ভবঘুরেকথা
তারক ঠাকুর

মাতা পিতার বন্দনা
পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম সর্ব শাস্ত্রে কয়।
ভাবিয়া পিতার পদ রাখিনু মাথায়।।
যাহার কৃপায় আমি এ জগতে আসি।
তাহার শরণে পাপ খণ্ডে রাশি রাশি।।
না বুঝিয়া কত পাপ করেছি চরণে।
এ পাপের নাহি ক্ষমা সে চরণ বিনে।।
কত কষ্টে পিতা মোর করেছে পালন।
পিতৃ ঋণ শোধ দিতে পারে কোন জন।।
পিতা যে পরম বস্তু সাধনের ধন।
পূঁজিলিনা সে চরণ ওরে মূঢ় মন।।
মায়াজালে হয়ে বন্দি সে সব ভুলিলি।
ঘরেতে রাখিয়া ধর বাহিরে খুঁজিলি।।
যখনে ছিলিরে মন পিতৃ-মণি পুরে।
তথা হতে আইলিরে জননী জঠরে।।
দশ মাস দশ দিন ছিলি মাতৃগর্ভে।
মাতা মোর কত কষ্ট করে কত ভাবে।।
অসহ্য যাতনা মাতা সহে হাস্য মুখে।
আশাতে বাঁধিয়া বুক সদা থাকে সুখে।।
দশ মাস দশ দিন যখনে হইল।
প্রসব করিতে মাতা কত কষ্ট পেল।।
তারপর কতভাবে করেছে পালন।
স্তন দুগ্ধ দিয়ে মোরে বাঁচায় জীবন।।
তবু মাতা দিন রাত প্রফুল্ল-অন্তরে।
স্নেহভরে কোলে করে কত যত্ন করে।।
নিজে না খাইয়া মাতা খাওয়ায়েছে মোরে।
মলমূত্র ধোঁয়ায়েছে ঘৃণা নাহি করে।।
এত কষ্ট করে মাতা তবু হাসি মুখে।
মা শব্দের তুল্য দিতে আর কিছু নাই।
ঐ চরণে গয়া গঙ্গা সব কিছু পাই।।
এহেন মায়ের পদ ভাবিয়া অন্তরে।
লিখিলাম এই পুথি মা বাপের বরে।।
মাতা পিতার চরণে করিলাম স্তুতি।
পাপ দেহে যেন মোর জাগয়ে ভকতি।।
তাই বলি ওরে মন হরি হরি বল।
কান্দিয়া বিনোদ বলে বেলা ডুবে গেল।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!