ভবঘুরেকথা
সৎকার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া জন্মান্তর

-মূর্শেদূল মেরাজ

‘সৎকার’

জন্মান্তরে বিশ্বাস থাক না না থাক প্রায় প্রত্যেক মত-পথের মানুষই মৃত্যুর পরে আত্মার যে যাত্রা তার জন্য বিশেষ আয়োজন করেই থাকে। আত্মা অর্ন্তহিন এই যাত্রায় কোনো ব্যাঘাত যাতে না ঘটে তাই নানা মত-পথে প্রবর্তিত হয়েছে নানা বিধি বিধান। সে সব বিধিবিধানকে কারো কারো কাছে কু-সংস্কার আবার কারো কারো কাছে পরম আরাধ্য বিধান।

দেহত্যাগের পর আত্মার গতি-প্রকৃতি নিয়ে প্রচলিত মত-পথগুলো কি ভাবে। এর জন্য তারা কি আয়োজন করেছে। কি কি বিধিবিধান দিয়েছে বুঝতে জন্মান্তরের ধারাবাহিক আলোচনার এবারের বিষয় ‘সৎকার’। সৎকারের অগণিত রীতি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে। অনেক রীতি সময়ের স্রোতে যেমন বিলুপ্ত হয়েছে তেমনি আবার অনেক নব নব পদ্ধতি যুক্তও হয়েছে।

এই ক্ষুদ্র পরিসরে সকল কিছু পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে আলোচনা করা অসম্ভব তো বটেই। এর যৎসামান্যও তুলা ধরাও দুষ্কর। তাই প্রচলিত মতে-পথের কিছু তথ্যের সাথে ব্যাতিক্রমী কিছু সৎকার ও অন্তোষ্টিক্রিয়ার কথাই আলোচনার অংশবিশেষ হবে যা জন্মান্তরকে বুঝতে কিছুটা সহায়ক হলেও হতে পারে। আর তার জন্যই এই আয়োজন।

মৃতের সৎকারকে ঘিরে নানা সংস্কার প্রচলিত আছে। একদল বিশ্বাস করে আত্মা বা প্রাণশক্তি মৃত্যুর পর শেষ বিচারের জন্য অপেক্ষা করবে। অন্যদল বিশ্বাস করে মানুষ নতুন দেহ নিয়ে পুনরায় ধরাধামে ফিরে আসবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে পরমের সাথে লীন হতে পারে বা মুক্তি লাভ করবে।

আরেক দল এসবের কিছুতেই বিশ্বাস রাখে না। তাদের অনেকে বলে যে প্রকৃতি থেকে যে প্রাণশক্তিরূপী আত্মার বিকাশ তাতেই সে মিশে যায়। এটাও আসলে প্রথম দুই দলের বিশ্বাসের একটা ভাগ মাত্র নতুন কোনো বিশ্বাস বা অবিশ্বাস নয়।

সনাতন ধারায় এই মর্তলোককে বলা হয় মৃত্যুলোক। কারণ এখানেই দেহধারী জীব মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করে। এই লোকে দেহ ধারনের সুযোগ রয়েছে বলে জন্ম-মৃত্যুও আছে। দেহেরই মৃত্যু হয়; আত্মার মৃত্যু হয় না। আত্মা অবিনশ্বর। অনেকে একে কর্মলোকও বলে। কারণ এই লোকের প্রাণীকে কর্ম করার অধিকার দেয়া হয়।

মৃতের মৃত্যু পরবর্তী যাত্রা সুখকর করার জন্য মৃতের নিকট আত্মীয় বিশেষ করে সন্তান-পরিজন কর্তৃক উপস্থিত সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার রেওয়াজ প্রায় সকল সমাজেই প্রচলিত। যারা শব বহন করে তাদের বিশেষ আতিথেয়তা করার বিধানও দেখতে পাওয়া যায়।

প্রচলিত প্রায় সকল বিশ্বাসেই মৃতকে বিশেষ মর্যাদার সাথে সৎকার করা হয়। তা সে ভূমিতে দাফন করা হোক বা আগুনে পুড়িয়ে নি:শেষ করা হোক না কেনো। এ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন বিশ্বাসে যে রীতিনীতি বর্ণনা করা আছে প্রত্যেকেই তার সামর্থ অনুযায়ী যথাযথ পালন করার চেষ্টা নিয়ে থাকে।

সৎকার যদি সুষ্ঠ না হয় তাহলে মৃতের ও তার পরিবারে নানা বিপর্যয় ঘটতে পারে বলেও বেশিভাগ বিশ্বাসী মানুষ মনে করে। তাই সৎকার এবং সৎকার পরবর্তী যে সকল ক্রিয়া চলে আসছে আদিকাল থেকে তা সুনিপুনভাবে পালন করার চেষ্টা করে প্রায় সকল মতবাদের মানুষই। যদিও মৃত্যুর পর আত্মা কোথায় যায় তাকে ঘিরে প্রায় প্রত্যেকেই ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করে।

মুসলমান সমাজে শিশু জন্মালে আজান দিয়ে সকলের কাছে সে বার্তা পৌঁছে দেয়ার রীতি প্রচলিত। সুফি সাধকরা বলেন, সেই আজানের নামাজ আদায় করা হয় যখন শিশুটি তার জীবনকাল পূর্ণ করে মৃত্যুবরণ করে। মৃত্যুর পর যে নামাজ আদায় করা হয় সেই জানাজা নামাজের আজান দেয়া হয় জন্মের সময়।

মুসলমান-খ্রিস্টান-সাধককুল-সন্ন্যাসী-সিদ্ধপুরুষদের ভূমিতে সমাহিত করার বিধান দেখতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে সনাতন, বৌদ্ধ রীতিতে শবদাহ ও সমাহিত করার দুটি বিধানই দেখা যায়। জয়থ্রুস্ট রীতিতে মৃতদেহকে উঁচু স্থানে রেখে দেয়ার রীতি প্রচলিত। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে মৃতদেহ জলে ভাসিয়ে দেয়ার নিয়মও দেখা যায় কোনো কোন মতবাদে। সমাহিত ও শবদাহ করার রীতিই বর্তমান সমাজে অধিক প্রচলিত।

সমাহিত বা শবদাহ সকল মতবাদে একই রীতিতে করা হয় না। প্রত্যেকেরই আছে ভিন্ন ভিন্ন আচার, নিজ নিজ রীতি। মুসলমানদের মধ্যে মৃতকে পর্দার আড়ালে সুগন্ধি দিয়ে গোসল করিয়ে সিলাইবিহনী কাপড় পরিয়ে লাশ বহন করার খাটিয়াতে শোয়ানো হয়।

খ্রিস্টানদের মধ্যে কোনো কোনো সম্প্রদায় মৃতদেহের সাথে মৃতের পছন্দের জিনিসপত্র এমনকি টাকা-পয়সা পর্যন্ত দিয়ে দেয়। উপস্থিত সকলে কালো পোষাক পরিধান করে একজন ফাদারের উপস্থিতিতে প্রথমে গির্জায় মৃতের জন্য বিশেষ স্মরণসভা আয়োজন করা হয়। সেখান থেকে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। কবর দেয়ার পরও বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

পুরুষ মানুষ হলে তিন খানা কাপড় কাফন হিসেবে দেয়ার বিধান আছে। এই কাপড়ের টুকরোগুলো ইযার, কোর্তা, চাদর নামে ডাকা হয়। অন্যদিকে নারী হলে পাঁচ খানা কাপড় কাফন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই কাপড়ের টুকরোগুলো ইযার, কোর্তা, চাদর, ছেরবন্দ ও সিনাবন্দ নামে পরিচিত।

সমাহিত করার আগে মৃতের জন্য বিশেষ জানাজা নামাজ আদায় করা হয়। এই নামাজ মসজিদ বা খোলা প্রান্তরে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এক বা একাধিকবারও এই নামাজ অনুষ্ঠানে বাঁধা নেই। এরপর পুত্র-ভাই-পিতা অর্থাৎ পুরুষ স্বজনরা মৃতদেহ বহন করে সমাহিত করার স্থানে নিয়ে যায়।

শক্ত মাটিতে ‘বগ্‌লী’ আর নরম মাটিতে সাধারণত ‘সিন্ধুকী’ কবর খনন করা হয়। মৃতদেহের উচ্চতা অনুযায়ী কবরের দৈর্ঘ্য আর উচ্চতার অর্ধেক গভীরতায় কবর খনন করা হয়। তারপর একজন মৌলভীর উপস্থিতিতে লাশ সমাহিত করা হয় কবরে।

কবরে লাশকে রেখে তার কিছু ওপরে আড়াআড়িভাবে বাঁশ দিয়ে তার ওপর চাটাই বিছিয়ে দেয়া হয়। তারপর মাটি দিয়ে কবর ঢেকে দেয়া হয়। লক্ষ্য রাখা হয় এই মাটি যেন মরদেহের গায়ে না-পড়ে। তারপর বিশেষ দোয়া-মোনাজাত পাঠ করা হয়।

মুসলমানদের মধ্যেও বিভিন্ন ভাগ রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে লাশের কাপড় পরানো, কোন দিকে মুখ করে কবরে শোয়ানো হবে, কবর কিভাবে কাটা হবে, কবরের উপরের অংশ কেমন হবে ইত্যাদি ইত্যাদি আচারে পাথর্ক্য দেখতে পাওয়া যায়। আবার নারী-পুরুষ ও শিশুদের ক্ষেত্রেও সামান্য পার্থক্য দেখতে পাওয়া যায়।

মৃত্যুর তৃতীয় বা চর্তুথদিন, চল্লিশ দিন এবং এক বছর পর মৃতের পরিবার কুলখানি, চেহলাম, মৃত্যুবার্ষিকী আয়োজন করে। এই সকল অনুষ্ঠানতে সাধারণত কোরান পাঠ ও মিলাদ আয়োজন করে উপস্থিত সকলের জন্য ভোজের আয়োজন করা হয়। করা হয় মৃতের জন্য বিশেষ দোয়া-মোনাজাত।

খ্রিস্টানদের সৎকারও অনেকটা মুসলমানদের মতোই। তবে তারা মৃতদেহকে গোসল করাোনর পর উত্তম পোশাক পরিধন করায়। সুগন্ধি-আতর দিয়ে সুন্দর করে সাজায়। তারপর তাকে কফিনে শুইয়ে দেয়। সামর্থ অনুযায়ী কফিনের বৈচিত্র্য নির্ভর করে।

এই কফিনসহ মৃতদেহকে কবরে স্থাপন করা হয়। তারপর কফিনের ঢাকনা বন্ধ করে দিয়ে মাটি দিয়ে কবর পূর্ণ করা হয়। কবরের উপর এফিটাপে মৃতের নাম পরিচয় লিখে রাখা হয়। সামর্থ অনুযায়ী কবর পাকা করা হয়। এবং বিভিন্ন সাজসজ্জা করা হয়।

খ্রিস্টানদের মধ্যে কোনো কোনো সম্প্রদায় মৃতদেহের সাথে মৃতের পছন্দের জিনিসপত্র এমনকি টাকা-পয়সা পর্যন্ত দিয়ে দেয়। উপস্থিত সকলে কালো পোষাক পরিধান করে একজন ফাদারের উপস্থিতিতে প্রথমে গির্জায় মৃতের জন্য বিশেষ স্মরণসভা আয়োজন করা হয়। সেখান থেকে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। কবর দেয়ার পরও বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

দাহের সপ্তাহখানেক পর সাপ্তাহিক ক্রিয়ার দিন সকালে মুখাগ্নিকারী চিতার আগুনের ছাই পাত্রে তুলে চিতার পাশেই রেখে দেয়। তারপর লাশ গোসলের পানি আনা সেই কলসিতে করে জলাশয় থেকে পানি এনে চিতা ধুয়ে পরিস্কার করে। চিতা পরিষ্কার হয়ে গেলে একরার ডাবের পানি, আরেকবার দুধ দিয়ে চিতা ধুয়ে দেয়। এরপর বাড়ির আঙ্গিনায় এসে পরিবারের কাউকে ছুয়ে মাথা মুড়িয়ে গোসল করে ঘরে প্রবেশ করে।

বৌদ্ধ ধর্মে মৃতদেহ সমাহিত ও সৎকার দুটি রীতিই প্রচলিত। সাধারণভাবে যে অঞ্চলে যে প্রথা হয়ে আসছে সেখানে সেই প্রথা পালন করতে দেখা যায়। তবে বেশিভাগ ক্ষেত্রে বৌদ্ধদের মৃতদেহ দাহ করা হয়। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের ক্ষেত্রে অবশ্য ব্যাতিক্রমী কিছু প্রথারও প্রচলন দেখতে পাওয়া যায়।

ঘেরা জায়গায় মৃতদেহ গোসল করিয়ে নতুন কাপড় পরানো হয়। সাধারণভাবে পুরুষদের পুরুষ আর নারীদের নারীরা গোসল করিয়ে থাকে। যিনি মুখাগ্নি করবেন তিনি জলাশয় থেকে কলসিতে করে পানি নিয়ে আসেন। সেই পানিতেই মৃতদেহ গোসল করানো হয়। ভিক্ষুসংঘ ও জ্ঞাতিবর্গের উপস্থিতিতে মৃতের অনিত্যানুষ্ঠানের সকল রীতিনীতি আচার পালন করা হয়ে থাকে।

গৃহী সধবা নারীর ক্ষেত্রে মৃতদেহকে নববধু সাজে আর পুরুষের ক্ষেত্রে সাধারণ সাদা কাপড়ে ঢেকে দেয়া হয়। ভিক্ষুদের ক্ষেত্রে ফুল দিয়ে সাজানোর রীতি আছে। এতে অবশ্য বাধ্যবাধকতা নেই। সম্মানিত-মর্যাদাসম্পন্ন কোনো ভিক্ষু দেহত্যাগ করলে তার জন্য বিশেষ আয়োজন করা হয়। তাকে ঘিরে পুরো এলাকাও সাজাতে দেখা যায়।

গৃহীর ক্ষেত্রে বাড়ির উঠানে সকলের দরশনের জন্য উন্মুক্ত অবস্থায় খাটের ওপর মৃতদেহ রাখা হয়। বিশেষ ক্ষেত্রে মৃতদেহকে বাক্সের ভেতর রেখে তারপর সকলের সামনে আনা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাক্সের মধ্যে মৃতদেহ রাখা হলেও উপরের অংশ উন্মুক্ত রাখা হয়। কমপক্ষে পাঁচজন ভিক্ষুর উপস্থিতিতে এ সকল ক্রিয়া করা হয়।

এরপর শ্মশানে দাহকার্যের জন্য মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। যিনি মুখাগ্নি করবেন তিনি মাথায় করে রান্না করা ভাত এনে শবের মুখে সেই ভাত ছুঁইয়ে মুখ মুছিয়ে দেয়। তারপর একটা জ্বলন্ত মশাল নিয়ে চিতায় সাতপাক ঘুরে সাতবার চিতার আগুন ছুইঁয়ে, মৃতের হাত-পা ছুঁয়ে ভক্তি দিয়ে মুখাগ্নি করে। গৃহিদের ক্ষেত্রে সাধারণত জ্যেষ্ঠপুত্র মুখাগ্নি করে থাকে।

দাহের সপ্তাহখানেক পর সাপ্তাহিক ক্রিয়ার দিন সকালে মুখাগ্নিকারী চিতার আগুনের ছাই পাত্রে তুলে চিতার পাশেই রেখে দেয়। তারপর লাশ গোসলের পানি আনা সেই কলসিতে করে জলাশয় থেকে পানি এনে চিতা ধুয়ে পরিস্কার করে। চিতা পরিষ্কার হয়ে গেলে একরার ডাবের পানি, আরেকবার দুধ দিয়ে চিতা ধুয়ে দেয়। এরপর বাড়ির আঙ্গিনায় এসে পরিবারের কাউকে ছুয়ে মাথা মুড়িয়ে গোসল করে ঘরে প্রবেশ করে।

দাহের এক সপ্তাহ পর সাপ্তাহিক ক্রিয়া, এরপর মাসে মাসে মাসিক ক্রিয়া, ছয় মাসে ষান্মাসিক আর প্রতি বছরে বার্ষিক ক্রিয়া অনুষ্ঠান আয়োজন করে মৃতের পরিবার। প্রতি অনুষ্ঠানে অন্তত ৫জন ভিক্ষুকে আহার করানো এবং সংঘদান করা হয়।

আগুন নিভিয়ে ফেরার পর একটি জলপূর্ণ কলস চিতার স্থানে রাখা হয়। শবের অদগ্ধ দেহাংশ, ভস্ম ইত্যাদি অপর একটি মাটির পাত্রে সংগ্রহ করে জলে ভাসানো হয়। শেষে কুঠার বা মাটির ঢেলা দিয়ে চিতার কলসটি ভেঙ্গে শ্মশান ত্যাগ করার বিধান।

বার্ষিকী অনুষ্ঠানে আত্মীয়-স্বজন-প্রতিবেশিদেরও দাওয়াত করে আহার করানোর রীতি প্রচলিত। লাশ পোড়ানোর সময় মুখাগ্নিকারী যে সাদা পোশাক আর সাদা কাপড় জড়িয়ে দাহ করে। সেটিকে যত্নে রাখতে হয়। কারণ প্রতিটা ক্রিয়াতে তাকে সেই পোশাক পরতে হয়।

অন্যদিকে সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে শবদাহ করার ক্ষেত্রে মানা হয় নানান রীতিনীতি। সৎকারের এই রীতিনীতি পরিচিত অন্তোষ্টিক্রিয়া নামে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে আগুনে পোড়ানোর মধ্য দিয়ে যে পঞ্চতত্ত্বে মানবদেহের গঠন সেই পঞ্চতত্ত্ব আপন আপন তত্ত্বে দ্রুত ফিরিয়ে দিতেই এই মহাযজ্ঞ।

দাহের পূর্বে সাধ্য অনুযায়ী ঘি বা তেল মাখিয়ে শবদেহ গোসল করিয়ে নতুন বস্ত্র পরানো হয়। উত্তর দক্ষিণে দীর্ঘ করে চিতার কাঠ সাজানোর নিয়ম। চিতার ওপর বস্ত্র দিয়ে মৃতদেহকে উত্তর দিকে মাথা দিয়ে নর হলে উপুড় করে আর নারী হলে চিত করে শোয়ানো হয়। তবে এ নিয়মের ব্যতিক্রমও হয়।

সামর্থবান অনেকে দাহের কাজে চন্দনকাঠ বা চন্দনগুঁড়া ব্যবহার করে। জ্যেষ্ঠপুত্র, অভাবে অন্যপুত্র, তা না হলে শাস্ত্র নির্দেশিত অন্য কোন ব্যক্তি মুখাগ্নি করে।

বৈদিক যুগে দেবলোকে প্রার্থনা জানাবার একমাত্র উপায় ছিল যজ্ঞ। আগুন হলো দেবতাদের পুরোহিত। আর এই পুরোহিতের কাছে অর্থাৎ আগুনে দেবতার নাম করে কোন কিছু আহুতি দিলে তা দেবলোকে পৌঁছে যাবে এমন বিশ্বাস থেকে দাহে মুখাগ্নির বিধান।

আগুন নিভিয়ে ফেরার পর একটি জলপূর্ণ কলস চিতার স্থানে রাখা হয়। শবের অদগ্ধ দেহাংশ, ভস্ম ইত্যাদি অপর একটি মাটির পাত্রে সংগ্রহ করে জলে ভাসানো হয়। শেষে কুঠার বা মাটির ঢেলা দিয়ে চিতার কলসটি ভেঙ্গে শ্মশান ত্যাগ করার বিধান।

মৃত পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে এবং তাদের আশীর্বাদ কামনায় ব্রাহ্মণকে দান-ধ্যান ও অতিথিভোজনে ‘শ্রাদ্ধ’ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

বর্ণভেদে মৃত্যু দিনের ৭, ১১, ১৫ বা ৩০ দিন পর সামর্থ্য অনুযায়ী মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে আদ্যশ্রাদ্ধ পালন করা হয়। এছাড়া আভ্যুদয়িক শ্রাদ্ধ, সপিণ্ডীকরণ শ্রাদ্ধ, পার্বণশ্রাদ্ধ, বিষ্ণুপাদপদ্ম শ্রাদ্ধ, একোদ্দিষ্ট এবং অম্বষ্টকা নামের শ্রাদ্ধের কথা জানা যায়।

সাধারণভাবে যে তিথিতে মানুষ মারা যান, সেই তিথিতে তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই নিয়মের কিছু ব্যতিক্রমও রয়েছে।

মৃতের পিণ্ড দানের একটা বিশেষ পর্ব আছে। পবিত্র তীর্থ গয়ায় এই পিণ্ড দান করা হয়। এছাড়াও আরো বেশকিছু জায়গা প্রসিদ্ধ এই পিণ্ডদানের জন্য।

তর্পণ নামে আরেক বিধির নাম জানা যায়। মৃত পূর্বপুরুষের আত্মার উদ্দেশ্যে তাদের কাছে সুখ শান্তি কামনা করে জল নিবেদন করে তর্পণ করতে হয়।

একসময় ভারতবর্ষে স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রীকে সহমরণে একই চিতায় উঠতে হতো। এ প্রথা পরিচিত ছিল সতীদাহ নামে। পরবর্তীতে আইন করে এই প্রথা বিলুপ্ত করা হয়।

অন্যদিকে নর্থওয়েস্টার্ন ফিলিপাইনের বেনগেট গোত্রে মৃতের চোখ বেঁধে বাড়ির প্রধান প্রবেশদ্বারে ঝুলিয়ে রাখার রীতি প্রচলিত। দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশেষ পদ্ধতিতে মৃতদেহ সংকুচিত করে রঙিন পুঁতিতে পরিণত ঘরে সাজিয়ে রাখে অনেকে।

স্ক্যান্ডিনেভিয়ার অঞ্চলের সমুদ্রচারী ভাইকিংদের মৃতদেহ সৎকারের মধ্যেও এমনি একটা প্রথার কথা জানা যায়। তাদের কোনো দলপতির মৃত্যু হলে তার সাথে সহমরণে যাওয়ার জন্য একজন ক্রীতদাসীকে নির্বাচন করতো। বেশিভাগ ক্ষেত্রেই জোরপূর্বক এ কাজ করা হতো।

নির্বাচিত ক্রীতদাসীর উপর নানরূপ নির্যাতন চালিয়ে শেষে দড়ি দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে এবং ছুরির আঘাতে নারীটিকে হত্যা করা হতো। এরপর সেই নারীকে দলপতির মৃতদেহের সাথে একই নৌকায় তুলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হতো। তাদের বিশ্বাস ছিল, এতে পরকালে ক্রীতদাসী নারীটি তাদের দলপতির দেখভাল করতে পারবে।

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের আদিবাসীদের মধ্যে মৃতদেহ সৎকারের নানা বিধি প্রচলিত। এরমধ্যে সমাহিত করার রীতি যেমন আছে তেমনি আছে শবদাহ করা, মমি করা, মৃতদেহ খেয়ে ফেলার বিধিও আছে। এদের অনেকে মৃতের হাড় সংগ্রহ করে যত্নে রেখে দেয়।

ভেনেজুয়েলার ইয়ানোমামি গোত্রে মৃতের হাড়ের গুড়ো ও ছাই কলার সিদ্ধ করার সাথে মিশিয়ে খাবার হিসেবে গ্রহণ করার নিয়ম প্রচলিত আছে। একসময় পাপুয়া নিউগিনিরর মেলানসিয়ান এবং ব্রাজিলের ওয়ারী ও ইয়ানোমামী গোত্রেও মৃতদেহ খেয়ে খেলার নিয়ম ছিল।

পাপুয়া নিউগিনির দানি সম্প্রদায়ে প্রিয়জনের মৃত্যুতে পরিবারের নারী ও শিশুকে নিজের আঙ্গুল কেটে স্বাক্ষী হওয়ার বিধান ছিল এক সময়। ফিলিপাইনের ক্যাভিটেনো সম্প্রদায়ে নিষ্প্রাণ গাছের কোটরে মৃতদেহ সমাহিত করে। আর অ্যাপায়ো সম্প্রদায়ে রান্না করার স্থানে মৃতদেহ সমাহিত করা হয়।

অন্যদিকে নর্থওয়েস্টার্ন ফিলিপাইনের বেনগেট গোত্রে মৃতের চোখ বেঁধে বাড়ির প্রধান প্রবেশদ্বারে ঝুলিয়ে রাখার রীতি প্রচলিত। দক্ষিণ কোরিয়ায় বিশেষ পদ্ধতিতে মৃতদেহ সংকুচিত করে রঙিন পুঁতিতে পরিণত ঘরে সাজিয়ে রাখে অনেকে।

উত্তর আমেরিকার হাইডা সম্প্রদায়ে গোত্র প্রধানের মৃতদেহ গুড়া করে বিশেষ বাক্সে ভরে তার বাড়ির সামনে গ্রোত্রের প্রতীক হিসেবে চিহ্নায়ন করা হতো। ঘানায় মৃতের জীবকাকে কেন্দ্র করে কঠিনের আকৃতিতে সমাহিত করার বিধান এখনো প্রচলিত।

ম্যাক্সিকো এবং আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে মৃতদেহ বহন করার সময় আনন্দ উল্লাস করা হয়। নৃত্য-গীতে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মতদেহ সমাহিত করতে নিয়ে যাওয়া হয়। আফ্রিকা ও ইতালিতে মৃত্যুর পর আনুষ্ঠানিকতা এমনকি কান্নাকাটি করার জন্য ভাড়ায় লোক পর্যন্ত নিযুক্ত করা হয়। আফ্রিকার কোনো কোনো সম্প্রদায়ে মৃতদেহের কফিন নিয়ে নৃত্য করার জন্য ভাড়ায় লোক পাওয়া যায়।

পার্সি বা জরথ্রুষ্টিয়ান বা জোরাস্ট্রিয়ানরা মৃতদেহ সৎকার না করে উঁচু স্থানে উন্মুক্তভাবে রেখে দেয়ার বিধান আছে। সেই দেহ শকুনের দল খেয়ে নিলেই মৃত ব্যক্তির পাপ মোচন হয় বলে তাদের বিশ্বাস। পার্সিরা মৃতদেহকে অপবিত্র ভাবে। মৃত্যুর পর দেহে অশুভ আত্মা প্রবেশ করে এমনো বিশ্বাস ছিল। আবার মৃতদেহ থেকে বিভিন্ন জীবানু ছড়িয়ে পরতে পারে এমন ভাবনা থেকেও দূরে উঁচুতে মৃতদেহ মৃত্যু পরপরই রেখে আসা হতো।

আদিতে উঁচু পাহাড়ে মৃতদেহ রাখা হলেও পরবর্তী এর জন্য রীতিমতো ঘটা করে বিশাল বিশাল টাওয়ার বানানো হয়। এগুলো পরিচিত ‘টাওয়ার অব সাইলেন্স’ বা ‘নি:শব্দের চূড়া’ নামে। শকুনে মৃতদেহের মাংস খেয়ে ফেললে যে হাড়গোড় পরে থাকে বছর বছর তা তারা সংগ্রহ করে জমিতে সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

মৃতদেহ উন্মুক্তভাবে রেখে দিলেও নানা ধর্মীয় উপাচার-রীতিনীতি মেনেই তা করা হতো। টাওয়ার অব সাইলেন্সে নির্দিষ্ট ধর্মীয় ও পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে মৃতদেহ রাখার বিধান।

তিব্বতে বৌদ্ধদের কোনো কোনো মতে বিশেষ করে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা মৃতদেহ ফালি ফালি করে কেটে পাখিকে খাবার হিসেবে পাহাড়ে ছড়িয়ে দেয়। জানা যায়, সেখানে কেউ মারা গেলেও মৃতদেহ কাউকে ছুঁতে দেয়া হয় না। ঘরের মধ্যেই মৃতদেহকে বসিয়ে চাদর দিয়ে ঢেকে দেয়ে হয়। পাশে জ্বালিয়ে দেয় হয় পঞ্চপ্রদীপ। পুরোহিত পোবো লামা ঘরে ঢুকে দরজা-জানালা সব বন্ধ করে মন্ত্র পড়ে মৃতের দেহ থেকে আত্মাকে বের করার চেষ্টা করে।

এ কাজ করার জন্য মৃতদেহের তিন-চার গোছা চুল টেনে ওপরে আনা হয়। পাথরের ছুরি দিয়ে মৃতদেহের কপালে কেটে আত্মা বের হওয়ার রাস্তা করে দেয়া হয়। এরপর মৃতদেহকে নিয়ে যাওয়া হয় বড় কোনো পাথরের ওপর।

মন্ত্র পড়তে পড়তে মৃতদেহের বিভিন্ন অংশে ছুরি দিয়ে দাগ কাটা হয়। দাগ কাটার পর অপর একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে সেই দাগ ধরে ধরে মৃতদেহকে ফালি ফালি করে কেটে ফেলা হয়। সেই টুকরো টুকরো মাংসগুলো জঙ্গলে ছড়িয়ে দেয়া হয় পশুপাখিদের খাওয়ার জন্য।

ম্যাক্সিকো এবং আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে মৃতদেহ বহন করার সময় আনন্দ উল্লাস করা হয়। নৃত্য-গীতে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মতদেহ সমাহিত করতে নিয়ে যাওয়া হয়। আফ্রিকা ও ইতালিতে মৃত্যুর পর আনুষ্ঠানিকতা এমনকি কান্নাকাটি করার জন্য ভাড়ায় লোক পর্যন্ত নিযুক্ত করা হয়। আফ্রিকার কোনো কোনো সম্প্রদায়ে মৃতদেহের কফিন নিয়ে নৃত্য করার জন্য ভাড়ায় লোক পাওয়া যায়।

আবার আধ্যাত্মিক ভাবধারার সাধকরা মনে করেন, যেহেতু জন্মের ঋণ পরিশোধ করেই সাধকরা সিদ্ধ হয় তাই তাদের দেহ আর বিনষ্ট হয় না। পরম-পাওয়ারদিগার বা পরমেশ্বরের সাথে জীবাত্মার মিলনে সিদ্ধ পুরুষের দেহ পূর্ণতা লাভ করে। সে আর পঞ্চতত্ত্বে ফিরে যায় না। বা ফিরে যাবার প্রয়োজন পরে না।

আসলে বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসীর ঊর্ধ্বে উঠে সকলকেই মৃতদেহকে কেন্দ্র করে কোনো না কোনো উপাচার করতে হয়। মৃতদেহের পচন ঠেকাতে বা তা থেকে জীবাণু ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হলেও কিছু না কিছু রীতি মানতেই হয়। কারণ বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী সকলের জন্যই মৃত্যু নিশ্চিত। একে অস্বীকার করার উপায় নেই।

সে আর দেহধারী হয়ে ধরাধামে ফিরবে না। তাদের দেহ থেকে আত্মা-রুহ্-চৈতন্য-প্রাণশক্তি বিচ্ছিন্ন হলেও সে পবিত্র দেহ সংরক্ষণ করা জরুরী। তাই তাদের অতি যত্নে সমাহিত করা হয়। সেই সমাধি ঘিরে নির্মাণ করা হয় সৌধ-রওজা-আখড়া।

অবশ্য আধুনিক সমাজে অনেকে এই সকল রীতিনীতিতে বিশ্বাসী নয়। জন্মান্তর-জীবান্তরে ভরসা রাখে না। তাদের অনেকে মৃত্যুর পর মানব সেবায় নিজ দেহকে দান করে দিয়ে মহান দায়িত্ব পালন করেন। এতে তারা ধরাধামে না থাকলেও তাদের দেহের অঙ্গ অন্যের দেহে সচল থাকে। অবশ্য অনেকে একেও জন্মান্তর বলে থাকেন।

আবার অনেকে মনে করেন মানুষের জন্মান্তর ঘটে তার কর্মে। আত্মা বা দেহ বিনষ্ট হয়ে গেলেও কর্ম থেকে যায়। কর্মের মাঝেই মানুষ জন্ম-জন্মান্তরে বেঁচে থাকে। সেই কর্ম হতে পারে শিল্পকর্ম বা হতে পারে তার জনহিতকর কোনো কাজ। যাতে মানুষের কল্যাণ নির্হিত। আর সে কারণে মৃত্যুর বহু বহু বছর পরেও তারা মানুষের স্মরণে থাকে। এটাই জন্মান্তর।

আবার কেউ কেউ বলেন, জীব তার নিজ সন্তানের মাঝে বেঁচে থাকে। এটাও জীবের জন্মান্তর। এতে মূলত জিনের জন্মান্তর ঘটে। সাধককুল বলেন, জন্ম দিলে আত্মা খণ্ডন হয়। এতে নির্বাণ পাওয়া দুরূহ হয়ে যায়। জন্মান্তরের জ্বালে জড়িয়ে পরতে হয়।

ধর্মীয় বিশ্বাসে কেবল দেহ নয় আত্মার পরবর্তী যাত্রা নিশ্চিত করার জন্যও নানা বিধিবিধান দিয়েছে। বস্তুবাদ এর কোনো কিছুই বিশ্বাস না করলেও। কালের বিবর্তনে মৃতদেহকে বিদায় দেয়ার কিছু অনানুষ্ঠানিক রীতিনীতি তাদের মাঝেও দৃষ্ট হয়। তবে তা স্থায়ী কিছু নয়।

যুগে যুগে মৃতের সংস্কারে আধুনিক প্রযুক্তির নানা যন্ত্রপাতি যেমন বিশ্বে নির্মিত হয়েছে। তেমনি আবার প্ররিবেশবাদীরা নানা নতুন নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে। যাতে দেহ পরিবেশের সাথে মিশে জগতের কল্যাণে নিযুক্ত হয়।

আসলে বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসীর ঊর্ধ্বে উঠে সকলকেই মৃতদেহকে কেন্দ্র করে কোনো না কোনো উপাচার করতে হয়। মৃতদেহের পচন ঠেকাতে বা তা থেকে জীবাণু ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে হলেও কিছু না কিছু রীতি মানতেই হয়। কারণ বিশ্বাসী বা অবিশ্বাসী সকলের জন্যই মৃত্যু নিশ্চিত। একে অস্বীকার করার উপায় নেই।

বিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক ডায়োজিনিস বলেছেন, ‘যদি হুশই না থাকে, চেতনাই না থাকে, তাহলে শিয়ালে খেলেই কি আর শকুনে খেলেইবা কি? পোড়ালেই কি আর মাটি চাপা দিলেই কি? যেহেতু টেরই পাবো না, সেহেতু এসবে কি আসে যায়?’

আর বাংলার বাউল খালেক দেওয়ান লিখেছেন-

আমি মরিলে যেন পাই তোমারে গো
পুনর্জন্ম লইয়া।।

আমি মরলে এই করিও
আমার মরা না পোড়াইও
না গাড়িও, না দিও ভাসাইয়া
বন্ধু বন্ধু বন্ধু বলে
কান্দিস আমার কর্ণমূলে গো
তমাল ডালে রাখিও বান্ধিয়া।।

প্রাণ বন্ধুয়া দেশে এলে
সখি তোরা সবাই মিলে
যাইও তারে তমাল তলে লইয়া
বলিস তোমার প্রেমে পড়ে
পরাণ পাখি গেছে উড়ে গো
শূন্য খাতা রয়েছে পড়িয়া।।

চণ্ডিদাসের মরণ হইলো
রজকিনী বাঁচাইলো
শাস্ত্রে কয় প্রেমের দোহাই দিয়া
দেওয়ান খালেক মরা ওই পিরীতে
যদি বন্ধুর লাগে চিত্তে গো
নেয় যেন আবার জনম দিয়া।।

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

…………………………………..
সূত্র:
বাংলাপিডিয়া
উইকিপিডিয়া

…………………………………..
আরো পড়ুন:
চুরাশির ফেরে: এক
চুরাশির ফেরে: দুই
চুরাশির ফেরে: তিন : আত্মা-১
চুরাশির ফেরে: চার: আত্মা-২
চুরাশির ফেরে: পাঁচ : সৎকার
চুরাশির ফেরে: ছয় : কর্মফল-১
চুরাশির ফেরে: সাত : কর্মফল-২
চুরাশির ফেরে: আট : পরকাল-১
চুরাশির ফেরে: নয় : পরকাল-২

চুরাশির ফেরে: দশ : জাতিস্মর
চুরাশির ফেরে: এগারো : প্ল্যানচেট
চুরাশির ফেরে: বারো : ওউজা বোর্ড
চুরাশির ফেরে: তেরো : প্রেতযোগ
চুরাশির ফেরে: চৌদ্দ : কালাজাদু
চুরাশির ফেরে: পনের: গুপ্তসংঘ–১

চুরাশির ফেরে: ষোল: গুপ্তসংঘ–২
চুরাশির ফেরে: সতের: ইলুমিনাতি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!