ভবঘুরেকথা
বেদে সংশয় ও নাস্তিক্য

বেদের শিক্ষা

-দীনেশচন্দ্র সেন

এখন হইতে চার পাঁচ হাজার বৎসর পূর্ব্বে- সেই সময়ে এমন যুগ ছিল, -তোমাদের আমি সেই যুগের কথা গল্প করিয়া শুনাইব।

তোমরা হয়ত শুনিয়াছ, আর্য্যজাতি একটা মস্ত বড় জাতি। গ্রীসদেশের লোক, রোমক, ইংরেজ, ইরাণী, এবং আরও কয়েকটি জাতি প্রকাণ্ড আর্য্য-সমাজের পরিবারভুক্ত ছিল। তাহারা প্রথম কোথায় বাস করিত, সে সম্বন্ধে নানা মুনির নানা মত।

তবে তোমরা অবশ্যই জিজ্ঞাসা করিতে পার, তারা যে এক জাতির অন্তর্গত ছিল, তাহার প্রমাণ কি?

প্রথম প্রমাণ ভাষা, একশব বৎসরের কিছু পূর্ব্বে এমন একটা সময় ছিল যে ইংরেজ, গ্রীক, ইরাণী প্রভৃতি জাতির মধ্যে যে একটা রক্তের সম্পর্ক আছে, তাহা কেহ বিশ্বাস করিতেন না। খ্রীষ্টানেরা বিশ্বাস করিতেন, যে ভাষায় প্রাচীন বাইবেল লেখা হইয়াছে, সেই ভাষাই খাঁটি ঈশ্বরের ভাষা এবং পৃথিবীর অপরাপর সমস্ত ভাষা সেই ভাষা হইতে আসিয়াছে।

আদত বাইবেলী হিব্রু ভাষা হইতে সমস্ত ভাষাকে টানিয়া বুনিয়া বাহির করিবার জন্য পাদ্রী মহাশয়রা বিস্তর চেষ্টা করেন। এই ধর, যদি কেহ প্রমাণ করিতে চান যে গঙ্গা নদীটা দক্ষিণ দিকের বিন্ধ্য পর্ব্বত হইতে উৎপন্ন হইয়াছে, সে চেষ্টা যেমন বৃথা হয়, পাদ্রীদের সেই হিব্রু হইতে পৃথিবীর সমস্ত ভাষার উদ্ভব প্রমাণ করিবার চেষ্টাও তেমনই বিফল হইল।

কিন্তু সত্য যখন দেখা দেয়, তখন মিথ্যা আপনিই পলাইয়া যায়, সূর্য্যোদয়ে আঁধার থাকিবে কিরূপে? যখন সংস্কৃত ভাষার চর্চ্চা সুরু হইল, তখন পণ্ডিতেরা দেখিলেন, এই সংস্কৃতের সঙ্গে গ্রীক, রোমান, ইংরাজী, ইরাণী প্রভৃতি কতকগুলি ভাষার আশ্চর্য্য একটা মিল আছে।

কিন্তু জ্ঞাতিদের সঙ্গে আবার যেমন শত্রুতা হয়, এমন আর কাহারও সঙ্গে হয় না। ইরাণীদের সঙ্গেও আর্য্য-হিন্দুদের তেমনই একটা বিষম ঝগড়া বাঁধিয়া দুই দলে একেবারে পৃথক হইয়া গিয়াছিল। এ ঝগড়াটা কুরুপাণ্ডবের যুদ্ধের অপেক্ষাও হয়ত কম হয় নাই।

আমরা সচরাচর যে সকল কথা বলিয়া থাকি, তাহা ঐ সকল ভাষার সহিত প্রায় একরূপ প্রতীয়মান হইবে। কোনও ভাষায় পিতর, কোন ভাষায় পিটার, আবার কোন ভাষায় ‘প’ অক্ষরটা ‘ফ’ এ পরিনত হইয়া শব্দটি হইয়াছে ‘ফাদার’। এই ভাবে মাতর, ভ্রাতর, দুহিতর প্রভৃতি শব্দ সেই সমস্ত ভাষায় প্রায় একরূপ।

এই ভাবে একটি দুইটি নয়, শত শত শব্দ আবিষ্কৃত হইল, সুতরাং এ সম্বন্ধে আর সন্দেহ রইল না, যে কতকগুলি জাতি আগে এক ভাষাতেই কথা কহিত- তাহার এক পরিবারের অন্তর্গত ছিল। সুতরাং সেই সকল জাতির জ্ঞাতিত্ব প্রমাণিত হইয়া গেল। তাঁহাদের সাধারণ নাম হইল ‘আর্য্য’।

এই আর্য্যগণ এক সময়ে এক ভাষায় কথা কহিতেন। সে ভাষা ঠিক কি ছিল তাহা বলা যায় না- তবে ঋগ্বেদের যে ভাষা তাহাই সেই ভাষার সকলের অপেক্ষা পুরাতন মূর্ত্তি।

আর্য্য পরিবার শুধু এক ভাষায় কথা কহিতেন না, তাহাদের দেবদেবীর নামও এক ছিল। সুতরাং একই মন্দিরের জন্য তাঁহারা এক সময় নৈবেদ্য সাজাইতেন। হিন্দু-আর্য্যগণের প্রাচীন আকাশ-দেব “দ্যু”, গ্রীকদের “জিয়াস” ও রোমকদিগের “দ্যু-পিতর” বা “জুপিটর”, জার্ম্মানদিগের “জিও” একই দেবতা।

হিন্দু-আর্য্যগণের “বরুণ” ও গ্রীকদিগের “ইয়রর্ণস” এক। এইরূপ বহু দেবতার নামের ঐক্য আর্য্যগণের ভিন্ন ভিন্ন শাখা খুঁজিলে পাওয়া যাইবে।

কোন্‌ যুগে যে আর্য্যগণের বৃহৎ পরিবার নানা শাখায় বিভক্ত হইয়া পরস্পর হইতে দূরে যাইয়া পড়ে তাহা বলা শক্ত। কিন্তু ইহাদের আচার, ব্যবহার, পূজা ও সামাজিক ব্যবস্থাগুলি প্রাচীন পুস্তকাদি হইতে আলোচনা করিলে অনেক আশ্চর্য্য রকম মিল ধরিতে পারা যাইবে।

আর্য্য-হিন্দুগণের সর্ব্বাপেক্ষা নিকটতম জ্ঞাতি ইরাণীরা; তাঁহাদের প্রচীন শাস্ত্রের নাম ‘জন্দ অবস্থা’- এই “অবস্থা” ও ঋগ্বেদের ভাষা প্রায় একরকমের, এবং এই দুয়েরই উপাস্য দেবতাদের নামও এক রকমের। আর্য্য-হিন্দুর বরুণ, জেন্দ-অবস্থায় বরণ; অবস্থায়ও “বায়ু” দেবতার নাম পাওয়া যায়।

আর্য্য-হিন্দুর “মিত্র” জেন্দ-অবস্থায় “মিথ্র”। তোমরা এ সকল তথ্য পরে আলোচনা করিলে, ইরাণীরা যে আর্য্য-হিন্দুর কত নিকটা জ্ঞাতি তাহা বেশ বুঝিতে পারিবে।

কিন্তু জ্ঞাতিদের সঙ্গে আবার যেমন শত্রুতা হয়, এমন আর কাহারও সঙ্গে হয় না। ইরাণীদের সঙ্গেও আর্য্য-হিন্দুদের তেমনই একটা বিষম ঝগড়া বাঁধিয়া দুই দলে একেবারে পৃথক হইয়া গিয়াছিল। এ ঝগড়াটা কুরুপাণ্ডবের যুদ্ধের অপেক্ষাও হয়ত কম হয় নাই।

সুতরাং ঋষিরা ইন্দ্রের যে সকল স্তব রচনা করিলেন, ইন্দ্রকে যে রাজ-বেশে আকাশে প্রত্যক্ষ করিলেন- এমন বেশে তাঁহাকে ক আর কোথায় দেখিবে? এমন ভাষায় কে আর তাঁহাকে পূজা করিতে পারিবে? এই ফলমূলসম্পন্ন দ্যুলোক-ভূলোকের আলোচ্ছটায় উজ্জ্বল প্রসন্নতা আর কে কবে দেখিয়াছে? এই জন্য বেদের ভাষায় এত কবিত্ব, এই সৌন্দর্য্য, এত উপমা।

কি লইয়া এই কলহের উৎপত্তি হইয়াছিল তাহা বলা শক্ত, কিন্তু এটা ঠিক মনে হয়, আর্য্যগণ “ইন্দ্রকে” সর্ব্ব-শ্রেষ্ঠ দেবতা বলিয়া মানিয়া লইয়াছিলেন, ইরাণীরা তাহাতে কিছুতেই সম্মত হন নাই। এই ইন্দ্র ছিলেন আর্য্যগণের নূতন দেবতা।

আর্য্যজাতির অন্যান্য সকল শাখায়ই অপরাপর দেবতাদের নাম পাওয়া যায়, কিন্তু ইন্দ্রকে বিশেষ করিয়া পাওয়া যায় শুধু বেদে। আমার মনে হয়, এই ইন্দ্রকে লইয়া যত গোল বাঁধিয়াছিল।

ইন্দ্র বৃত্তাসুরকে হত্যা করেন, এই হিসাবে তাঁহার এক নাম বৃত্রঘ্ন। কিন্তু এই বৃত্রবধ ইন্দ্রের উপর শেষে আরোপ করা হইয়াছিল। জেন্দাবস্থায় “বৃত্রঘ্ন”কে পূজা করিবার বিধি আছে। ঐ পুস্তকে “বৃত্রঘ্ন” শব্দ “বৃথ্রঘ্ন” রূপ ধারণ করিয়াছে, প্রভেদ এইমাত্র। কিন্তু জেন্দাবস্থায় ইন্দ্রকে চোর, দস্যু নামে নিন্দা করা হইয়াছে।

ইহার দ্বারা হয়ত এই বুঝা যায় যে যখন ইরাণীরা ও আর্য্য-হিন্দুরা একত্র ছিলেন, তখন উভয়ে মিলিয়া বৃত্রবধকারী দেবতাকে উপাসনা করিতেন। কিন্তু যখন আর্য্য-হিন্দুরা ইন্দ্রকেই বৃত্রবধকারী বলিয়া স্বীকার করিলেন, তখন ইরাণীরা চটিয়া গিয়া ভিন্ন হইয়া গেলেন।

হিন্দু-আর্য্যগণ দেবতাদিগের পূজা করিতেন ও ইরাণীরা অসুরের উপাসক ছিলেন। কিন্তু ‘সুর’ আর ‘আসুরে’ এখন মানের যে তফাৎ একসময় তাহা ছিল না। সেই যুগে ‘সুর’ এবং ‘অসুর’ এই দুই শব্দই দেবতাদিগকে বুঝাইত। ইরাণীদের সঙ্গে হিন্দুরা পৃথক হইয়া যাওয়ার পরে “অসুর” শব্দটির অর্থ আমাদিগের নিকট হীন হইয়া পড়িয়াছে।

জেন্দাবস্থায় “অসুর” শব্দ “আহুর” রূপ ধারণ করিয়াছে। আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে পূর্ব্ববঙ্গের কোন কোন স্থানে এখনও “অসুর” শব্দটি “আহুর” রূপে চলতি কথায় উচ্চারিত হইয়া থাকে।

তোমরা বুঝিতে পারিলে, ৪।৫ হাজার বৎসর পূর্ব্বে আর্য্য-হিন্দুগণ অপরাপর শাখা হইতে ভিন্ন হইয়া ইন্দ্রের উপাসনা লইয়া মত্ত হইয়া গিয়াছিলেন।

এদেশের আকাশের মত উজ্জ্বল আকাশ কোথায়, এদেশের মেঘের অজস্র জলের ধারার মত এমন কৃষির সহায় আশ্চর্য্য জল-ধারা কোথায়, এদেশে যখন বজ্র-নিনাদ হয়, বিদ্যুৎ মেঘ হইতে মেঘে চমকাইয়া যায়,- অবিশ্রান্ত জল পড়িয়া কৃষকের ক্ষেতগুলি সোনার ফলসের লীলাভূমি করিয়া দেয়, তেমনটি আর কোথায় পাওয়া যাইবে!

সুতরাং ঋষিরা ইন্দ্রের যে সকল স্তব রচনা করিলেন, ইন্দ্রকে যে রাজ-বেশে আকাশে প্রত্যক্ষ করিলেন- এমন বেশে তাঁহাকে ক আর কোথায় দেখিবে? এমন ভাষায় কে আর তাঁহাকে পূজা করিতে পারিবে? এই ফলমূলসম্পন্ন দ্যুলোক-ভূলোকের আলোচ্ছটায় উজ্জ্বল প্রসন্নতা আর কে কবে দেখিয়াছে? এই জন্য বেদের ভাষায় এত কবিত্ব, এই সৌন্দর্য্য, এত উপমা।

কিন্তু এটা তোমরা মনে করিও না, বেদে যে সকল যুদ্ধাদির কথা আছে, তাহা শুধু আর্য্য ও অনার্য্যের মধ্যে। এই বইখানি ভাল করিয়া পড়িয়া দেখিলে বুঝিতে পারিবে, আর্য্যদের মধ্যে এমন অনেক রাজা এদেশে ছিলেন, যাহারা ইন্দ্রকে মানিতেন না, যাগ-যজ্ঞ করিতেন না, ব্রাহ্মণগণকে অর্থ দান করিতেন না।

এই দুই ধর্ম্মের মধ্যেও পণিরা অর্থাৎ বনিক-জাতি খুব সম্মানের জায়গা দখল করিয়া লইয়াছিল। এখনকার দিনে বৈষ্ণব-ধর্ম যখন গোঁড়া হিন্দু-সমাজের জাতিভেদের বিরুদ্ধে নিশান তুলিয়া সমাজ-সংস্কার করিতে দাঁড়াইল, তখন সেই বণিকের দলই আবার ঝাঁকে ঝাঁকে আসিয়া বৈষ্ণবদলে যোগ দিতে লাগিল।

এইরূপ দশ জন আর্য্য-রাজা ইন্দ্রভক্ত সুদাস রাজাকে আক্রমণ করিয়াছিলেন। ইন্দ্র তাঁহাদিগকে পরাস্ত করেন। বেদের বহু স্থানে ইন্দ্রের সঙ্গে আর্য্যরাজাদের যুদ্ধ বর্ণিত আছে।

আবার যাঁহারা অনার্য্য তাঁহাদের মধ্যেও কোন কোন লোককে ইন্দ্র খুব পুরস্কার দিয়ার আপনার করিয়া লইয়াছিলেন।

সুতরাং বেদের যুদ্ধ দুই দলের মধ্যে। যাঁহারা ইন্দ্রভক্ত, যজ্ঞকারী, ব্রাহ্মণ-পালক- একদিকে তাঁহারা, অপর দিকে- যাহারা ইন্দ্রকে মানিত না, যজ্ঞের অনিষ্ট করিত ও ব্রাহ্মণদিগের বিদ্বেষী ছিল। ধর্ম্ম-মত লইয়াই ছিল যত যুদ্ধবিগ্রহ। সুতরাং আর্য্য-অনার্য্যের জাতিভেদটা বেদে খুব গুরুতর বিষয় বলিয়া মনে হয় না।

ইহার ফলে এই দাঁড়াইয়াছিল যে আর্য্য ও অনার্য্যের মধ্যে কোন কোন জায়গায় আশ্চর্যরূপ মিলন ঘটিয়াছিল এবং এই জন্যই বোধ হয় আর্য্যরক্তের সঙ্গে অনার্য্য-রক্ত বেশ ঘনিষ্ঠভাবে মিশিয়া গিয়াছিল।

যাহারা ইন্দ্রের বিরুদ্ধে ছিল, তাহাদের মধ্যে পণিরা ছিল খুব নিরীহ, ইহারা বড় যুদ্ধ-বিগ্রহ পছন্দ করিত না, নিঃশব্দে ধন-সঞ্চয় করিত, মাংশ বেশী খাইত না, গোজাতির সেবা করিত, কারণ উক্ত পশুরা তাহাদিগকে ঘি, মাখন, ছানা খাওয়াইয়া বেশ হৃষ্ট-পুষ্ট ভাবে বাঁচাইয়া রাখিত।

নিরন্তর ইহাদের গাভী হরণ ছিল ইন্দ্রের একটা প্রধান কার্য্য। ইহারা ব্রাহ্মণদিগকে দান করিত না বলিয়া ঋষিদের ছিল ইহাদের উপর জাতক্রোধ।

এখন দেখা যাইতেছে, তখনকার দিনের আর্য্য ও অনার্য্য সমাজের মধ্যে যাগ-যজ্ঞের বিরোধী, ব্রাহ্মণদের প্রতি ভক্তিহীন একটা মস্ত বড় দল ছিল। এই সময়ের অনেক পরের বৌদ্ধধর্ম্ম ও জৈনধর্ম্ম এই বহু সংখ্যক নিস্তব্ধ জনসাধারণের প্রাণের কথাগুলি বলিয়াছিল।

তাই পার্শ্বনাথ ও বুদ্ধদেব যখন যজ্ঞ-রহিত, ব্রাহ্মণ-বিরোধী, হিংসাহীন ধর্ম্ম প্রচার করিয়াছিলেন, তখন সমস্ত ভারতময় এরূপ আশ্চর্য্য রকমের সাড়া পাইয়াছিলেন। ব্রাহ্মণেরা যাহাদিগকে অবজ্ঞা করিয়াছিলেন, সেই অবজ্ঞাত জনসাধারণের মর্মের কথা বলিয়াছিলেন বলিয়া জৈন তীর্থঙ্কর ও বৌদ্ধভিক্ষু দেবতার আসন পাইয়াছিলেন।

এই দুই ধর্ম্মের মধ্যেও পণিরা অর্থাৎ বনিক-জাতি খুব সম্মানের জায়গা দখল করিয়া লইয়াছিল। এখনকার দিনে বৈষ্ণব-ধর্ম যখন গোঁড়া হিন্দু-সমাজের জাতিভেদের বিরুদ্ধে নিশান তুলিয়া সমাজ-সংস্কার করিতে দাঁড়াইল, তখন সেই বণিকের দলই আবার ঝাঁকে ঝাঁকে আসিয়া বৈষ্ণবদলে যোগ দিতে লাগিল।

ইন্দ্রের উপাসক ব্রাহ্মণগণ বেদে যে ধর্ম্ম স্থাপন করিয়া গিয়াছেন, তাহার ভিত্তি এত দৃঢ় যে যুগে যুগে জনসাধারণ চেষ্টা করিয়াও তাহা নড়াইতে পারিতেছে না!

তোমরা এই বইখানি যদি আগা-গোড়া পড় ত বুঝিতে পারিবে, হিন্দু-সমাজ এখন যাহা কিছু লইয়া দাঁড়াইয়া আছে, তাহার সকলের মূলেই বেদ। এই বেদ হাতে করিয়াই হিন্দু-আর্য্যগণ এককালে পরম ঐক্য বোধ করিয়াছিলেন।

তাঁহার এই ঐক্যবলে এক মহাজাতির ও বড় রকমের সভ্যতার সৃষ্টি করিতে পারিয়াছিলেন। ঋগ্বেদের সকলের শেষ মন্ত্রটি তোমরা মনে রাখিবে। ইহাই বেদের সার শিক্ষা-

“তোমাদের অভিলাষ এক হউক, অন্তঃকরণ
এক হউক, তোমাদের মন এক হউক,
তোমরা যেন সর্ব্বাংশে সম্পূর্ণরূপে একমত হও।”

আমরা এখন পাঁচজনে একত্রে বসিলে আমাদের ভিন্ন মতের চোটে সভাসমিতি ভাঙ্গিয়া যায়, তাই না আমরা এত হীন! এস আমরা আবার একমত হই।

<<কেবা শুনাইল শ্যাম-নাম

……………………….
বৈদিক ভারত -দীনেশচন্দ্র সেন।

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

…………………..
আরও পড়ুন-
কেবা শুনাইল শ্যাম-নাম
বাঁশীর সুর
পদাবলী-মাধুর্য্য : ভূমিকা
এ কথা কহিবে সই এ কথা কহিবে
দর্শন ও আনন্দ
অনুবাদ
গৌরদাস কীর্ত্তনীয়া
হারাই হারাই
সখী-সম্বোধনে
মাথুর
অভিসার
মান
পরিহাস রস
মান-মিলন
গৌর-চন্দ্রিকা
বিদ্যাপতি এবং চণ্ডীদাস
বেদের শিক্ষা

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!