ভবঘুরেকথা
হায়দার বাবা

-জহির আহমেদ

স্রষ্টার শান-মান অতুলনীয়। তিনি রহমানুর রাহিম। তাই সৃষ্টির প্রতি তাঁর দয়া-দানও অবিস্মরণীয়। আল্লাহ যার প্রতি দয়া করেন, তিনি তাঁর সান্নিধ্য পেয়ে থাকেন। যারা আল্লাহর সান্নিধ্য পান, দুনিয়ার মোহবন্ধন ও সংসারের আকর্ষণ তাদের আর থাকে না।

তখন স্রষ্টার দিকেই নিবিষ্ট থাকে তাঁদের ধ্যান-জ্ঞান-চৈতন্য। স্রষ্টার নৈকট্যপ্রাপ্ত মানুষদের আধ্যাত্মিক শক্তি বুঝা কঠিন। তাদের অনেকে আবার সমাজের চোখে পাগল। ইলমে তাসাউফে বা সুফিবাদে এই পাগলদেরকে বলা হয় স্রষ্টার মাজ্জুব ওলি।

এমন একজন মাজ্জুব ওলি রাজধানী শহর ঢাকা মোহাম্মদপুরের হায়দার শাহ বা হায়দার বাবা। অনেকেই তাঁকে দেখেছেন। বেঁটেখাটো একজন লোক। উচ্চ শিক্ষিত ও মেধাবী ছিলেন। ঢাকার কোন এক ব্যাংকের কোন বড় পদে চাকরিও নাকি করতেন। আল্লাহ তাঁর ক্বলবে বিশেষ একটি পরিবর্তন এনে দেন। তারপর থেকে তিনি পাগল হয়ে যান।

হায়দার বাবার রুহের মধ্যে আল্লাহ কোন একটা শক্তি দিয়েছিলেন, যার কারণে মানুষ তাঁকে মানতো, তাঁর পিছনে হাঁটতো, তাঁর কাছে বসে থাকতো, তাঁর ইশারা-ইঙ্গিত ফলো করতো। মোহাম্মদপুরে এক বাড়ির মালিক বাসার নিচতলাটি তাঁর জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন।

এটাতো ঠিক যে, জাগতিক সুখভোগের আকাঙ্ক্ষা তাঁর ছিলো না ও তিনি নির্লোভ ও নির্লিপ্ত ছিলেন। আর এটিই হলো আল্লাহর ওলি হওয়ার প্রথম সোপান। প্রবাদে আছে, ‘দেশ না ছাড়লে দেশ মিলে না’। জাগতিক মায়ার দেশ ছেড়ে স্রষ্টার দিকে মনোনিবেশ হয় বলেই তাঁরা আল্লাহর বন্ধু।

পৃথিবীতে এমন অসংখ্য মাজ্জুব ওলি, মুনি, ঋষি, দরবেশ ছিলেন ও রয়েছেন। স্রষ্টার পাগলদের সাথে দুনিয়ার পাগলদের তুলনা চলে না। সাধারণ পাগলরাও বিনা হিসাবে পার হতে পারবেন। আর স্রষ্টার পাগলদের রহস্যপূর্ণ জীবন দুনিয়া-আসক্ত মানুষদের পার্থিব জীবনের মোহমায়া ত্যাগ করে চলার পথ দেখায়।

স্রষ্টার কাছে তাদের মর্যাদা অনেক উঁচু। এমন ওলির সন্ধান পেলে, তাঁদেরকে বিশ্বাস করে সম্মান করলে, ভালোবাসলে ও তাঁদেরকে বুঝার চেষ্টা করলে স্রষ্টার অনেক গোপন রহস্য উপলব্ধি করা যায়।

মাজ্জুব ওলিদের অনেক কারামতি বা অলৌকিক ঘটনার কথা কিতাবে লেখা আছে। অনেক ঘটনা আমাদেরও জানা আছে। অনেক ঘটনার সাক্ষী আমরা নিজেরাও।

ইসলামি পরিভাষায় নবীদের সাথে সংঘটিত অলৌকিক ঘটনাকে বলা হয় ‘মৌজেজা’। আর ওলিদের অলৌকিক ঘটনাকে বলা হয় ‘কারামতি’। নবীদের প্রতি ঐশ্বরিক প্রত্যাদেশকে বলা হয় ‘ওহি’। ওলিদের প্রতি স্বপ্নযোগে প্রেরিত প্রত্যাদেশকে বলা হয় ‘ইলহাম’।

নবী মোহাম্মদ বলেছেন, “সাবধান! মানুষের শরীরে একটি মাংসপিণ্ড আছে, যা ভালো হলে, সমস্ত শরীর ভালো হয়ে যায়, আর তা খারাপ হলে, সমস্ত শরীর খারাপ হয়ে যায়। নিশ্চয়ই সে মাংসপিণ্ড হলো ক্বলব।”

দেখা যাচ্ছে- স্রষ্টার কাছে মানুষের পোষাক-আসাক, উঠাবসা, অঙ্গভঙ্গি, মুখের কথা, উপবাস, টুপি-দাঁড়ি-জোব্বার প্রাধান্য নেই। তিনি বান্দার ক্বলব বা অন্তরকে দেখেন। ক্বলব বা হৃৎপিণ্ড পরিশুদ্ধ হলে, দেহ পরিশুদ্ধ হয়ে যায়।

রাসুল আরো বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে, যাঁদের পোষাক-আসাক এলোমেলো, চুলগুলো উস্কোখুস্কো, তাঁরা তোমাদের দরজা থেকে প্রায়ই বিতাড়িত হয়। কিন্তু তাঁরা যদি আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ তাহা তৎক্ষণাৎ কবুল করেন।”

মায়ার সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া আল্লাহর পাগলদের অবহেলা ও উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই। পরকালে বিচারক হিসেবে আল্লাহতায়ালা আহাদুল কাহার রূপে অবস্থান করবেন। সে দিন আল্লাহর কাছে হিসাব দেয়ার পরেই ভালো-মন্দ জ্ঞান ও বিবেকসম্পন্ন মানুষদের স্বর্গ-নরকের ফয়সালা হবে।

আমাদের অন্তর জানে- আমরা অপরাধী। একান্ত মনে ভাবলে নিজেরাই বুঝতে পারি যে, আমরা পাপী। তাই সেই কঠিন নিদানের দিন হিসাব দিয়ে পার হওয়ার আশা করা বোকামিপ্রসূত অহংকার ছাড়া আর কিছুই না। উল্লেখ্য যে, পাগলরা হিসাবের কঠিন অবস্থা থেকে অবকাশপ্রাপ্ত। তাঁরা শরিয়ত-শাস্ত্রের সকল বিধি-নিষেধ থেকে মুক্ত এবং বিনা হিসাবে মুক্তিপ্রাপ্ত।

স্রষ্টাকে চেনার পথ হলো আত্মরহস্য সন্ধান বা নিজেকে জানা। হাদিস শরীফে আছে, “মান আরাফা নাফসাহু, ফাকাদ আরাফা রাব্বাহু।” যে নিজেকে চিনতে পেরেছে, সে তার প্রভুকে চিনতে পেরেছে।

মানুষের ভেতরেই গোপনে তার প্রভু বিরাজমান। ইসলামে সে গোপনটাকে বলা হয় বাহাত্তর হাজার পর্দা। স্রষ্টা স্বয়ম্ভু। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তাঁকে কেউ সৃষ্টি করেন নি। তিনি স্বাধীন। তিনি ইচ্ছাময়। যাকে ইচ্ছা, তার কাছেই তিনি নিজের রহস্য উন্মোচন করেন।

নবী মোহাম্মদ বলেছেন, “আমি হলাম জ্ঞানের শহর, আলী তার দরজা।” তার মানে রাসুলের কাছে আল্লাহর জ্ঞানের যে রহস্য খোলা ছিলো, সে রহস্যের শহরে আলীর মাধ্যমেই পৌঁছাতে হবে। হাদিসে কুদসিতে আছে, “কুলুবুল মুমিনিন আরশিল্লাহ।”

আল্লাহর সান্নিধ্যপ্রাপ্ত মুমিনদের অন্তরেই আল্লাহর আরশ বা সিংহাসন। যাদের ক্বলবে আল্লাহর আরশ, আল্লাহ তাদের অন্তরেই বাস করেন। আল্লাহর এই গোপন মহিমার সাগরে ডুবে গিয়ে ফানা বা আত্মহারা হয়েই মনসুর হাল্লাজ “আনাল হক” বা আমিই সত্য বলেছিলেন।

ধ্যানমগ্ন অবস্থায় মনসুর হাল্লাজ যখন স্রষ্টার সাথে মিশে যেতেন, তখন মনসুরের মধ্য থেকে স্রষ্টাই ‘আনাল হক’ বলতেন। কিন্তু শরীয়তের বিচারে মনসুরকে কতল করে, তার দেহ জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছিল। মজার ব্যাপার হলো, জ্বলন্ত অঙ্গার থেকেও, ছাই থেকেও পরে “আনাল হক” শব্দ ভেসে আসছিলো। হযরত ফরিদুদ্দিন আত্তার (র) লিখিত তাযকিরাতুল আউলিয়া কিতাবে মনসুর হাল্লাজ গ্রন্থে এসব ঘটনা উল্লেখ আছে।

ওয়ায়েস করনীর কথা নবীজির হাদিসে উল্লেখ আছে। তিনি নবীপ্রেমিক পাগল ছিলেন। তায়েফবাসীর পাথরের আঘাতে নবীর মুখ থেকে একটি দাঁত পড়ে যাওয়ার কথা শুনে, নবীপ্রেমের আবেশে ওয়ায়েস করনী একে একে নিজের মুখের সব দাঁত তুলে ফেলেছিলেন।

সাধারণ চোখে দেখতে গেলে কত বড় বদ্ধ উন্মাদের কাজ! কিন্তু এই নবীউন্মাদই স্রষ্টার বিশেষ পেয়েছিলেন। তাঁর ওসিলায় আল্লাহ নবীজির অনেক গুনাহগার উম্মতের গুনাহ মাফ করেছেন। নবীজি তাঁর পরিধানের জামজোড়া ওয়ায়েসকে দেয়ার ওসিয়ত করে গিয়েছিলেন।

ওমর (রা) তাঁর খেলাফতের আমলে হযরত আলী (রা) কে সাথে নিয়ে গিয়ে অনেক খুঁজে তারপর পাগল ওয়ায়েস করনীর সন্ধান পেয়েছিলেন। জামাজোড়া তাঁকে পৌঁছে দিয়েছিলেন। ওয়ায়েস করনীর সাথে কথা বলে, তাঁর নবীপ্রেম দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন।

নবীজির সাথে তাঁর কোনদিন দেখাই হয় নি, অথচ নবীজির দুচোখের ভ্রূ জোর ছিলো, না ফাঁক ছিলো, তাও ওয়ায়েস করনী জানতেন। অথচ ওমর জানতেন না। হযরত ওমর আফসোস করে সেদিন তার খেলাফতিও বিলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।

স্রষ্টার সন্ধানে পথে নেমে যারা সাধনায় আত্মনিয়োগ করেছে, তারাই সাধক। সে পথে কে কতটুকু সিদ্ধ, সে বিচার করা সাধারণ মানুষের সাধ্য নয়। সেখানে আশেক-মাশুকের খেলা চলে। মাশুক কথা কয়, ইশারা দেয়, লুকোচুরি খেলে, কিন্তু দেখা দেয় না। লালন সাঁইজি বলেছেন-

“কে কথা কয় রে- দেখা দেয় না!
নড়ে চড়ে হাতের কাছে,
খুঁজলে জনম ভর মেলে না।”

আবার মহর্ষি মনোমোহন বলেন-

“ধরা দেবে বলে, মনে দিয়ে আশা,
ঘর ছাড়ায়ে তোমার চুপি চুপি হাসা!”

স্রষ্টার অপরূপ রহস্যের আলোতে যাদের অন্তর কিছুটা হলেও আলোকিত হয়েছে, বাকি জীবন তারা সে আলোই আরও খুঁজে বেড়ায়। জাগতিক রূপ-রস-গন্ধ তখন তাঁদের আর আকর্ষণ করতে পারে না।

নবীজি বলেছেন, ‘দুনিয়ার ভালোবাসাই সমস্ত পাপের উৎস।” অথচ বিশ্বের প্রায় সব মানুষ পার্থিব স্বার্থের নেশায় পাগলের মতো ছুটে চলেছে। রূপের নেশা, গুণের নেশা, ধনের নেশা, জনের নেশা, মানের নেশা- বিচিত্র এ নেশার জগৎ।

এ নেশাখোরের দুনিয়ায় যেন সবাই মাতাল হয়ে আছে। স্বার্থের নেশায় সবাই মাতোয়ারা। বিচিত্র রূপে স্বার্থ মানুষের সামনে আসে। নিজের কামনা-বাসনা রূপে, স্ত্রী-পুত্র-কন্যা রূপে। এসব মানুষের মালিকের কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। মানুষ তখন দুনিয়াদারি মগ্ন হয়ে যায়। কিন্তু ভাবুক মন এ বন্ধনগুলো বুঝতে পারে। হাসন রাজা বলেছেন-

“স্ত্রী হইলো পায়ের বেড়ি, পুত্র হইলো খিল,
কেমনে করিবা হাসন বন্ধের সনে মিল।
স্ত্রী পুত্রের আশায় রইলা ভবেতে মজিয়া,
মরণ কালে স্ত্রী পুত্র না চাইবো ফিরিয়া।”

স্বার্থান্ধ এই জগৎ সংসারকে নেশাখোরদের একটি বারের সাথে তুলনা করে বাউল কবি রাজ্জাক দেওয়ান বলেছেন-

“কত মাতাল বৈতাল চিরকাল আমার উপর করে অত্যাচার।
মদ খাওয়া দোকানে চাকরি চাই না আর।”

আসলে গোটা পৃথিবীটাই যেন স্বার্থপরদের পাগলাগারদ কিংবা নেশাখোরদের আস্তানা। এখানে যেন কেউ কারো নয়, সবাই নিজের। জগত যতই আখেরি জামানার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষ ততোই পারলৌকিক বিশ্বাস-ভাবনা-কর্ম বাদ দিয়ে জাগতিক সুখের আশায় আরো বেশি মত্ত হয়ে উঠছে।

তবে এমন কঠিন পরিস্থিতিতেও সংখ্যায় কম হলেও যুগে যুগে কিছু নিঃস্বার্থ ও মহান মানুষের আবির্ভাবও ঘটে। তাঁরা কোটিতে গুটি। তাঁদের দুনিয়াভি কোন ধান্ধা থাকে না। ধনের-মানের-রূপের-গুণের কোন নেশাই তাঁদের থাকে না।

তবে হ্যাঁ, অন্য একটি নেশা তাঁদের আছে। মাশুকের প্রেমের নেশা। যে নেশায় তাঁরা সর্বক্ষণ বুঁদ হয়ে থাকেন। তারা স্রষ্টার মারেফত সন্ধানী। কিন্তু তথাকথিত সামাজিক সুস্থ মানুষরা এই মহান ব্যক্তিদের পাগল ভাবে। সব সময়ই তারা এমন ভেবেছে।

প্রচলিত ও গতানুগতিক প্রথার বাইরে নতুন ধ্যান-ধারণা নিয়ে যখনই যাঁরা আবির্ভূত হয়েছেন, সমাজ তাঁদের পাগলই ভেবেছে। ধর্ম প্রবর্তক ও মনীষীদের জীবনী খুঁজলে এমনই দেখা যায়। আগেই বলেছি- দয়াল নবীজিকেও তায়েফবাসীরা পাগল বলে ঢিল ছুঁড়ে রক্তাক্ত করেছিলো।

সকল ধর্মেই জগত-সংসারের আসক্তি থেকে মুক্ত হতে বলা হয়েছে। নবীজি দুনিয়াটাকে মুমিনের জন্য জেলখানা বলেছেন। আল্লাহর মাজ্জুব ওলিরা ভোগ-বিলাসী দুনিয়াদারির সাথে নিজেকে মিলাতে পারেন না। তাই এই জেলখানা থেকে তারা বিচ্ছিন্ন বা আলগা হয়ে থাকেন আর গোপনে প্রভুকে সন্তুষ্ট করার কাজ করেন। তাদের কাছ থেকে কিছু মানুষ মানুষ ত্যাগের শিক্ষা নেয়।

কিন্তু কামিনী-কাঞ্চনে আসক্ত অধিকাংশ মানুষ তাদের চিরাচরিত ভোগ-বিলাসের পথ ছেড়ে ত্যাগ-তিতীক্ষার পথে আসতে চায় না। ভাবে, আমরা যেমন আছি- ভালোই আছি। সত্য বলছি, মিথ্যা বলছি। বৈধ-অবৈধ পথে উপার্জন করছি। হালাল খাচ্ছি-হারাম খাচ্ছি। নিজনারী-পরনারীর প্রতি সুদৃষ্টি-কুদৃষ্টি দিচ্ছি। এসব আমরা ছাড়তে পারবো না।

কিন্তু যারা সৌভাগ্যবান, তারা সত্য উপলব্ধি করে সংসারে থাকলেও নারী-বাড়ি-টাকা-কড়ি বা ভোগ-বিলাস থেকে মুক্ত থাকতে চান। আর আল্লাহ যাঁদের ইচ্ছা করেন, তাঁদের জাগতিক মায়ার বাঁধন খুলে দিলে তারা মাওলার এশকে পাগল হয়ে যান।

তখন সমাজ-নমাজ ও জগতের নিয়ম-কানুন থেকে তাঁরা মুক্ত। মুসা (আ) এর আমলে খোয়াজ খিজিরের কথা কোরানে উল্লেখ আছে। এই খিজির (আ) আল্লাহর একজন মাজ্জুব ওলি/নবী ছিলেন। তিনি যে কর্মগুলো করেছিলেন, সাধারণ দৃষ্টিতে তার সবই ছিলো উন্মত্ত পাগলের।

শিশুকে আছাড় দিয়ে মেরে ফেলা, নৌকার তলা ফুটা করে দেয়া, সাধারণ দৃষ্টিতে এগুলো পাগলের কাজ ছাড়া আর কি? অবশ্য তাঁর এসব কর্মের পেছনে যে মানবজাতির বৃহত্তর কল্যাণ নিহিত ছিলো, তা খিজিরের মুখ দিয়েই আল্লাহ পরে প্রকাশ করেছেন।

এখনও পৃথিবীতে খাজা খিজিজের অনুসারী আল্লাহর মাজ্জুব ওলি আছেন। পরিশেষে বলবো, খিজির (আ) এর রহস্যময় কর্মের হাকিকত একজন নবী হয়ে যেখানে মুসা বুঝতে পারেন নি, সেখানে আমাদের সাধ্য কি আল্লাহর মাজ্জুব ওলিদের মর্ম বুঝা!

আল্লাহর এই প্রেমিকরা, এই মাজ্জুব ওলিরা প্রাকৃতিক ফিতরাতের ধর্মে অবস্থান করেন এবং হাকিকতের রাজ্যে মুক্ত বিহঙ্গের মতো ঘুরে বেড়ান।

খিজির (আ) এর সম্পর্কে একটি বিষয় উল্লেখ করে লেখাটি শেষ করছি: খোয়াজ খিজির অর্থ চির সবুজ বা চির জীবন্ত। তাঁর জন্ম-মৃত্যুর কথা কোথাও উল্লেখ নেই। তাই কোরানের অনেক তফসিরকারের মতে, তিনি এখনও জীবিত আছেন, এবং কেয়ামত পর্যন্ত জীবিত থাকবেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!