ভবঘুরেকথা
আমার লালন ফকির লালন সাঁইজি

আমার লালন দ্বিতীয় কিস্তি

-মূর্শেদূল মেরাজ

আমার লালন কে, বলছিলাম সেই কথা। এই আলাপে প্রবেশের আগে আরেকটা ছোট্ট প্রশ্ন করে রাখি। লালন কি আসলেই কোনো ব্যক্তি? নাকি প্রতিষ্ঠান?? নাকি তত্ত্ব???

যাক মূল কথায় আসি। কে লালন? কোনটা লালনের পথ?? আমি যেটা বুঝতে শুরু করছি সেটা লালন??? নাকি সাধুগুরুরা যা বলেন সেটা লালন?

সাধুগুরুরা নিজ নিজ ভক্তদের যে পথ দেখান সেটা লালনের মতাদর্শ? নাকি আমি দিন দিন যা বুঝছি ধীরে ধীরে সেটা লালনের মতাদর্শ?? নাকি বর্তমানে বেশিভাগ অনুরাগী-অনুরাসীরা যা মানছে তা লালনের মতাদর্শ??? নাকি গবেষকরা যা বলতে চাইছে তা লালনের মতাদর্শ?

প্রশ্নগুলো বেশ গোলমেলে। অনেকের কাছে অবান্তরও বটে। কারণ এর মধ্যে বিভেদ কি আছে; তা নিয়ে সংশয় জাগতেই পারে। গোলকধাঁধাটা এখানেই। এই প্রশ্নগুলোর মাঝে যে চিন্তা-চেতনা-ভাবধারা-বিশ্বাসের যে সূক্ষ্ম ফারাক আছে সেটাই আসলে ধরবার চেষ্টা।

গুরুবাদে গুরুকেই সর্বজ্ঞ মানতে হয়। তার প্রতি কোনো প্রকার সন্দেহ-সংশয় পোষন করার সুযোগ নেই। কেবল ভক্তিভরে সেই নাম স্মরণ করতে হবে। গুরুরূপে সেই চরণের ভিখারি হতে হবে। তার কাছে ভক্তিভরে পূর্ণ সমর্পণ করতে হবে।

মনের সকল দ্বন্দ্ব-দ্বিধা দূর করে গুরুরূপে পরমের ভজনাই সাধন। সেই গুরুকে সকল কিছু নিবেদন করে নিজ সেবা নিতে হবে। দীক্ষার পর সকল কিছুর মালিক হবেন গুরু। তারই গোলামী করতে হবে।

এটি একটি নগর কেন্দ্রিক ভাবনা। একটি পশ্চিমা ভাবনা। যা পুরোটাই কাল্পনিক একটা ভাবনা। যা কখনোই কোন জায়গাতেই প্রয়োগ বা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এবং হয়ও নি। মা তার নিজ সন্তানদের কেও সমভাবে ভালোবাসতে পারে না।

কিন্তু এই গুরু কোন্ গুরু সেটা নিয়ে কিঞ্চিৎ প্রশ্ন থেকেই যায়। ব্যক্তিগতভাবে আমি সারাজীবন ফকির লালনকে অনুসন্ধান করেছি। আমি গুরু সন্ধান করিনি কখনো। হয়তো গুরুবাদের প্রথাগত নিয়মানুযায়ী এটি ভুল পথ। হতেই পারে।

কিন্তু আমি তো প্রথাগত বিষয়গুলো মানতে পারিনি বলেই ফকিরের চরণে আশ্রয় নিতে এসেছি। এখানেও কি তবে সবই প্রথাগত বিষয়? নাহ্ ফকির এমন বিধান দিয়ে যান নাই বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, নির্দিষ্ট প্রথা মানাই একমাত্র বিধান নয়।

যদি তাই হতো তাহলে আমরা ফকির লালনকে পেতাম না। ফকির লালন তন্ত্র, বৈষ্ণব, ইসলাম, সুফি, সহজিয়া ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয়গুলোকে গুছিয়ে উপস্থাপন করতে কেবল ধরায় আসেন নি।

ফকির লালন আরো অনেক ব্যাপ্তি নিয়ে আছেন। তাকে সামান্যে ধরা যাবে না। সামান্যে ধরা দেয়ার মানুষ তিনি নন। তিনি আমার সাঁই। আমার পরম আরাধ্য। তিনিই ফকির লালন। তিনিই আমার গুরু।

কিন্তু গুরুবাদের সাধারণ নিয়মানুযায়ী সেই গুরুর কাছে যেতে হবে; সিঁড়ি দিয়ে ধাপে ধাপে। অর্থাৎ গুরু-শিষ্য পরম্পরায়। অবশ্যই সেটা অত্যন্ত সুন্দর একটা পথ। কিন্তু সেটাই একমাত্র পথ ভাবতেই একটা প্রতিবন্ধকতা দৃষ্ট হয়। মনে হয় আবার সেই বন্ধন। আবার সেই প্রথাগত নিয়মকানুন। নির্দিষ্টতা।

আসলেই কি ফকির লালন নির্দিষ্ট সংস্কারের বন্ধনে বন্দি? আমার অবশ্য এখন পর্যন্ত তা মনে হয় নি। আমার কাছে ফকির লালন অবারিত দ্বার। যেখানে যে যেরূপে বুঝবে সে সেইরূপে এগিয়ে যাওয়ার পথ পাবে। প্রত্যেকের জন্যই আছে পথ-মত জ্ঞানের ধারা।

যা প্রত্যেককে নিজেকেই খুঁজে নিতে হবে। আর তার প্রয়োজনে গুরুর আবশ্যকতা হলে। গুরু স্বয়ং আবির্ভূত হবেন। আর যারা এতো জটিলতার মধ্যে দিয়ে যাবে না। বা যাওয়ার কথা ভাবতে পারবে না। তাদের জন্য সরল পথ। তাদের জন্য প্রথাগত নির্দিষ্টতা। কারণ সকলের জন্য সম-ভাবনা। বিষয়টি কখনোই সঠিক নয়।

এটি একটি নগর কেন্দ্রিক ভাবনা। একটি পশ্চিমা ভাবনা। যা পুরোটাই কাল্পনিক একটা ভাবনা। যা কখনোই কোন জায়গাতেই প্রয়োগ বা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এবং হয়ও নি। মা তার নিজ সন্তানদের কেও সমভাবে ভালোবাসতে পারে না।

আমরা নিয়ম করে বলে দিলেই হবে না সবাই সমান। এটা বলতে হয়। সমাজ টিকিয়ে রাখার জন্য। এটা বলতে হয় প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখবার জন্য। এটা বলতে হয় বশ্যতা স্বীকার করিয়ে নেয়ার জন্য।

আমরা সকলেই নিজের একান্তে বেশ ভালোই জানি। আমরা সকলের জন্য একই বিচার আশা করি না। প্রত্যেকে তার যোগ্যতার ভিত্তিতেই সকল কিছু অর্জন করে নেয়। তবে সেই যোগ্যতা সে কতটা প্রকাশ করতে পারে। মানুষ কতটা বোঝে। সে ভিন্ন আলোচনা।

তাই চারপাশের সকলে কি প্রমাণ করতে চাইছে তার চেয়ে অনেক গুরুত্ব কোন মানুষটা কি বলছে। হয়তো বেশিভাগ মানুষ যা বলছে সেইপথে সমাজ চলবে। রাষ্ট্র চলবে। প্রতিষ্ঠান চলবে। কিন্তু তার পরিবর্তন আনতে পারে কেবল একটা কণ্ঠস্বর-একটা চিন্তা-চেতনা-একটা নতুন ভাবনা।

কিন্তু গণ বিষয়টার অধিক গুরুত্ব কি আদৌ থাকে? গণ মানুষ ভোট দিয়ে যাকে নির্বাচন করে বা বেশি সংখ্যক মানুষ যা বলে বা মানে তাই কি ঠিক?? যদি তাই হয় তাহলে আর এতো অনুসন্ধানের মানে কি?? আমরা নিজেরা নিজের মতো করে খুঁজতে শুরু করি তখনই যখন আমরা ‘গণ’ চিন্তাকে মেনে নিতে পারি না।

এভাবে আমি যা কিছু স্মরণ করতে পারি সকল কিছুর পেছনেই দেখি একজন মানুষ ঠায় দাঁড়িয়ে আছেন। হয়তো সেই মানুষটাকে দাঁড়িয়ে থাকবার জন্য তার চারপাশের অনেক মানুষ শক্তি জুগিয়েছেন। কিন্তু কণ্ঠস্বর একজনেরই। চিন্তা এক জনেরই।

তাই বেশিভাগ মানুষ কি করলো। তা আমাকে সে ভাবে ভাবায় না। আমার কাছে অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে একজন ফকির লালন কি বলেছেন। কি বলতে চেয়েছেন। কারণ আমি শুরুতেই বলেছি। আমার যাত্রায় আমি ফকির লালনকে খুঁজে বেড়াই। গুরুকে নয়। গুরুবাদকে নয়।

ফকির লালনকে খুঁজতে গিয়ে যা যা প্রয়োজন ক্রমাগত বুঝতে বুঝতে আমি তা গ্রহণ করতে রাজি আছি। কিন্তু চাপিয়ে দেয়া কোনো কিছু গ্রহণ করতে রাজি নই।

গুরুর প্রয়োজন নেই সে কথা আমি কখনোই বলছি না। সেটা বলার প্রশ্নও আসছে না। কিন্তু গুরু ধরতে হবে বলে ধরে নেয়া। সকলে ধরছে বলে ধরে নিতে হবে। তেমনটা আমি মানতে পারি না।

পরিচিত সকলেই এ জন্য আমার প্রতি তিক্ত-বিরক্ত। সকলেরই এক কথা সময় চলে যাচ্ছে যত দ্রুত আশ্রিত হওয়া যায় ততই মঙ্গল। আমিও তাদের সাথে একমত। কিন্তু যতক্ষণ প্রেম হচ্ছে না ততক্ষণ আমি মন দিতে রাজি নই। বলি তারে বারে বারে- ‘ক্ষম অপরাধ ওহে দীননাথ, কেশে ধরে মোরে লাগাও কিনারে’।

তাই চারপাশের সকলে কি প্রমাণ করতে চাইছে তার চেয়ে অনেক গুরুত্ব কোন মানুষটা কি বলছে। হয়তো বেশিভাগ মানুষ যা বলছে সেইপথে সমাজ চলবে। রাষ্ট্র চলবে। প্রতিষ্ঠান চলবে। কিন্তু তার পরিবর্তন আনতে পারে কেবল একটা কণ্ঠস্বর-একটা চিন্তা-চেতনা-একটা নতুন ভাবনা।

তাই আমরা বলি সকলে সমান। এটা প্রকৃতপক্ষে একটা সান্ত্বনা মাত্র। এতে সমাজে-রাষ্ট্রে-প্রতিষ্ঠানে তথা প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম-মতাদর্শে স্থিতি থাকে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম-মতাদর্শে জ্ঞান সাধক খুব বেশি পাওয়া যায় না। জ্ঞান সাধকের সংখ্যা সকল সময়ই কম।

তাই সকল কিছুই মেনে নিতে হবে-মনে নিতে হবে এমনটা হবার জো নেই। নইলে সকলেই তো এক স্রষ্টারই অনুসন্ধানী। তবে কেনো এতো মত-এতো পথ। কারণ প্রত্যেকে একই মত-পথে সেই আলোর পথের দিশা পাবে না। প্রত্যেকেই তার চিন্তার জায়গায়-চেতনার জায়গায় আলাদা।

তাই প্রত্যেকের জন্যই রয়েছে মত-পথ। সে তার নিজ নিজ সংস্কার-জন্মজন্মান্তরের সংস্কার দিয়ে তার পথ বেছে নেবে। সেটা তার জন্য কতটা ভালো। ধারিত্রীর জন্য কতটা ভালো। ব্রহ্মাণ্ডের জন্য কতটা ভালো সেটা একেবারেই ভিন্ন আলোচনা।

এই কথার অনেক গভীরে না ঢুকেও যদি বলতে হয় তবে একটা প্রশ্ন দিয়ে, আমরা কি বলতে পারি? আমরা সকলের জন্য সমানভাবে ভাবতে পারি?? সকলকে সমান মান্যতা দেই??? সকল ঘটনাকেই কি আমরা গুরুত্ব দেই?

সব কিছুকেই কি আমরা সমভাবে মনে রাখি? নাকি যা কিছু আমাদের ছুঁয়ে যায়- যা কিছু আমাদের স্পর্শ করে তাই মনে রাখি? বিষয়টা এখানেই। বুঝতে হবে। সমভাবে দেখবার সুযোগ নাই। সেটা বলতে হয়। কারণ আমরা নিজেদের স্বার্থেই চাই না। সকলে অনুসন্ধানে লেগে যাক।

আমরা আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই চাই। অনেকে এসব কিছু না ভেবে সমাজকে-রাষ্ট্রকে-প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যাক। তাই আমরা চাই না সকলে ভাবুক। সকলে জ্ঞান সাধনা করুক। কারণ জ্ঞান সাধনায় প্রশ্ন জাগবেই। আর সেই প্রশ্নের উত্তরে সন্তুষ্ট না হলে আরো হাজার হাজার প্রশ্ন উপস্থিত হবে।

তাই আমরা বলি সকলে সমান। এটা প্রকৃতপক্ষে একটা সান্ত্বনা মাত্র। এতে সমাজে-রাষ্ট্রে-প্রতিষ্ঠানে তথা প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম-মতাদর্শে স্থিতি থাকে। তাই প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম-মতাদর্শে জ্ঞান সাধক খুব বেশি পাওয়া যায় না। জ্ঞান সাধকের সংখ্যা সকল সময়ই কম।

তবে সাধন মার্গে জ্ঞান সাধন সবচেয়ে কঠিন পথ। তারপরই আছে কর্মযোগ। আর সবচেয়ে সহজ হলো ভক্তিযোগ। তবে সত্য স্বীকারোক্তি হলো কোনো পথই সহজ নয়। সব পথেই সাধককে বিস্তর কাটখড় পোড়াতে হয়। তবে জ্ঞান পথে সাধককে সবচেয়ে বেশি অস্থিরতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়।

জ্ঞান সাধকরা যারা আত্মগড়িমায় পড়ে যান তারা যেমন একা হয়ে জান একটা সময়। আবার যারা বিনয়-ভক্তি-প্রেম-শ্রদ্ধায় জ্ঞান সাধনে এগিয়ে যায় তারাও একা হয়ে যায়। জ্ঞান সাধনায় সাধক যতক্ষণ তার প্রশ্নের মনমতো জবাব না পাচ্ছে ততক্ষণ সে ব্রহ্মাণ্ডের কোনো কিছুতেই সন্তুষ্ট হতে পারে না।

সে কারণে জ্ঞান সাধনাকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয় না। যদিও সকলেই জ্ঞানের কথা বলতে পছন্দ করেন। কিন্তু সকলেই জানেন জ্ঞান সাধনাকে প্রাধান্য দিলে এক সময় তার সাথে বিশ্বাসের দ্বন্দ্ব হবেই হবে। অন্যদিকে জ্ঞান সাধক যদি গড়িমায় গড়াগড়ি খায় তাহলে তো কথাই নেই।

সেই দ্বন্দ্ব সংঘাতে বা কু-তর্কেও পরিণত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তবে ভক্তি-বিনয়পূর্ণ জ্ঞান সাধকও কম যায় না। তার মাঝেও রাশি রাশি প্রশ্ন উদয় হয়। সে সব বিচরণ করে চিত্ত-মন-মস্তিষ্কে। সে হয়তো সংঘাত-কুতর্কে যায় না। কিন্তু সকল কিছুকে মানতেও পারে না।

তবে এ সবই ঘটে সাধন দেশে। স্থূল-প্রবর্ত্য পাড়ি দেয়ার পর। যদি সেই বিনয়-ভক্তি-শ্রদ্ধাকে প্রেমে পরিণত করে সাধন দেশটা পাড়ি দিয়ে সিদ্ধির দেশে যেতে পারে। তবে আর সেরূপ অপঘাতের চিন্তা বিশেষ থাকে না। ততদিনে জ্ঞান সাধক প্রেমিক হয়ে উঠে।

তবে সাধন মার্গে জ্ঞান সাধন সবচেয়ে কঠিন পথ। তারপরই আছে কর্মযোগ। আর সবচেয়ে সহজ হলো ভক্তিযোগ। তবে সত্য স্বীকারোক্তি হলো কোনো পথই সহজ নয়। সব পথেই সাধককে বিস্তর কাটখড় পোড়াতে হয়। তবে জ্ঞান পথে সাধককে সবচেয়ে বেশি অস্থিরতার ভেতর দিয়ে যেতে হয়।

তাই আমার লালন সেই জন। যিনি বলে গেছেন,

সামান্যে কি তার মর্ম জানা যায়।
হৃদকমলে ভাব দাঁড়ালে
অজান খবর আপনি হয়।।

দুগ্ধে জলে মিশাইলে
বেছে খায় রাজহংস হলে,
কারো সাধ যদি হয় সাধন বলে
হয় সে রাজহংসের ন্যায়।।

মানুষে মানুষের বিহার
মানুষ ভজলে দৃষ্ট হয় তার,
সে কি বেড়ায় দেশ দেশান্তর
পীড়েই পেড়োর খবর পায়।।

পাথরেতে অগ্নি থাকে
বের করতে হয় ঠুকনি ঠুকে,
দরবেশ সিরাজ সাঁই দেয় তেমনি শিক্ষে
লালন ভেঁড়ো সং নাচায়।।

আমার লালন এমনি। যিনি সকল কিছুই বলে গেছেন কিন্তু কোনো কিছুই স্পষ্ট করেন নি। তিনি এমন একটা ভাব দিয়ে গেছেন। যা সাধক তার জ্ঞানের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ-উচ্চতায় নিরিখ প্রতিমুর্হূতে নিত্য নতুন অজান খবর আহরণ করতে পারে। যদি তার মাঝে ডুবে যাবার সাধনা থাকে।

আর যারা নির্দিষ্টতা নিয়ে মশগুল। তারা সাঁইজির পদের নির্দিষ্ট অর্থে সন্তুষ্ট থাকে। তারা সাধনার যে স্তরে থাকে সেটাকেই মূক্ষ্য মনে করে তাই করতে থাকে। তাই করবার অনুপ্রেরণা দেয়। তাই করিয়ে নেয়।

সেটারও তাৎপর্যপূর্ণ প্রাতিষ্ঠানিকতায়। কিন্তু সাধারণভাবে যখন লক্ষ্য নির্দিষ্ট হয়ে যায়, তখন পারস্পরিক প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। একে অন্যকে টপকানোর দৌড়টা শুরু হয়ে যায়।

আবার অন্যভাবে বললে বলতে হয়, সকলকে অনুসন্ধান করতেই হবে এমনই দিব্যিই বা কে দিয়েছে? এর দায়ই বা কেনো নিতে হবে সকলকে?? তাই সবাই সবার মতো করেই ভাববে। যার যেখানে মন মিলবে সে সেখানে মিশে যাবে। এটাই বিধান। এটাই রীতি। এটাই সৌন্দর্য।

জোড় করে চাপিয়ে দেয়া বা চাপিয়ে নেয়ার কোনো মানে হয় না। আর মানে হয় না বলেই তো এতো কথা। এতো লেখা। এতো বলা। আর আমার লালনকে খুঁজতে বের হওয়া।

(চলবে…)

<<আমার লালন প্রথম কিস্তি।। আমার লালন তৃতীয় কিস্তি>>

…………………………..
আরো পড়ুন-
আমার লালন প্রথম কিস্তি
আমার লালন দ্বিতীয় কিস্তি
আমার লালন তৃতীয় কিস্তি
আমার লালন চতুর্থ কিস্তি
আমার লালন পঞ্চম কিস্তি

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!