আমার ধর্ম্মের বাণী সবে বলিবারে।
অধিকার দিতে হবে সরল অন্তরে।।
“মিশন “ গড়িব আমি ধর্ম্ম প্রচারিতে।
তার লাগি জমি কিছু মোরে হবে দিতে।।
এই মত প্রতিশ্রুতি যদি আমি পাই।
অবশ্য করিব কার্য কিছু ভুল নাই।।
বিবেচনা করি সবে দেহ গো উত্তর।
যাহা কবে বল মোরে সকলে সত্বর।।”
এতেক বলিয়া মীড বসিল তখন।
সভাজনে কাণাকানি করে সর্ব্বজন।।
মৃদু গুঞ্জনের ধ্বনি উঠে চারিভিতে।
কোন কিছু কোন জন পারে না বলিতে।।
হেন কালে দাঁড়াইল জ্ঞানী যজ্ঞেশ্বর।
“চুপ কর “ বলে সবে জুড়ি দুই কর।।
নিস্তব্ধ হইল সভা স্তব্ধ সিন্ধু প্রায়।
সাহেবে উদ্দেশ্য করি যজ্ঞেশ্বর কয়।।
“শুনহে ডক্টর মীড, মোদের বারতা।
সকল বুঝিনা মোরা যত বল কথা।।
আমাদের কর্ণধার অই বড় কর্ত্তা।
তাঁর সাথে হইয়াছে নাকি কথাবার্ত্তা।।
এ জাতির শুভা-শুভ পতন-উন্নতি।
সবাকার মূলে উনি সর্ব্বকালে গতি।।
উহার উপরে আছে সবার নির্ভর।
উনি যাহা করে তাহা মোদের সবার।।
অকূল সমুদ্রে জানি উনি কর্ণধার।
তাঁর ইচ্ছা বিনা ইচ্ছা নাহি কারো আর।।”
এমত কহিল যদি সাধু যজ্ঞেশ্বর।
সভা জনে দিল সায় সবে একত্তর।।
তবে ত ডক্টর মীড প্রভু পানে চাহে।
ধীরে উঠি মহাপ্রভু কিছু কথা কহে।।
স্বজাতির প্রতি প্রভু তবে ডাকি কয়।
“শুন সবে মোর মনে যত কিছু লয়।।
আমি বুঝি রাজ শক্তি সাহায্য ব্যতীত।
পতিত জনের কভু নাহি হবে হিত।।
রাজ পুরোহিত মীড তাহে শক্তি মন্ত।
আমি বলি তাঁহা হ’তে দুঃখ হবে অন্ত।।
মীড যবে আসিবারে করিল মনন।
তোমাদিগে’ সব কথা বলেছি তখন।।
সেই কথা মনে সবে করহে এখন।
মোর ইচ্ছা করিবারে জাতির তারণ।।
আমি বলি মীড যদি এই দেশে রয়।
অবশ্য মঙ্গল হবে নাহিক সংশয়।।
যা কিছু করিবে মীড সবে ইহা জান।
মোদের মঙ্গল হবে এই কথা মান।।
তাই এই ইচ্ছা আমি করিয়াছি মনে।
অবশ্য মীডেরে রাখি বিশেষ যতনে।।
যে ইচ্ছা করিবে মীড সে-ইচ্ছা আমার।
অকুল পতিত নিয়ে দিলাম সাঁতার।।
যাহা কিছু চাহে মীড সব আমি দিব।
জাতি যদি জাগে তবে কিবা না পারিব?
অতঃপর মীডে চাহি প্রভু বলে হাসি।
“জমি চাও জমি লও নাশ দুঃখ রাশি।।
কতখানি জমি মীড চাহ মোর ঠাঁই।
যাহা চা’বে তাহা পাবে কোন চিন্তা নাই।।
যাহা ইচ্ছা কর তুমি তাতে বাধা নাই।
পতিত উদ্ধার হোক্ এই মাত্র চাই।।
প্রভুর বচন শুনি মীডের বিষ্ময়।
মনে ভাবে হেন জন ‘না দেখি কোথায়।।
যতকাল এই দেশে আসিয়াছি আমি।
বহুলোক দেখিলাম নানা স্থানে ভ্রমি।।
বিশেষতঃ নমঃশূদ্র বলি যারা কয়।
সবাকার রীতিনীতি জানি পরিচয়।।
কিন্তু এই বড়কর্ত্তা শ্রী গুরুচরণ।
কোন জনে নাহি দেখি ইহার মতন।।