ভবঘুরেকথা
শামস তাবরিজি

শামস তাবরিজির বাণী: দুই

২১.
খানাপিনা কম করে বা রোজা রেখে তুমি তোমার শরীরকে বিশুদ্ধ করতে পারো কিন্তু ভালোবাসা কেবল নিজ হৃদয়কে বিশুদ্ধ করবে।

২২.
স্রষ্টার বান্দারা কখনো ধৈর্যহারা হয় না। কেন না সে তো জানেই যে সদ্য প্রকাশিত বাকা চাঁদটির পূর্ণিমার চাঁদে পরিণত হতে সময় লাগবে।

২৩.
যখন পৃথিবীতে কিছুই ছিল না, তখনো আমি ছিলাম। যখন সবকিছু হয়েছে, তখনো আমি আছি। যখন কিছুই থাকবেনা, তখনো আমি থাকবো।

২৪.
এই​ পথ কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা জানার চেষ্টা করা অর্থহীন। তুমি শুধু প্রথম ধাপটি নিয়ে চিন্তা করো, পরেরগুলো এমনিতেই চলে আসবে।

২৫.
আমি কি আত্মিক, নাকি বস্তুগত, নাকি শারীরিক ভালোবাসার দিকে মন দিবো? এসব প্রশ্ন করতে যেয়ো না। বৈষম্য তো কেবল বৈষম্যেরই জন্ম দেয়।

২৬.
আমার জীবনটা পুরো উলটে যাবে; মনে করে দুশ্চিন্তা করতে যেয়ো না। তুমি কেমন করে জানো সেই ওলটানো জীবন এই সোজা অবস্থাটির চেয়ে ভালো হবে না?

২৭.
অতীত আমাদের মনে ঘন কুয়াশার মত। আর ভবিষ্যত? সম্পূর্ণ একটা স্বপ্ন। আমরা ভবিষ্যত কেমন হবে তা ধারণাই করতে পারি না, যেমন পারি না অতীতকে বদলে দিতে।

২৮.
জীবনে তোমার যা-ই হোক না কেন, কখনো হতাশ হয়ে পড়ো না। এমনকি সবগুলো দরজাও যদি বন্ধ হয়ে যায়, একটি গোপন পথ তুমি খুঁজে পাবেই পাবে যার খোঁজ দিস কেউ জানে না।

২৯.
লোকের ছলচাতুরি আর প্রতারণা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ো না। কিছু লোক যদি তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এবং তোমাকে কষ্ট দিতে চায়, তবে স্রষ্টাও তো তাদের জন্য কৌশল করছেন।

৩০.
মানুষের উচিত একটা পাত্রের মতন হওয়া। একটি পাত্রের মধ্যকার শূন্যতা যেমন তাকে ধরে রাখে, তেমনি একজন মানুষকে ধরে থাকে তার নিজের কিছুই না হয়ে থাকার সচেতনতা।

৩১.
ভালোবাসার জন্য নানান রকম নাম, বিভাজন অথবা সংজ্ঞার প্রয়োজন নেই। হয় তুমি ভালোবাসার মাঝেই আছ, একদম কেন্দ্রে। নতুবা এই পরিসীমার বাইরে তুমি আছ, এই দূদুরত্বের হাহাকার বুকে নিয়ে।

৩২.
ঘৃণা আর গোঁড়ামি অন্তরকে কলুষিত করে। এসব বিশুদ্ধ পানি দিয়ে সাফ করা যায় না। খানাপিনা কম করে বা রোজা রেখে আপনি আপনার শরীরকে বিশুদ্ধ করতে পারেন কিন্তু ভালোবাসা কেবল আপনার হৃদয়কে বিশুদ্ধ করবে।

৩৩.
এসব প্রশ্ন করতে যেয়ো না। বৈষম্য তো কেবল বৈষম্যেরই জন্ম দেয়। ভালোবাসার জন্য এসব নানান রকম নাম, বিভাজন অথবা সংজ্ঞার প্রয়োজন নেই। হয় তুমি ভালোবাসার মাঝেই আছ, একদম কেন্দ্রে। নতুবা এই পরিসীমার বাইরে তুমি আছ, এই দুরত্বের হাহাকার বুকে নিয়ে।

৩৪.
যখন সবাই কিছু একটা হতে চাইছে, তখন তুমি বরং কিছুই হতে যেয়ো না। শূণ্যতার সীমানায় নিজেকে মেলে দাও। মানুষের উচিত একটা পাত্রের মতন হওয়া। একটি পাত্রের মধ্যকার শূণ্যতা যেমন তাকে ধরে রাখে, তেমনি একজন মানুষকে ধরে থাকে তার নিজের কিছুই না হয়ে থাকার সচেতনতা।

৩৫.
তুমি কি ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে আছ জান্নাত-জাহান্নাম দেখতে? অথচ তোমার বর্তমানের মাঝেই রয়েছে সেগুলো। যখন তুমি কোনো চুক্তি, যুক্তি আর প্রত্যাশা ছাড়াই ভালোবাসতে পারবে, তখন তুমি জান্নাত খুঁজে পাবে। যখন তুমি ঘৃণা আর মারামারিতে জড়িয়ে থাকবে, তুমি খুঁজে পাবে জাহান্নাম।

৩৬.
জীবনের পরিবর্তনগুলোর বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়িয়ে বরং আত্মসমর্পণ কর। জীবনকে তোমার বিরুদ্ধে না রেখে বরং তোমার সঙ্গী করে নাও। “আমার জীবনটা পুরো উলটে যাবে” মনে করে দুশ্চিন্তা করতে যেয়ো না। তুমি কেমন করে জানো সেই ওলটানো জীবন এই সোজা অবস্থাটির চেয়ে ভালো হবে না?

৩৭.
পৃথিবীটা সুউচ্চ পর্বতের মতন, এখানে প্রতিধ্বনি নির্ভর করে তোমার উপরেই। তুমি যদি ভালো কিছুর জন্য চিৎকার করো, পৃথিবীও তোমাকে তেমন প্রতিদান দিবে। তুমি যদি খারাপ কথা বলে চিৎকার দাও, সে তোমাকে তেমনই ফেরত দিবে। কেউ যদি তোমার সম্পর্কে খারাপ কিছু বলে, তাদের সম্পর্কে ভালো কথা বলো। পৃথিবীকে বদলে দিতে তোমার হৃদয়কে বদলে দাও।

৩৮.
জীবনে তোমার যা-ই হোক না কেন, কখনো হতাশ হয়ে পড়ো না। এমনকি সবগুলো দরজাও যদি বন্ধ হয়ে যায়, একটি গোপন পথ তুমি খুঁজে পাবে যার হদিস কেউ জানেনা। তুমি হয়ত এখনো দেখতে পাচ্ছ না, কিন্তু এই পথের শেষে জান্নাতের অনেকগুলো বাগান আছে। কৃতজ্ঞ হও! তুমি যা চাও তা পাওয়ার পর শুকরিয়া করা তো সহজ, বরং যা চাইছ তা পাওয়ার আগেই শুকরিয়া করো।

৩৯.
লোকের ছলচাতুরি আর প্রতারণা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ো না। কিছু লোক যদি তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এবং তোমাকে কষ্ট দিতে চায়, তবে স্রষ্টাও তো তাদের জন্য কৌশল করছেন। যারা ফাঁদ পাতে তারা তাদের নিজেদের পাতা ফাঁদেই পড়ে যায়। কোন খারাপ কাজই শাস্তিবিহীন থাকে না, কোন ভালো কাজই পুরষ্কার ছাড়া যায় না। ন্যায়বিচারের উপরে বিশ্বাস রাখো এবং বাকিটা ছেড়ে দাও।

৪০.
ভালোবাসা ছাড়া কোনো জ্ঞানের আগমন ঘটে না। যতক্ষণ না আমরা স্রষ্টার সৃষ্টিকে ভালোবাসতে পারছি, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই স্রষ্টাকে সত্যিকার অর্থে জানার, ভালোবাসার কোন সুযোগ নেই।

<<শামস তাবরিজির বাণী: এক

.……………………………………….
আরো পড়ুন:
শামস তাবরিজির বাণী: এক
শামস তাবরিজির বাণী: দুই

…………………….
আপনার গুরুবাড়ির সাধুসঙ্গ, আখড়া, আশ্রম, দরবার শরীফ, অসাম্প্রদায়িক ওরশের তথ্য প্রদান করে এই দিনপঞ্জিকে আরো সমৃদ্ধ করুন- voboghurekotha@gmail.com

……………………………….
ভাববাদ-আধ্যাত্মবাদ-সাধুগুরু নিয়ে লিখুন ভবঘুরেকথা.কম-এ
লেখা পাঠিয়ে দিন- voboghurekotha@gmail.com
……………………………….

……………….
আরও পড়ুন-
মহানবীর বাণী: এক
মহানবীর বাণী: দুই
মহানবীর বাণী: তিন
মহানবীর বাণী: চার
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: এক
ইমাম গাজ্জালীর বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: এক
গৌতম বুদ্ধের বাণী: দুই
গৌতম বুদ্ধের বাণী: তিন
গৌতম বুদ্ধের বাণী: চার

গুরু নানকের বাণী: এক
গুরু নানকের বাণী: দুই
চৈতন্য মহাপ্রভুর বাণী
কনফুসিয়াসের বাণী: এক
কনফুসিয়াসের বাণী: দুই
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: এক
জগদ্বন্ধু সুন্দরের বাণী: দুই
স্বামী পরমানন্দের বাণী: এক
স্বামী পরমানন্দের বাণী: দুই
স্বামী পরমানন্দের বাণী: তিন
স্বামী পরমানন্দের বাণী: চার
স্বামী পরমানন্দের বাণী: পাঁচ
স্বামী পরমানন্দের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: এক
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: দুই
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: তিন
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: চার
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: পাঁচ
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: ছয়
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: সাত
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: আট
সীতারাম ওঙ্কারনাথের বাণী: নয়
শ্রী শ্রী কৈবল্যধাম সম্পর্কে
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বাণী
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ১ম খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ২য় খন্ড
শ্রী শ্রী রামঠাকুরের বেদবাণী : ৩য় খন্ড
সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেবের বাণী: এক
সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেবের বাণী: দুই
সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেবের বাণী: তিন
সদগুরু জাগ্গি‌ বাসুদেবের বাণী: চার
চাণক্য বাণী : এক
চাণক্য বাণী : দুই
চাণক্য সংস্কৃত বাণী : এক
চাণক্য সংস্কৃত বাণী : দুই

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!