ওঢ়াকাঁদি বাসে।।
ভক্তের নিকটে ভোলা ঘুরিয়া বেড়ায়।
কারু কাছে গিয়া তার নিকটেতে রয়।।
কারু স্কন্ধে হাতা দিয়া ক্ষণকাল রয়।
হাতা নাড়ে মুখ নাড়ে লাঙ্গুল ঘুরায়।।
এক এক বার গিয়া কাহার নিকটে।
গণ্ডুস্থল চাটে কারু পদাঙ্গুল চাটে।।
রামকৃষ্ণ বিশ্বাস বসতি মল্লকাঁদি।
তিনি যান সেদিন শ্রীধাম ওঢ়াকাঁদি।।
বেলছেন দিন গেল রবি ডুবে যায়।
লোক সংখ্যা হ’ল বেশী বাড়ী যেতে হয়।।
ঠাকুর আছেন ঘরে না হন বাহির।
কহিতে নারিনু কিছু জীবন অস্থির।।
ক্ষণেক ভ্রমণ করি মনেতে ভাবিয়া।
সেই ভোলা কুকুরকে ধরিলেন গিয়া।।
স্কন্ধ পরে হাতাদিয়া চাটিবারে যায়।
হেনকালে রামকৃষ্ণ কুকুরকে কয়।।
আলাপ করত ভালো আমরা কি করি।
তাহা ত দেখনা তুমি অই দুঃখে মরি।।
যাহ ভোলা একবার প্রভুর গোচরে।
বল’গে অনেক লোক বাড়ীর বাহিরে।।
ভোলা গেল রামকৃষ্ণ যায় পাশে পাশে।
ভোলা গেল যেই গৃহে প্রভু শোয়া আছে।।
যবে ভোলা কুত্ত গেল পদের নিকটে।
মহাপ্রভু তৎক্ষণাৎ শয্যা হ’তে উঠে।।
প্রভু বলে আসি আমি সবে বল গিয়া।
আসিতেছি কিছুক্ষণ থাকুক বসিয়া।।
তাহা শুনি ভোলা কুত্ত আসিয়া বাহিরে।
আসিতেছে ঠাকুর দেখাল লেজ নেড়ে।।
কিছুক্ষণ পরে এল প্রভু দয়াময়।
মনোকথা কহি সবে করিল বিদায়।।
ভোলা কুত্ত পরিচ্ছেদ হ’য়ে গেল সাঙ্গ।
রচিল তারকচন্দ্র কুকুরের রঙ্গ।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!