ভবঘুরেকথা
প্রেম

-নূর মোহাম্মদ মিলু

মানুষ যখন এ জগতকে নিত্য নব রূপে দেখছে, তার ভাল লেগে যাচ্ছে, আর তার এই ভাললাগাটারই ঘনীভূত রূপ ‘ভালবাসা’।

কোন একটা জিনিসকে দেখলাম ভাল লাগল অর্থাৎ সেই বস্তুর যে স্পন্দন তা আমার মনে যে স্পন্দনটা আনল সে স্পন্দন হল আত্মস্থীকরণের স্পন্দন। অর্থাৎ সেই স্পন্দনটাকে মনে হয় ওটাকে আমি আত্মস্থ করে নিই ; আমার করে নিই। সহজ ভাষা এটাকেই বলে ‘ভাললাগা’।

আর মানুষ যখন মানসিক স্তরে এই ভাললাগাটাকে আত্মস্থীকরণ করে নেয় তখন সেটাকে বলা হয় ‘ভালবাসা’।

আর এই ভালবাসার মধ্যে যখন কোন কামনা বাসনা থাকে না কোন প্রকার চাওয়া পাওয়া থাকে না, কোন প্রকার স্বার্থ থাকে না। সর্বদাই নিষ্কাম ভাবনা থাকে তখন সেই ভালবাসাকে বলা হয় ‘শুদ্ধ ভালবাসা’। এই শুদ্ধ ভালবাসাই হলো ‘শুদ্ধ প্রেম’। শুদ্ধ প্রেম কখনো প্রেয়সীমুখী হয় না, শুদ্ধ প্রেম হয় সর্বদা শ্রেয়মুখী।

প্রেম
ভয় শুন্য ঈশ্বরাভিমুখী গতিকেই বলা হয় প্রেম।

“সম্যষ্মসৃণিতা স্বান্তো মমত্বাতিশয়াঙ্কিতঃ।
ভাব এসিব সান্দ্রাত্মা বুধৈ প্রেমঃনিগদ্যতে।।”

অর্থ: যার দ্বারা চিত্ত মসৃণতা প্রাপ্ত হয়, সর্বজীবের প্রতি মমত্ববোধ জাগে, সেই যে পরম শান্তভাব, তাকেই বলা হয় প্রেম। প্রেম কখনও ক্ষুদ্রের ওপর, খণ্ডের ওপর হতে পারে না। প্রেম সর্বদা অখণ্ডের প্রতি হয়।

“আত্মেন্দ্রিয় প্রীতি ইচ্ছা তারে বলি কাম
কৃষ্ণেন্দ্রিয় প্রীতি ইচ্ছা ধরে প্রেম নাম,
কামের তাৎপর্য নিজ সম্ভোগ কেবল
কৃষ্ণ সুখবাঞ্ছা হয় প্রেমেতে প্রবল।।”

কাম ও প্রেম পরস্পর বিরোধী সত্তা। যেখানে কাম আছে সেখানে প্রেম নেই, যেখানে প্রেম আছে সেখানে কাম থাকতে পারে না।

“যাহা কাম তাহা নেহি রাম
যাহা রাম তাহা নেহি কাম,
দোনো একত্র নেহি মিলৈ
রবী রজনী এক ঠাম।।”

ক্ষুদ্রের প্রতি আকর্ষণ, তা’ বহির্মুখী আর বৃহতের প্রতি আকর্ষণ তা’ অন্তরমূখী বৃত্তিরই অভিপ্রকাশ। তাই কাম ও প্রেম একত্রে থাকতে পারে না। সাধককে তাই কামকে প্রেমে রূপান্তরিত করে নিতে হবে।

তাহলে মনে প্রশ্ন জাগে কিভাবে কামকে প্রেমে রূপান্তরিত করব? ছেলেকে ভালবাসি? না না না… ছেলেকে তো ভালবাসি না! ব্রহ্মের পুত্ররূপী বিকাশকে ভালবাসি। ছেলেকে ভালবাসলে তো আর ব্রহ্মকে ভালবাসতে পারব না।

একেই বলে মধুবিদ্যা
এই মধুবিদ্যা দ্বারা কামকে, প্রেমে রূপান্তরিতকরে নিতে হবে। এই প্রেম যখন গভীরতর হয় তখন সেই প্রেমকে বলা হয় স্নেহ।

স্নেহ
প্রেমের গভীরতায় তা আর প্রেম থাকে না; তা স্নেহে পরিণত হয়ে যায়। এই স্নেহকেই বলে মমত্ববোধ। স্নেহ যখন গভীর থেকে গভীরতর হয় তখন তা আর স্নেহ থাকে না, স্নেহ দুটি চরণে বিভক্ত-
১. ঘৃত
২. মধু

ঘৃত
প্রেমের গভীরতায় প্রেম এমন এক অবস্থায় চলে আসে তখন তা সম্পুর্ণভাবে গলে যায় প্রেমের এ পর্যায়কে বলা হয় ঘৃত প্রেম।

মধু
প্রেমের গভীরতায় প্রেম অনেক বেশি গভীরতর হতে থাকে, গাঢ় থেকে গাঢ়তর হতে থাকে। প্রেমের সেই অবস্থাকে বলা হয় মধু। ওর্থাৎ প্রেমের গাঢ়ত্ব অনেক অনেক বেশি।

মধু প্রেম যখন অনেক অনেক বেশি গভীরতর হয় তখন তা আর মধু থাকে না তা হয়ে যায় মান।

মান
ব্রজগোপালকে ভালবাসি,তার বাঁশির সুর আমায় উতলা করে দিচ্ছে। ছুটে যাব সেই বাঁশির টানে। সময় নাই অসময় নাই খালি বাঁজায়, খালি আমার নাম ধরে বাঁশি বাজায়। আজ বাঁশি বাজাক সে, দেখি কত বাজাতে পারে শুনব না মন নিবিষ্ট করব না, এই হলো মান।

প্রভাত সংগীত
বাঁশিতে করেছে উতলা নাহি মানে বেলা অবেলা।
বাঁশি বাজে প্রঞ্চমে ধরিয়া আমার নামে,ছুটি ভুলে লাজ একেলা।
ভাবি কানে তুলিব না, আর সাড়া দোব না, যতই ডাকুক মোরে শুনিয়া শুনিব না।
না শুনিয়া নাহি পারি, ভেবে পরে লাজে মরি,
তোমরা বল একি জ্বালা, বাঁশিতে করেছে উতলা।

মান যখন গভীর হয় তখন তা প্রণয়ে পরিণত হয়ে যায়।

প্রণয়
প্রেমের গভীরতায় প্রেম প্রণয়ে পরিণত হয়ে যাচ্ছে। প্রণয়ের আগের মুহূর্তেমনের ভাব রবীন্দ্রনাথের ভাষায়-

“বিশ্ব জোড়া ফাঁদ পেতেছে কেমনে দিই ফাঁকি,
আধেক ধরা পড়েছি গো, আধেক আছে বাকী।।”

কিন্তু মন যখন পুরোপুরি প্রণয়ে আবদ্ধ হয় তখন ‘আধেক ধরা পড়েছি গো’ কখনোই বলবে না, তখন বলবে, “পুরো ধরা পড়েছি গো, কিছুই নাহি বাকী।” এই হলো প্রণয়।

প্রণয় যখন গভীর হয় তখন তা রক্তিতে বা রাগে পরিণত হয়ে যায়।

রাগ
‘রক্তি’ শব্দের মানে রাগ বা আকর্ষণ। প্রেমের গভীরতায় মন ব্রজগোপালের দিকেই ছুটে যায় এই যে ছুটে চলেছে এই হলো আকর্ষণ বা রাগ-

“ছোটে যেজন বাঁশির টানে, সে কি তাকায় পথের পানে।”

এই রাগ যখন গভীর থেকে গভীরতর হয় তখন তা হয়ে যায় অনুরাগ।

অণুরাগ
অনুরাগ মানে হচ্ছে ব্রজগোপালের প্রতি প্রবল রাগ বা আকর্ষিত হওয়া। মন তখন তীরের গতিতে ছুটে চলে অখণ্ড সত্তার দিকে। কোন বিরাম নাই, বিশ্রাম নাই, শুধুই ছুটে চলা, অনন্তের পানে ছুটে চলা।

“সুমুখের পানে চলে যাব আমি, তোমার নামটি সাথে নিয়ে…”
এমন একটা অনুভুতি।

অণুরাগ যখন আরো গভীর হয় তখন তা ‘ভাবে’ পরিণত হয়ে যায়।

ভাব

“শুদ্ধসত্ত্ব বিশেযাদ্বা প্রেমসূর্যাংশু সাম্যভাক্
রুচিভিশ্চিত্তমাসৃণ্য কৃদসৌ ভাব উচ্যতে।”

যার দ্বারা চিত্ত শুদ্ধ হয় ও সত্ত্বগুণ প্রধান হয়, প্রেম-সূর্যের জ্যোতিতে দশদিক উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে, অখণ্ডের প্রতি অনুরক্তি উগ্রভাবে প্রকাশ পায় ও তার ফলে চিত্ত মসৃণতা প্রাপ্ত হয় তাকেই বলি ‘ভাব’।

এই ভাবের ফলেই মনের স্বাভাবিক আকর্ষণী শক্তি ইষ্টাভিমুখী হয় কিন্তু ইষ্ট আমার বাইরে নয়, ইষ্ট যে আমার প্রাণের প্রাণ, মনের মন, সকল অস্তিত্ত্বের জীবন দেবতা। তাই ইষ্টোপযুক্তভাব যখন উগ্রভাবে মনের অন্তর্মুখী বৃত্তি জাগিয়ে দেয়, তখন মানুষ সেই ভাবেই তন্ময় হ’য়ে পড়ে।

আমার ব্রজগোপালকে মানুষ তিনটি ভাবে নিয়েছিল।
১. বাৎসল্য ভাব
২. সখ্য ভাব
৩. মধুর ভাব

বাৎসল্য ভাব
নন্দ-যশোদা-এরা নিয়েছিলেন বাৎসল্য ভাব।

“আহা! আমার ছেলেটি! কেমন সুন্দর ছেলেটি! কেমন সুন্দর করে কথা বলে! কেমন সুন্দর হাসে! আলতো আলতো ভাষায় বা-বা-বা, মা-মা-মা বলে! তাকে খাওয়াব, তাকে পরাব, তাকে স্নান করাব, তাকে হাসাব, তাকে কোলে নিয়ে আদর করব।”

ঐ নিয়েই মত্ত। তারা পরমপুরুষের বিরাট ভাবটা ক্ষুদ্র একটা শিশুর মধ্যে দেখতে শুরু করে দিলেন। এই যে ভাব এটার নাম বাৎসল্য ভাব।

মধুর ভাব
রাধা, কৃষ্ণকে পেলেন কিভাবে? মধুর ভাবে। জীবনের যা কিছু মধুর অভিব্যক্তি, যা কিছু মাধুর্য্যময় কর্মচর্চা ও কর্ম অবয়ব, সেগুলো কৃষ্ণের মধ্যে পেলেন।

রাধা ভাবটা কী?
সাধক নিজের মনের ভেতর বুঝতে পারছে যে, কৃষ্ণকে না পেয়ে আমার অস্তিত্ব নিরর্থক হয়ে যাচ্ছে, কৃষ্ণকে না পেলে আমি আর এক তিলও বাঁচতে পারব না, এই মানসিকতাটার নাম হলো রাধামানসিকতা। অর্থাৎ আরাধনা ছাড়া সে আর কিছুই জানেনা। এই রাধা মানসিকতার চরম বিকাশ পাচ্ছি ব্রজের কৃষ্ণে- আর কোথাও নয়।

মানুষের মন যখন পরমপুরুষকে পাবার জন্য অত্যন্ত ব্যাকুল হয়, যখন সে সব কাজে পরমপুরুষকে দেখবার চেষ্টা করছে ও শেষ পর্যন্ত দেখছে, এই যে পাবার আকুতি, এটাকে সংস্কৃতে বলে “আরাধনা” (আ+রাধ্+অনট্+আ = আরাধনা) আর যে আরাধনা করে সেই হলো রাধা। রাধা হচ্ছে ভক্তের মন।

এই যে রাধাভাব, এটা হচ্ছে মধুর ভাব। কারণ, জীবনের যা কিছু মধুর অভিব্যক্তি, যা কিছু মাধুর্য্যময় কর্মচর্চা ও কর্ম অনবয়, সেগুলো কৃষ্ণের মধ্যে পাই এই মধুর রাধাভাবের মাধ্যমে।

মধুর ভাবটা কী?
আমি আমার সর্ব সত্তা- শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক; আমার সর্বসত্তাকে কেন্দ্রীভূত করে তাকে এক বিন্দুতে পর্যবসিত করে আমার সকল আনন্দ ঐ কৃষ্ণের ভিতর দিয়ে পাব- এই যে মধুর ভাব, এই হলো রাধা ভাব।

অর্থাৎ কৃষ্ণরূপী মহাবিশ্বের প্রাণকেন্দ্র বা মধ্যমনির (Macrocosmic Nucleus) মধ্যে আমার অর্থাৎ সকল সাধক বা সাধিকার মন যখন এক বিন্দুতে পর্যবসিত হয়ে আনন্দ লাভ করবে, সাধক সাধিকাদের সেই অবস্থার আনন্দময় সুমধুর ভাবটাই হলো রাধাভাব।

বিশ্বের সকল মানুষ, জাতি, বর্ণ, ধর্ম, দেশ, ভাষা নির্বিশেষে, সকলেই এক একজন সম্ভাবনাময় রাধা। ব্যাপকার্থে সকল নারী সকল পুরুষই রাধা, যদি তার মন, তার সর্বসত্তা উপরোক্ত মানস অবস্থাপ্রাপ্ত হয়।

তাই সকল দেশ সকল ধর্মমত বা তথাকথিত সম্প্রদায়ের নর-নারীকে সেই মধুর রাধাভাবকে অর্জনের জন্যে পরমপুরুষকে স্মরণ-মনন নিধি ধ্যানাসনের মধ্যে দিয়েই এগোতে হবে। তবেই মানস আধ্যাত্মিক রাধাভাবকে অর্জনকরা যাবে। স্মরণ-মনন নিধিধ্যানাসনের মধ্য দিয়ে পরমপুরুষের দিকে এগিয়ে যাওয়াটাকেই বলে মানস আধ্যাত্মিক সাধনা বিজ্ঞান।

এই মানস আধ্যাত্মিক বিজ্ঞানের পথে অর্জিত ‘রাগাত্মিকা ভক্তি’র দ্বারা বিন্দুতে পর্যবসিত মনের যে মধুর ভাবাবস্থাসেই ভাবাবস্থাই হলো মানস আধ্যাত্মিক রাধা ভাব। এটাই হলো প্রকৃত রাধাভাব। এটাই হলো প্রকৃত মধুর ভাব।

সখ্য ভাব
ব্রজবালকরা- তাদের বিদ্যে নেই, বুদ্ধি নেই, কিছুই নেই, কেবল আছে আন্তরিকতা পূর্ণ একটি মন- তারা তাকে পেয়েছে সখ্য রূপে। দেবতারা তাকে পাচ্ছেন সখ্য রূপে। সখ্যভাব কোথাও দাস্যভাবে রূপান্তরিত হয় অর্থাৎ সখ্যাশ্রয়ী দাস্য, আবার কোথাও সখ্যভাব মধুরে রূপান্তরিত হয় অর্থাৎ সখ্যাশ্রয়ী মধুর।

দেবতারা সখ্যাশ্রয়ী দাস্য রূপে পেয়েছে অর্থাৎ প্রথমে তাকে সখা বলে গ্রহণ করেছে, কিন্তু পরে বলেছে তুমিই সব কিছু, তোমাতেই সব কিছু। এই সখ্যভাবের নিয়ম হচ্ছে, এই সখ্যভাবটা যখন খুব গভীরতায় পৌঁছায়, সখ্যভাবের অত্যাধিক্য ঘটে তখন সেই সখ্যভাব আর সখ্যভাব থাকে না।

তোমরা বেশ মনে রাখবে, ঈশ্বরের প্রতি সখ্যতা, পুরুষোত্তমের প্রতি সখ্যতা যখন অত্যন্ত বেশি হয়ে যায় তখন সখ্যভাবটা হয় দাস্য ভাবে রূপান্তরিত হয়ে যাবে নাহলে মধুর ভাবে রূপান্তরিত হয়ে যাবেই যাবে।

সখ্যাশ্রয়ী দাস্যভাব
পরমপুরুষ আমার বন্ধু, আমাকে ভালবাসেন- ভাবতে ভাবতে পরমপুরুষের কাছে আসতে আসতে পরমপুরুষের বিরাটত্ব মানুষ বুঝতে পারে। দূর থেকে ঠিক বুঝা যায় না, কাছে এসে দেখা যায়-তার কোন কিছুতেই আমি থই পাচ্ছি না, পরিমাপ করতে পারছি না।

তখন ভাবে- উঃ! যদিও তিনি আমার সখা, কিন্তু তিনি কত বিরাট। তার সান্নিধ্যে আসতে পেরে আমি ভাগ্যবান। তিনি বিরাট-এই ভাবতে ভাবতে সখ্যভাবটা দাস্যভাবে রূপান্তরিত হয়ে যায়। তখন মনে হয় যে তিনি যখন এত বিরাট অথচ আমায় এত ভালবাসেন, তখন আমার উচিত সর্বতোভাবে তার সেবা করে যাওয়া, তার ইচ্ছা পূর্ণ করে যাওয়া।

তিনি জগতের যেমন কল্যাণ চাইছেন তার সেই কল্যাণকারী হস্তকে আরও দৃঢ় করে দেওয়া এইটাই আমার কাজ। একেই বলে দাস্যভাব। তিনি প্রভু, আমি দাস।

সখ্যাশ্রয়ী মধুরভাব
সখ্যভাবের পরিপূর্ণতায় সখ্যভাব দাস্যভাবে রূপান্তরিত হয় অথবা মধুরভাবে রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ তিনি এত বিরাট, এত গুণশালী, কিন্তু আমাকে এত ভালবাসেন, তিনি আমার বন্ধু- এই ভাবতে ভাবতে তখন মনে হয় যে তিনি এত বড়, এত বিরাট সত্তা, তবু আমার সঙ্গে এত নিকট ভাবে রয়েছেন, আমি তার এত নৈকট্য অনুভব করছি… ওঃ… আমি ধন্য, ওঃ… কী আনন্দ… কী আনন্দ!! এটা হয়ে গেল মধুরভাব। ভাব যখন গভীরতর হয় তখন তা মহাভাবে পরিণত হয়ে যায়।

মহাভাব
ভাবের গভীরতায় ভাব মহাভাবে পরিণত হয়ে যায়। মহাভাব হচ্ছে ভাবের পরিশুদ্ধ পর্যায়। মহাভাব, ভাবের এমনই এক পর্যায় যখন সাধক পরমাশান্তি ও আনন্দ অনুভব করে। সাধকের সেই মূহূর্তের অনুভুতি, “সুখমনন্তমানন্দম”- “কোন জীবই অল্পে সন্তুষ্ট নয়, মানুষ তো নয়ই।

তাই অল্প সুখে কারো মন ভরে না, সে চায় অনন্ত সুখ। এই অনন্ত সুখ বস্তুতঃপক্ষে সুখ ও দুঃখের একটি অতীত অবস্থা,কারন যে সুখবোধ ইন্দ্রিয়বৃত্তির সাহায্যে উপলভ্য, সুখের অনন্তত্বে পর্যবসনে তা ইন্দ্রিয়বৃত্তির আওতার বাইরে চলে যায়। এই অনন্ত সুখের নামই আনন্দ।” মহাভাবে সাধক অনন্ত সুখ অনুভব করে।

মহাভাবে সাধকের নিম্নলিখিত উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে-
১. অশ্রু (আনন্দধারা)
১. স্বেদ (তেজে ঘাম হওয়ার অবস্থা)
৩. পুলক (আনন্দানুভূতি, হাসি)
৪. কম্প (কম্পন, শরীরে ঝাঁকুনি)
৫. স্তম্ভ (শরীররের নড়াচড়া হীন অবস্থা)
৬. বিবর্ণ (চেহারার রঙ বদলে যাওয়া)
৭. স্বরভঙ্গ (স্বরভঙ্গ হয়ে যাওয়া)
৮. প্রলয় (জ্যোতির্বলয়)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!