সংসার রঙ্গভূমি
পয়ার
আর একদিন গিয়া কার্তিকের ঘরে।
কার্ত্তিক কার্ত্তিক বলে ডাকে উচ্চৈঃস্বরে।।
অম্বিকারে বলে মাগো মোরে খেতে দেও।
কার্ত্তিক কোথায় গেছে ডাকিয়া আনাও।।
অম্বিকা বলেছে আমি কিবা খেতে দিব।
খুদ সিদ্ধ করিয়াছি কিবা খাওয়াইব।।
পাগল বলেছে মাগো খুদ কৃষ্ণ খাদ্য।
এনে দে মা শীঘ্র আমি খা’ব খুদ সিদ্ধ।।
খুদ সিদ্ধ এনে দিল পাগলের ঠাই।
খেয়ে বলে মাগো আমি বড় মিষ্ট খাই।।
পাগলের সিংহধ্বনি কার্ত্তিক শুনিল।
কিঞ্চিৎ বিলম্বে পাগলের কাছে এল।।
বলেছে কার্ত্তিক তুই থাকিস কোথায়।
কার্ত্তিক বলেন আমি ছিলাম সভায়।।
অদ্য আমি গিয়াছিনু গ্রাম্য নিমন্ত্রণে।
স্বজাতির মধ্যে আমি ছিলাম ভোজনে।।
পাগল বলে স্বজাতি তুই ক’স কারে।
চক্ষে হস্ত বুলাইয়া বলে পুনঃ যারে।।
শীঘ্র করি দেখে আয় রে বর্বর বেটা।
দেখে আয় সভাতে মানুষ আছে কেটা।।
কার্ত্তিক যাইয়া দাঁড়াইয়া সভা পার্শ্বে।
দেখেছে সভায় যত চেগা বগা বসে।।
শিয়াল কুকুর আর শকুন বিড়াল।
ছাগ মেষ গো-মহিষ আছে পালে পাল।।
পাঁচ ছয় শত লোক ছিল যে সভায়।
তার মধ্যে শতেক মনুষ্য দেখা যায়।।
দেখিয়া কার্ত্তিক হ’ল বিস্মিত হৃদয়।
লুঠিয়া পড়িল এসে পাগলের পায়।।
এ ভব মায়া প্রপঞ্চ সার কিছু নাই।
কহিছে তারকচন্দ্র হরি বল ভাই।।