ভবঘুরেকথা
পরিব্রাজকাচার্য্যবর শ্রীশ্রীমৎ দূর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেব

তিনি বলতেন, “কাশ্যপমুনির নিকট যেমন আর্ত, গরীব দুঃখী সকলেই আশ্রয় পাইত, তেমনি আমার নিকট যাহারা আশ্রয় লইতে আসে, তাহাদের নিরাশ করা আমার ধর্ম নয়। বিশ্বের সেবায় আমি জীবন-পাত করিতে অভিলাষী।”

পরিব্রাজকাচার্য্যবর শ্রীশ্রীমৎ দূর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেব। পূর্বাশ্রম এর নাম শ্রী দূর্গাপ্রসন্ন চক্রবর্তী।পিতার নাম পূন্যশ্লোক উমাচরন চক্রবর্তী, মাতার নাম শ্রী চিন্তামনি দেবী। ১২৯৮ বঙ্গাব্দ ৩০ কার্তিক, রবিবার,রাস পূর্নিমার দিন তিনি জন্মগ্রহণ করেন রাজাপুর, বরিশালে। ব্রম্মচর্য্য নাম শ্রীমৎ দূর্গাপ্রসন্ন ব্রম্মচারী। সন্ন্যাস নাম স্বামী নির্ব্বিকারানন্ দ সরস্বতী মহারাজ। গায়ত্রী মন্ত্রে সিদ্ধিলাভ করেন ১৭ বছর বয়সে।কুলগুরু আচার্য্য নিবারন চন্দ্র ভট্টাচার্য্য।

সদ্গুরু স্বামী নিগমানন্দ সরস্বতী মহারাজ। সিদ্ধিলাভ করেন রাজাপুরের অশোক বৃক্ষমূলে, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন রাত্রে স্বামী নিগমানন্দের পঞ্চভৌতিক দেহে চতুর্ভুজ নারায়নের দর্শন লাভ করেন।তিনি সাধনা করেন মেহেরপুরের কালী বাড়ি ও দাম পাহাড়।

গুরু রুপে আত্নপ্রকাশ করেন, প্রথম এক শুভ দিনে স্বামি নিগমানন্দ তাকে গুরুগিরী প্রদান করেন। অন্ন গ্রহন ত্যাগ করেন ৩৩ বছর বয়সে পরিব্রাজক অবস্থায়।গীতাপাঠে অমনোযোগী হবার কারন স্বরুপ অন্ন হাড়ি ভূমিতে নিক্ষেপ করে ও সে দিবস

পরে শ্রীশ্রী গীরিধারী আশ্রম নামে নামাঙ্কিত করা হয়। সর্বব প্রথম স্ব হস্তে ছোনাউটা আশ্রম স্থাপন সহ, ডুমুরিতলা, কাউখালী বাংলাদেশে আশ্রম স্থাপন করেন।১৩৬০ বঙ্গাব্দে কাশী ধামে শ্রীশ্রী কালিকানন্দ পরমহংসদেব ও অন্যান্য সাধক মন্ডলী তাকে পরমহংস উপাধি প্রদান করেন।

হইতে অন্ন গ্রহণ ত্যাগ করেন। জীবের কল্যাণের জন্য ১৩৫২ বঙ্গাব্দের ১৩ ই ভাদ্র বুধবার শ্রী গুরু সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করেন। পঞ্চসূনা পাপ ও অন্ন কষ্ট দূর করার জন্য ১৩৫৪ বঙ্গাব্দে মঙ্গল ঘটের প্রবর্তন করেন। ১৩৫৭ বঙ্গাব্দে পলাশীতে “শ্রী গুরু সঙ্ঘ ব্রম্মচর্য্যাশ্রম ” প্রতিষ্ঠা করে।পরে শ্রীশ্রী গীরিধারী আশ্রম নামে নামাঙ্কিত করা হয়।

সর্বব প্রথম স্ব হস্তে ছোনাউটা আশ্রম স্থাপন সহ, ডুমুরিতলা, কাউখালী বাংলাদেশে আশ্রম স্থাপন করেন।১৩৬০ বঙ্গাব্দে কাশী ধামে শ্রীশ্রী কালিকানন্দ পরমহংসদেব ও অন্যান্য সাধক মন্ডলী তাকে পরমহংস উপাধি প্রদান করেন।

১৩৬৭ সালে নাকতলাতে কেন্দ্রীয় আশ্রম প্রতিষ্ঠা হয়। শাখা আশ্রম : ভুবনেশ্বর, কাশীধাম, বৃন্দাবন, হরিদ্বার,পুরীধাম ও অন্যান্য স্থানে শাখা আশ্রম স্থাপন করেন।১৯৫৮ সালে প্রথম পলাশীতে আচার্য্য দুর্গাপ্রসন্ন জুনিয়র হাই স্কুল সহ অারও অন্যান বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।

লীলা দর্শন :

১৩৭০ বঙ্গাব্দে ১৭ ভ্রাদ্র কেশীঘাটে যমুনায় রাধারানীর জল কেলি দর্শন করেন। ১৩৬০ বঙ্গাব্দে ৬ চৈত্র বৃন্দাবনে রাধারানীর কাছ থেকে কুসুম মিশ্রি প্রসাদ ও গোবিন্দের প্রসাদী মালা গ্রহন করেন। শ্রী গুরু সঙ্ঘ সেবা শিবিরে প্রতি বছর কাপড় কম্বল দানের ব্যাবস্থা সহ বহু সবা মূলক কার্য সম্পাদন করেন। ১৩৮২ বঙ্গাব্দের ৩০ শ্রাবন শুক্লা দশমী তিথিতে দুপুর ১২ টা ৪৫ মিনিটে যোগ বলে, স্ব ইচ্ছায় পঞ্চভৌতিক দেহ ত্যাগ করেন।

আসনতলের মাটির ‘পরে লুটিয়ে রব।
তোমার চরণ-ধুলায় ধুলায় ধূসর হব।
কেন আমায় মান দিয়ে আর দূরে রাখ,
চিরজনম এমন করে ভুলিয়ো নাকো
অসম্মানে আনো টেনে পায়ে তব।

তোমার চরণ-ধুলায় ধুলায় ধূসর হব।
আমি তোমার যাত্রীদলের রব পিছে,
স্থান দিয়ো হে আমায় তুমি সবার নীচে।
প্রসাদ লাগি কত লোকে আসে ধেয়ে,
আমি কিছুই চাইব না তো রইব চেয়ে;
সবার শেষে বাকি যা রয় তাহাই লব।
তোমার চরণ-ধুলায় ধুলায় ধূসর হব।

শ্রী গুরু জয়
“খন্ড খন্ড হয়ে যদি যায় দেহ প্রাণ,
তথাপি বদনে ছাড়িব না মধুর হরি নাম।।
নামেতে মজিলে মন হরি দেয় দরশন,
কৃপা করে দেয় তারে যুগোল চরণ।।”

………………….
পুনপ্রচারে বিনীত: প্রণয় সেন

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

………………….
আরও পড়ুন-
স্বামী অড়গড়ানন্দজী
ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায়
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব
শিরডি সাই বাবা
পণ্ডিত মিশ্রীলাল মিশ্র
নীলাচলে মহাপ্রভুর অন্ত্যলীলার অন্যতম পার্ষদ ছিলেন রায় রামানন্দ
ভক্তজ্ঞানী ধর্মপ্রচারক দার্শনিক রামানুজ
সাধক ভোলানন্দ গিরি
ভক্ত লালাবাবু
লাটু মহারাজ শ্রীরামকৃষ্ণের অদ্ভুত সৃষ্টি
কমলাকান্ত ভট্টাচার্য
ব্রাহ্মনেতা কেশবচন্দ্র সেন
পরিব্রাজকাচার্য্যবর শ্রীশ্রীমৎ দূর্গাপ্রসন্ন পরমহংসদেব
আর্যভট্ট কাহিনী – এক অজানা কথা
গিরিশচন্দ্র ঘোষ
কঠিয়াবাবা রামদাস
সাধু নাগ মহাশয়
লঘিমাসিদ্ধ সাধু’র কথা
ঋষি অরবিন্দ’র কথা
অরবিন্দ ঘোষ
মহাত্মাজির পুণ্যব্রত
দুই দেহধারী সাধু
যুগজাগরণে যুগাচার্য স্বামী প্রণবানন্দজি মহারাজ
শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর
বাচস্পতি অশোক কুমার চট্টোপাধ্যায়ের লেখা থেকে
মুসলমানে রহিম বলে হিন্দু পড়ে রামনাম
শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্র দেব : প্রথম খণ্ড
শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্র দেব: দ্বিতীয় খণ্ড
শ্রীশ্রীঠাকুর রামচন্দ্র দেব : অন্তিম খণ্ড
মহামহোপাধ্যায় কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ
শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর
শ্রীশ্রী ঠাকুর সত্যানন্দদেব
মহাতাপস বালানন্দ ব্রহ্মচারী: এক
মহাতাপস বালানন্দ ব্রহ্মচারী: দুই
মহাতাপস বালানন্দ ব্রহ্মচারী: তিন
সাধক তুকারাম
সাধক তুলসীদাস: এক
সাধক তুলসীদাস: দুই
সাধক তুলসীদাস: তিন
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী: এক
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী: দুই
শ্রীশ্রী মোহনানন্দ স্বামী: তিন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!