ভবঘুরেকথা
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেব

শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : দুই

নামজপকালীন মনোভঙ্গী

অপর একটী বালকের প্রশ্নের উত্তরে শ্রীশ্রীবাবামণি বলিলেন,নামজপের সময় দুটি কথা বিশেষ ভাবে মনে রাখ্ বে। একটী হচ্ছে এই যে, তোমাকে প্রাণপণে বিশ্বাস কত্তে হবে যে, নাম অব্যর্থ-শক্তি-সম্পন্ন বস্তু, উচ্চারণ মাত্রেই নাম ফলপ্রদ, অগ্নি যেমন সর্ব্ববস্তু দহন করে, নামও তেমন সর্ব্বপাপ দহন করে, সলিল যেমন পিপাসা নিবারণ করে, নামও তেমন সকল লালসা নিবৃত্ত করে।

বরং কোনো কোনো অবস্থায় অগ্নির দাহিকাশক্তি ক্রিয়া-শক্তিহীন হয়, রুগ্ন রসনায় জল পিপাসা নিবারণে অসমর্থ হয়, কিন্তু সর্ব্বাবস্থায় সর্ব্বক্ষেত্রে ভগবানের নাম তার অমোঘ শক্তি বিস্তার করে। এই বিষয়ে সুতীব্র বিশ্বাস অন্তরে পোষণ করে নাম-জপে বস্ বে।

আর, নামজপ করার কালে ভাবতে থাক্ বে, মঙ্গলময় পরমেশ্বর যেন তোমার সাক্ষাতে উপস্থিত, তুমি যতবার তাঁর পবিত্র নাম ধরে তাঁকে ডাক্ ছ, ততবার তিনি তোমার প্রতি প্রেমময় দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন, তোমার প্রত্যেকটী ডাকের সাথে সাথে তিনি স্নেহ-কোমল আশিস তোমার মস্তকে বর্ষণ কছেন।

এই বিশ্বাস দৃঢ় রেখে নাম জপ কর্ব্বে। অনুভব কত্তে পার আর না পার, তিনি যে সত্যি অতি নিকটে বসে আছেন, এ ধারণা মন থেকে শিথিল হতে দিও না। তাহলেই অল্প সময়ে বেশী উন্নত হতে পার্ব্বে।

অখণ্ড-সংহিতা নবম খণ্ড
(পৃষ্ঠা নং ১৪৮ – ১৪৯)

পারিবে আমার সঙ্গে থাকিতে?

ফেনী কলেজের একটী ছাত্র নোয়াখালী শহরে প্রত্যেকটী বক্তৃতা শুনিয়াছে এবং চৌমুহনীতেও সঙ্গে সঙ্গে আসিয়াছে। সে ভোরের ট্রেণে ফেনী রওনা হইল। কারণ, আজ তাহার কলেজ খুলিবে। যাইবার সময় বলিলেন,- ইচ্ছা করে, বছরের পর বছর আপনার সঙ্গে সঙ্গে ঘুরি।

শুনিতে এত ভাল লাগে যে, কি বলিব! সব জায়গায় একই কথা বলেন, অথচ আমার মনে হয়, আনকোরা একটী নূতন বক্তৃতা দিলেন। আপনার সঙ্গে যদি সারা জীবন থাকিতে পারিতাম, তবে ধন্য হইতাম।

শ্রীশ্রীবাবামণি অট্টহাস্য করিয়া বলিলেন,- আমার সঙ্গে সারা জীবন থাকতে চাও? এ’ত এক অবাস্তব কল্পনা। প্লাটফর্ম্মে সারারাত্রি মশার কামড় খেতে? পারবে চব্বিশ ঘন্টা আট চল্লিশ ঘন্টা উপবাসী থেকে নোংরা প্লাটফর্ম্মের এক কোণে ছাতা ধ’রে বাতাস নিবারণ ক’রে ষ্টোভ জ্বালিয়ে খিচুড়ী রান্না ক’রে খেতে?

কলাপাতায় খিচুড়ী নামিয়ে খেতে যাবে এমন সময় আধ-মরা ক্ষুধার্ত্ত নেংটি কুকুর সতৃষ্ণ চোখে তোমার দিকে তাকালে পারবে তুমি সে খিচুড়ী গিলতে? অপরিচিত লোকদের মধ্যে প’ড়ে গিয়ে পারবে সন্দিগ্ধ দৃষ্টির পাহারায় অবস্থান কত্তে?

আমার সঙ্গে চললে গৃহস্থরা ভাববে তুমি বিপ্লবী, অতএব বিপজ্জনক লোক, আর পুলিশেরা ভাববে তুমি রাজদ্রোহী, সুতরাং গ্রেফতারের যোগ্যপাত্র। অন্ততঃ লেলিয়ে দেওয়া প্রভুভক্ত কুকুরেরা কয়েকটা তোমার পিছনে লেগে থাকবেই, পারবে এই সকল সইতে? আমি ত’ মনে করি, পারবে না।

তারপরে ছেলেটীকে বুকে জড়াইয়া ধরিয়া শ্রীশ্রীবাবামণি বলিলেন,-রাগ ক’রো না বাছা, পুলিশের লোকেরাও কুকুর নয়, আমরাও শূকর নই। তারা পেটের দায়ে চাকরী করে। আমরা নিজেদের পশুত্ব নিবারণের উদ্দেশ্যে ঘোঁৎ ঘোঁৎ ক’রে ময়লা ঘাটি। যার যা কর্ত্তব্য, তাকে তা’ পালতেই হবে।

পুলিশের লোকেরাও দেশকে ভালবাসে, কিন্তু যার নূন খায়, তার কাছে বেইমান হ’তে পারে না, হওয়া উচিতও নয়। আমিও আমার দেশকে ভালবাসি কিন্তু পারত পক্ষে রাজনীতি করি না। আমি জানি, চরিত্র-আন্দোলনই আসল আন্দোলন। এই আন্দোলনের সফলতা দিয়েই দেশের ভাগ্য নির্ণীত হবে।

অখণ্ড-সংহিতা ত্রয়োবিংশ খণ্ড
(পৃষ্ঠা নং ৩০২ – ৩০৪)

প্রকৃত স্বদেশ

প্রকৃত প্রস্তাবে এই জগতে আমরা সকলেই বিদেশী। এই জগৎ আমাদের কাহারওই স্বদেশ নহে! সীমাবদ্ধ একটুখানি ভূখণ্ডের অংশ-বিশেষে ভূমিষ্ঠ হইয়া আমরা নিজেদিগকে সেই নির্দ্দিষ্ট ভূখণ্ডের স্বদেশী এবং জগতের অপর সকল অংশের বিদেশী বলিয়া জ্ঞান করিতেছি।

কিন্তু আমাদের সকলের প্রকৃত স্বদেশ শ্রীভগবৎপাদপদ্ম। সেই একমাত্র স্বদেশ হইতে সকলে এই পৃথিবীর বিদেশ-যাত্রা করিয়া আসিয়াছি এবং সকলেই এই পৃথিবীর সাময়িক সফর শেষ করিয়া পুনরায় নিজেদের স্বদেশে ফিরিয়া যাইব।

সেই স্বদেশে ফিরিয়া গেলে দেখিতে পাইব যে, কেহই আমরা পরস্পর হইতে পর ছিলাম না কিন্তু অল্পকালের জন্য বিদেশে আসিয়া বিদেশেরই একটা ভাড়াটে বাড়ীকে স্বদেশ স্বজ্ঞানে প্রমত্ত হইয়া একজন অপর জনের সহিত লাঠালাঠি কাটাকাটি করিয়াছি।

যাহারা অতীত ভাবে না, ভবিষ্যৎ দেখে না, তাহারা এভাবেই অসার এবং অস্থায়ী প্রবাসকে স্বদেশ বলিয়া জ্ঞান করতঃ শুধু দ্বেষ, হিংসা, ঈর্ষ্যা, হত্যা এবং আত্মহননের অনুশীলন করিতেছে। যত চৌর্য্য, যত দস্যুতা, যত অনধিকার প্রবেশ, যত উৎপীড়ন, যত অনাচার, যত অবিচার সবই জগতে এই এক মহাভ্রান্তি হইতে সৃষ্ট হইতেছে।

তোমরা জগতের একটী ব্যক্তিকেও বিদেশী বলিয়া ভাবিও না এবং সযত্নে, ধৈর্য্যসহকারে এই প্রকৃত স্বদেশের সংবাদ সকলের কর্ণগোচর করাও। প্রত্যেকটী পুরুষ, প্রত্যেকটী নারী নিজ নিজ স্বদেশের ভাবনায় অধীর হউক এবং মিছে ছেলেখেলা-

স্বরূপে যে প্রবাস-বাসকে গ্রহণ করিয়াছে, তাহাকে নিতান্ত অনিত্য জানিয়া নিত্যের প্রতি অভিনিবেশ-

শীল হউক। সকলের দৃষ্টি প্রকৃত স্বদেশের প্রতি আকর্ষণ কর এবং জানিও, ইহাই তোমাদের জীবনের এক অতি মহৎ কর্ত্তব্য, এক পরম-করণীয়।”

অখণ্ড-সংহিতা ত্রয়োদশ খণ্ড
(পৃষ্ঠা নং ২১৪ – ২১৫)

জীবন-গঠনের শ্রেষ্ঠ উপায়

ময়মনসিংহের জনৈক যুবককে শ্রীশ্রীবাবামণি লিখিলেন,-

মনে রাখিও, তপস্যাই জীবন-গঠনের শ্রেষ্ঠ উপায়। বহু তর্ক, আলোচনা বা আন্দোলনে নহে, প্রয়োজনাতিরিক্ত ঝুড়ি ঝুড়ি গ্রন্থ অধ্যয়নে নহে, তীর্থের পর তীর্থ বৃথা পর্য‌টনে নহে, গাঁজা টিপিবার জন্য সাধুনামধারী পুরুষদের সঙ্গলাভে নহে, ভগবানের অমৃতময় নাম অনুক্ষণ নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে স্মরণেই জীবন গঠিত হয়, চরিত্র গঠিত হয়, চিত্তবৃত্তির অযথা কোলাহল নিবৃত্ত হয়, প্রাণ সংযত হয়, হৃদয় জুড়িয়া পবিত্র প্রেমের বিমল বন্যা প্রবাহিত হয়।

অখণ্ড-সংহিতা সপ্তম খণ্ড
(পৃষ্ঠা নং ২৮৩ – ২৮৪)

মন্ত্র লইয়া সাধন না-করা

প্রাতে কোনো কাৰ্য্য-ব্যপদেশে শ্রীশ্রীবাবামণি গ্রামের পশ্চিমাংশে কোনও গৃহে আসিয়াছেন। এই গৃহের একটী যুবক অনেকদিন হয় সাধন নিয়াছেন কিন্তু সাধন করেন না। শ্রীশ্রীবাবামণি তাঁহার সহিত কথা-প্রসঙ্গে স্বরচিত কয়েকটী পয়ার বলিলেন,-

মন্ত্র লয় কিন্তু তার না করে সাধন,
ব্রত লয় কিন্তু তাহা না করে পালন,

বীজ কিনে কিন্তু তারে না করে বপন,
গ্রন্থ কিনে কিন্তু নাহি করে অধ্যয়ন,
মন্দির গড়িয়া তাহে না করে অর্চ্চনা,
গাভী কিনি’ তারে নাহি দেয় তৃণ-কণা,

বিবাহ করিয়া স্ত্রীকে না করে রক্ষণ,
বৃক্ষ রুপি’ নাহি করে সলিল-সিঞ্চন,
মূলধন লভি’ নাহি করে ব্যবসায়,
অলক্ষিতে সেই জন অধঃপথে যায়।

অখণ্ড-সংহিতা সপ্তম খণ্ড
(পৃষ্ঠা নং ২৭২)

সংসার ও সন্ন্যাস

শ্রীশ্রীবাবামণি বলিলেন,-মনুষ্যত্বের পথে চঙ্ক্রমণ কত্তে কত্তে মানুষ একদা দুইটী আলাদা আলাদা দিঙ্ নির্দ্দেশ পেল। একটী হচ্ছে সংসারের, অপরটী হ’ল সন্ন্যাসের। প্রথমটীর দৃষ্টান্ত উপনিষদের ব্রহ্মবিদ্-ঋষিরা, রাজর্ষি-জনক, নানক, কবীর, তুকারাম প্রভৃতি।

দ্বিতীয়টীর দৃষ্টান্ত শুকদেব, সনক, সনাতন, স্যনন্দন,নারদ, বুদ্ধ, যীশু, শঙ্করাচার্য্য, বিবেকানন্দ প্রভৃতি। সংসারাশ্রমীরা সাংসারিক কর্ত্তব্যগুলিকে ঈশ্বর-ভজনের অনুকূল বা উপাঙ্গ রূপে দিব্যায়িত কর্ব্বার চেষ্টা করতে লাগলেন আর সন্ন্যাসাশ্রমীরা, দাঁড়ি-পাল্লার কোন দিকে কখন ওজন বেশী হয়, সেই দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখার দায়িত্ব সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য ক’রে জয়গুরু ব’লে ত্যাগের রথে আরোহণ করলেন।

এ রথ ডাইনে আর বামে হেলবে না, দুলবে না। এ রথ থার্ম্মোমিটারের পারদের দিকে তাকাবে না, এ রথ ঘড়ির কাঁটায় ঘন্টা গণনা কর্ব্বে না, এ রথ সম্মুখেই চলবে অবিরাম, অবিশ্রাম। লক্ষ্য লাভের পূর্ব্বে এ রথ পথে পথে থামবে না, বৃক্ষচ্ছায়া দেখে দুদণ্ড জুড়াবার চেষ্টা কর্ব্বে না, সুমিষ্ট সুশীতল পানীয় দেখে রসনা বাড়াবে না, অবিদ্যার সঙ্গে তার আপস নাই।

সংসারাশ্রম আর সন্ন্যাসাশ্রম একটী ব্যক্তির জীবনে যুগপৎ চলতে পারে না। একটায় ইতি না দিলে অপরটা চালান যাবে না। কিন্তু সমষ্টির জীবনে কিছু লোক সংসারী থাকবে, কিছু লোক সন্ন্যাসী হবে। কেননা একটা আশ্রম অপর আশ্রমের অনুপূরক। সন্ন্যাস যা দিতে পারে সংসারাশ্রম তা দিতে পারে না।

রামকৃষ্ণ জগৎকে উপহার দিলেন বিবেকানন্দ। কিন্তু কোনো সন্ন্যাসী সমাজকে একটী পুত্র দিতে পারে না, একটী কন্যা দিতে পারে না। একটী আশ্রম যাহা দিতে পারে, অপরটী তাহা পারে না। একটী আশ্রম যাহা দিতে পারে না, অপরটী তাহা দিতে পারে। ব্যক্তি জীবনে যুগপৎ দু’টীর স্থান নাই।

সমাজ-জীবনে, সমষ্টি-জীবনে, জাতির জীবনে দুইটীরই বিশেষ প্রয়োজন আছে। যে সমাজে সন্ন্যাসীর সমাদর নাই, সে সমাজে গৃহীদের মধ্যে লাম্পট্য বাড়ে। যে সমাজে গৃহীর সমাদর নাই, সে সমাজে ভিক্ষাবৃত্তি বাড়ে। লম্পটেরা চরিত্রগত-ভাবে নৈতিকতার দিক দিয়ে সমাজের শত্রু, ভিখারীরা অর্থনৈতিক ভাবে রাষ্ট্রের শত্রু।

এদের দুটি দলের কোনটাই যাতে সমাজের শত্রু না হ’তে পারে, চারিত্ৰ-নৈতিক বা অর্থনৈতিক কোনও দিক দিয়েই যাতে শত্রুর বৃদ্ধি না হ’তে পারে, তার জন্য সুসমঞ্জস ভাবে সমাজ-মধ্যে উভয়ের স্থিতি আবশ্যক। সুতরাং সংসারে আর সন্ন্যাসে কলহের কিছু নাই।

শ্রীশ্রীবাবামণি বলিলেন,-

মূল লক্ষ্য হলেন শ্রীভগবান স্বয়ং। সংসারীরও লক্ষ্য তিনি, সন্ন্যাসীরও লক্ষ্য তিনি। ভগবান্ মাত্র একটীই আছেন এবং তিনি সমগ্র বিশ্বের প্রতিটী ধর্ম্মমতের ভগবান্।

ভগবান্ একটীর বেশী নেই ব’লেই, মুসলমানের ভগবানের সাথে হিন্দুর ভগবানের বিরোধ নেই কিম্বা ইহুদীর ভগবান্ আর আমাদের ভগবান্ বর্শা-তলোয়ার চালাচালি করেন না। মালিক মাত্র একজন, সেই একজন মালিককে পেলে সব ধর্ম্মাবলম্বীর ঈশ্বর এক হ’য়ে যায়। সুতরাং বিরোধের কোন হেতু নেই, কোন সূত্র নেই।

অখণ্ড-সংহিতা ত্রয়োবিংশ খণ্ড
(পৃষ্ঠা নং ৩০০ – ৩০২)

সর্ব্বদা অতন্দ্রিত থাক

অপরাহ্ণে আশ্রম-সমাগত কয়েকজন যুবককে শ্রীশ্রীবাবামণি নানাবিধ হিতকর উপদেশ-প্রসঙ্গে বলিলেন,- সর্ব্বদা অতন্দ্রিত থাক। নিমেষের তরেও বিস্মৃত হয়ো না যে, চতুর্দ্দিকের সহস্র মায়াজল ছিন্ন ক’রে তোমাদিগকে জ্ঞানময়, ঋতময়, প্রেমময়, আনন্দময়, জ্যোতির্লোকের সত্য আস্বাদন-লাভ কত্তে হবে।

সাধকদের মুখে সেই নিত্যানন্দধামের প্রাণারাম বর্ণনা শুনেই ক্ষান্ত থেকো না, নিজের চখে তা প্রত্যক্ষ করার জন্য প্রস্তুত হও, যত্নবান্ হও। আজ আছ বালক, তাতে কিছু ক্ষতি নেই, প্রকৃত তপস্বীর ন্যায় নিজের ভাবটীকে নির্ম্মল ও পূর্ণ বিকশিত কর্ব্বার জন্য প্রাণপণে চেষ্টান্বিত হও।

রিপুগণের উল্লাস প্রশমিত ক’রে নিজেকে তাদের করাল কবল থেকে মুক্ত করার জন্য প্রাণপণে যত্নশীল হও।

অখণ্ড-সংহিতা নবম খণ্ড
(পৃষ্ঠা নং ১৩১)

অভিমান বিসর্জ্জন দাও

চট্টগ্রাম জেলান্তর্গত আমিলাইশ-নিবাসী জনৈক পত্রলেখকের পত্রের উত্তরে শ্রীশ্রীবাবামণি লিখিলেন,-

অভিমান বিসর্জ্জন দাও। অভিমানীর উন্নতি অসম্ভব। ছোট কাজকে ছোট মনে করিও না। সকল কাজই প্রয়োজন মত তোমাকে করিতে হইবে। তুমি যদি শুধু বড় কাজগুলিই করিবে, ছোট কাজগুলি করিবে কে? নিজেকে গুণশালী এবং নেতা বলিয়া ভ্রম করিয়া অনেক ভাল ভাল ছেলে-মেয়ে নিজেদিগকে ক্রমশঃ কর্ম্মের অযোগ্য করিয়া ফেলে।

মেথরের ন্যায় পুরীষ-ভাণ্ড পরিষ্কার করিবার মত মনের বল তোমাদের থাকা চাই। কেহ কোনও কটূক্তি বা সমালোচনা করিলে তাহা নীরবে সহ্য করিবার বা একেবারে উপেক্ষায় উড়াইয়া দিবার সামর্থ্য তোমাদের থাকা চাই। কেহ তোমাকে মানিল না,

গণিল না, কেহ তোমার শ্রমের মূল্য দিল না, সেবার মর্য্যাদা রাখিল না, কেহ তোমাকে আদর করিয়া, সান্ত্বনা দিয়া উৎসাহিত করিল না, তাই বলিয়া নিজের কর্ত্তব্যে ঢিলা দিও না। জগতে কেহই কাহাকে বড় করিতে পারে না। তোমার নিজের কর্ম্ম তোমাকে বড় করিবে।”

অখণ্ড-সংহিতা ষোড়শ খণ্ড
(পৃষ্ঠা নং ৮০)

শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : তিন>>

……………..
আরও পড়ুন-
স্বামী স্বরূপানন্দের বাণী
স্বামী স্বরূপানন্দ : গুরু-শিষ্য 
স্বামী স্বরূপানন্দ : সরল ব্রহ্মচর্য্য
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ : চিঠিপত্র
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ : উপাসনা
স্বামী স্বরূপানন্দ : কবিতা/গান
স্বামী স্বরূপানন্দ : উপদেশ
স্বামী স্বরূপানন্দ : উপদেশ  দুই

শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : এক
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : দুই
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : তিন
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : চার
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : পাঁচ
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : ছয়
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : সাত
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : আট
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : নয়
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : দশ
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : এগারো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : বারো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : তেরো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : চোদ্দ
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : পনেরো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : ষোল
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : সতেরো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : আঠারো
শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের বাণী : উনিশ

…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন- voboghurekotha@gmail.com

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

……………….
আরও পড়ুন-
মহানবীর বাণী: এক
মহানবীর বাণী: দুই
মহানবীর বাণী: তিন
মহানবীর বাণী: চার
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: এক
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: এক
গৌতম বুদ্ধের বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: তিন
গৌতম বুদ্ধের বাণী: চার

গুরু নানকের বাণী: এক
গুরু নানকের বাণী: দুই
চৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী
কনফুসিয়াসের বাণী: এক
কনফুসিয়াসের বাণী: দুই
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: এক
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: দুই
শ্রী শ্রী কৈবল্যধাম সম্পর্কে
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বাণী
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ১ম খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ২য় খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ৩য় খন্ড
স্বামী পরমানন্দের বাণী: এক
স্বামী পরমানন্দের বাণী: দুই
স্বামী পরমানন্দের বাণী: তিন
স্বামী পরমানন্দের বাণী: চার
স্বামী পরমানন্দের বাণী: পাঁচ
স্বামী পরমানন্দের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: এক
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: দুই
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: তিন
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: চার
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: পাঁচ
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: সাত
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: আট
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: নয়

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!