ভবঘুরেকথা

অথ দণ্ডভঙ্গ- বিবরণ
এবে শুন দণ্ডভঙ্গ নিগুঢ় কারণ।
দণ্ড ভাঙ্গা ঘাট এবে আছে নিরূপণ।।
ভারতীকে কৈলা গুরু কাটোয়ায় আসি।
শ্রীগৌরাঙ্গরূপে প্রভু হইল সন্ন্যাসী।।
দণ্ড কমণ্ডলু করে কোটিতে কপীন।
সন্ন্যাসী হইল পরে অতি দীন হীন।।
আর ত নিগুঢ় দেখত ভাবিয়া।
নিত্যানন্দ দণ্ড ভাঙ্গে কিসের লাগিয়া।।
কেহ কহে নিত্যানন্দ পরম উদার।
সে কারণ দণ্ড খণ্ড করিল তাঁহার।।
কেহ বলে মহাপ্রভু সকল ত্যাজিল।
সব ত্যাজি কেন এই দণ্ডটি রাখিল।।
তাহে ক্রোধ করি নিত্যানন্দ ভাঙ্গে দণ্ড।
কেহ কহে ছল করি ভুলায় ব্রহ্মাণ্ড।।
ভাগবত লিলামৃতে আছয় প্রকাশ।
চলিলেন মহাপ্রভু করিতে সন্ন্যাস।।
নিত্যানন্দ দণ্ড প্রতি বলে ওরে দণ্ড।
তোরে করি দণ্ড তুই বড়ই পাষণ্ড।।
ব্রহ্মা বিষ্ণু শুলিন্দ্র যাঁহার আজ্ঞাকারী।
সে কেন বহিবে তোরে হ’য়ে দণ্ডধারী।।
অবশ্য ভক্তের বাক্য নহে ব্যভিচারী।
এ সব সিদ্ধান্ত আমি শিরোধার্য করি।।
স্বয়ং এর কার্য্য এই আছে চিরধার্য্য।
এক কার্য্য অবিলম্বে বাড়ে বহু কার্য্য।।
দুই তিন অবিলম্বে এক কার্য্য হয়।
নিগুঢ় আস্বাদি স্বাভাবিক যে দেখায়।।
হেন মানি নিত্যানন্দের অসহ্য হইল।
সে কারণ প্রভু দণ্ড খণ্ড যে করিল।।
এ জন্য অসহ্য হ’লে নিত্যানন্দের মনে।
বৈরাগ্য করিতে আসি দণ্ড নিলি কেনে।।
অহৈতুকী প্রেম ভক্তি প্রকাশিবি দেশে।
ব্রজরস আস্বাদিতে দণ্ড লাগে কিসে।।
নিজে না জানিলে ধর্ম শিক্ষণ না যায়।
এ মত সিদ্ধান্ত গীতা ভাগবতে গায়।।
ব্রজ বিনে জানি বিনে রাধা রস বই।
ন্যাসী হ’লি দণ্ড নিলি তা পারিলি কই।।
দণ্ড কমণ্ডলু ইহা সন্ন্যাসি বৈভব।
যোগী ন্যাসী তীর্থবাসী তেয়াগিয়ে সব।।
কহে ব্যাস সন্ন্যাস নাহিক কলিকালে।
তার মাঝে বৃথা কাজে দণ্ড কেন নিলে।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!