বর্ণানুক্রমিক বন্দনা
অনাদি অনন্ত দেব অনন্ত শায়িন্।
আদ্যাশক্তি লক্ষ্মী রূপে শ্রী পদে আসীন্।।
ইচ্ছাময় ইচ্ছারূপে সৃষ্টির বিকার।
ঈক্ষণে ঈশ্বর ভাবে শকতি প্রচার।।
উর্ম্মিমালা রূপে যুগ ক্ষীরোদ সাগরে।
ঊষা সন্ধ্যা কালাকাল নাহি তার নীরে।।
ঋতু কাল ভেদাভেদ কিছু মনে নাই।
৯কার বিকার শূন্য ধ্যান তত্ত্বে পাই।।
এক সত্তা একাকার একক সকল।
ঐশী শক্তি সেই বৃক্ষে ক্ষুদ্র এক ফল।।
ওম্ ধ্বনি আদি নাথ অনাহত শব্দ।
ঔরস – ঔষধি – রসে সৃজন আরদ্ধ।।
কমল-কোরক-কান্তি কমলার কান্ত।
খড়গতি খগপতি বহে যাঁরে শান্ত।।
গগনে গরজি’ঘন গাহে যাঁর গান।
ঘটন – কারণ যিনি বিভু ভগবান।।
ঙ কার নাদ যাঁর প্রণব প্রকাশে।
চঞ্চলা চরণ বন্দে ‘ চাহি অনিমেষে।
জগত জন্মিল যাঁর জলদ জঠরে।।
ঝর ঝর ঝরে ধারা ধরা রাণী শিরে।
ঞ কার প্রকাশে যাঁর অস্তিত্ব বিকার।।
টল টল টলে ধরা শুনিয়া টঙ্কার।।
ঠমকি ঠমকি চলে শব্দ অনুপম।
ডমরু বাজিয়া উঠে সমেতে বিষম।।
ঢল ঢল সিন্ধু – বারি চরণ ধোয়ায়।
ণত্ব – তত্ত্বাশ্রয়ী যিনি স্তত্বাহীন প্রায়।।
তারক-তরণী -রূপে তরঙ্গ মাঝারে।
থৈ থৈ সৃষ্টি লীলা ক্ষীরোদ সাগরে।।
স্থিতি সৃষ্টি প্রলয়াদি কারণ যে জন।
নমঃ পদে নরগণ লহ রে শরণ।।
পূর্ণানন্দ পূর্ণরূপ পূরণ-পূরণ।
ফণীন্দ্র বিস্তারি ফণা করিছে ব্যঞ্জন।।
বরা ভয় দাতা যিনি বিধাতার বিধি।
ভয় হারী ভবার্ণবে আপনি ভবাদি।।
মনোময় মনোচোর মধুর মূরতি।
যুগপতি যোগেশ্বর যোগে যাঁর প্রীতি।।
রসমুর্ত্তি রসোজ্জল রসের আঁধার।
লহরে লহরে চলে প্রেম-পারাবার।।
বদন আকাশ যাঁর বারিধি বসন।
শব্দ রূপে বিশ্ব সদা করিছে শাসন।।
ষড়ৈর্শ্বয শালী যিনি নরের আকারে।
সহস্র ফণায় পূজে অনন্ত যাঁহারে।।
হরিচাঁদ রূপে সে এল ওড়াকান্দী।
ক্ষম অপরাধ প্রভু কর জোড়ে বন্দী।।
বিশ্বাস ভকতি হীন অতি দুরাচার।
এ মরু হৃদয় সিক্ত হল না আমার।।
গুরুদত্ত কৃপা বীজ কতই পড়িল।
ভক্তিরস বিনে সব অঙ্কুরে শুকা’ল।।
ধন, মান,যশঃ করি ঘুরি নিশিদিনে।
সংসার – মরুর মাঝে মরিনু পরাণে।।
দিনে দিনে সর্ব্বহারা কাঙ্গালের বেশে।
কতই সহি যে জ্বালা আসিয়া বিদেশে।।
আলোময় এ জগতে একা সেজে অন্ধ।
নিরানন্দে বসে কান্দে দীন মহানন্দ।।