ভবঘুরেকথা
বাউল গান সাধু ফকির বয়াতী

জানব তুমি কেমন গড়নদার

ওরে মন, জানব তুমি কেমন গড়নদার,
কেমন স্বর্ণকার।
ওরে গড়ে দে তুই উপাসনার সোনার অলংকার।।

নিষ্ঠা-নিক্তিতে ধরে সোনা জমা নে ওজন ক’রে,
দেনা-পাওনা ষোলআনা সূক্ষ্মের উপরে।
ছেড়ে খুঁটি-নাটি, ময়লা-মাটি, গলিয়ে খাঁটি কর এবার
আগে জ্বাল বিবেক-হুতাশন,
ষড়রিপু-কয়লা তাতে কর রে ক্ষেপণ।
তাতে সাধুসঙ্গ-সুবাতাস দে,
আঁচ হবে তোর চমৎকার।।

আমি নিষেধ করে দিতেছি দোহাই-
যেন অসৎসঙ্গ-তামা-দস্তা খাদ দিওনা ভাই।
গলিয়ে আঁচে, ভাবের ছাঁচে ঢেলে তারে করবি তার।।

সোনা কি অমনি গলে শুধু অনলে,
তাতে দে অনুরাগ-সোহাগার বাগ যতনে ফেলে।
গড়ে দে আমার চমৎকার কৃষ্ণভক্তি-রত্নহার।।

ব্রজের ভাব সুনির্মল,
তাতে কেটে দে ডায়মল,
গোপী-ভাবের ঝালট দিলে করবে ঝলমল।
দিয়ে শুদ্ধরতি, গাঁথলে মতি,
হবে অতি সুবাহার।।

অনন্তের অভিপ্রায়,
সে হার পরতে চায় গলায়,
কানাকড়ি হাতে নিয়ে হাতী কিনতে যায়।
ওরে কোটি জন্মের পূণ্যের সম্বল তুল্য হয় না মূল্য যায়।।

…………………..
অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থ থেকে এই পদটি সংগৃহিত। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে প্রথম প্রকাশিত এই গ্রন্থের বানান অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। লেখকের এই অস্বাধারণ সংগ্রহের জন্য তার প্রতি ভবঘুরেকথা.কম-এর অশেষ কৃতজ্ঞতা।

এই পদটি সংগ্রহ সম্পর্কে অধ্যাপক উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয় লিখেছেন- অন্তরের (অনন্ত গোঁসাই) দীর্ঘ কয়েকটি গান বাংলার বাউল-মহলে বিশেষ পরিচত। অনন্ত কোথাকার লোক, তাহা জানিতে পারি নাই। তবে রচনা-রীতি ও দীর্ঘ সাঙ্গরূপক ব্যবহার দৃষ্টে মনে হয়, ইনি খুব সম্ভব রাঢ়ের বাউল।

…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন-
voboghurekotha@gmail.com

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!