-নূর মোহাম্মদ মিলু
একদিন এক শিকারী জঙ্গলে শিকারে বের হলো কিছুদূর যাওয়ার পর ছোট্ট একটি পাখি তার শিকারে পরিণত হলো। বন্দি ছোট্ট পাখি শিকারীকে প্রশ্ন করলো, “হে শিকারী! তুমি আমাকে নিয়ে কি করবে?”
জওয়াবে শিকারী বললো, “তোমাকে জবাই করে রান্না করে খাবো।”
পাখি বলতে লাগলো, “আরে ভাই আমি অনেক ছোট আর এতোই ছোট যে আমাকে খেয়ে তুমি তৃপ্ত হতে পারবে না। তারচেয়ে ভালো হয় আমি তোমাকে তিনটি মূল্যবান কথা বলি যা তোমাকে খাওয়ার চাইতে বেশি ফায়দা হবে। তবে কিছু শর্ত সাপেক্ষে-
১ম শর্তের কথাটি আমি তোমার হাতে থাকতেই বলে দিবো।
২য় শর্তের কথা তখনই বলবো যখন আমি গাছের ঢালে গিয়ে বসবো। আর,
৩য় শর্তের কথা বলবো যখন আমি পাহাড়ের চূড়ায় উড়ে গিয়ে বসবো।
শিকারী বললো, “বেশ তাই হবে।”
বলতে শুরু করলো পাখি- “ঘটে যাওয়া অতীতের বিষয়ে আফসোস করো না।”
শিকারী তাকে ছেড়ে দিয়ে বললো দ্বিতীয় কথা পাখি গাছের ডালে গিয়ে বসলো আর বলতে লাগলো, “যে কাজ কখনো সম্ভব নয় তার উপর বিশ্বাস করো না।” অতঃপর উড়ে গিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় বসলো আর বলতে লাগলো, “আরে বোকা শিকারী যদি তুমি আমাকে জবাই করতে তবে আমার পেট থেকে এক একশো গ্রামের দুইটি মূল্যবান মনি মুক্তা পেয়ে যেতে।”
পাখির কথা শুনে শিকারী মাথায় হাত দিয়ে আফসোস করে বলতে লাগলো, “হায়! এখন কি হবে বলো?”
এবার পাখি বলতে লাগলো, “এখন আর বলে কি লাভ হবে, যে দুটি কথা বলেছি তা তো তুমি অল্পতেই ভুলে গেলে। কেন! আমি কি বলিনি যে, অতীতকে নিয়ে আফসোস করো না? যা কখনোই সম্ভব নয় তা হবে বলে বিশ্বাস করো না? আরে বোকা! আমার শরীরের পালক চোখ মুখ ঠোঁট পেট পাখা পা মাংস সবকিছু মিলিয়ে ১০০ গ্রামই যেখানে হবে না; সেখানে আমার পেট থেকে ১০০ গ্রামের ২টি মুক্তা কিভাবে বের হয়?
এতটুকু বলেই পাখি উড়াল দিয়ে দূরে চলে গেল।
……………………………….
শিক্ষা: অতি আকাঙ্খা মানুষের চাহিদার তুলনা এতোটাই বাড়িয়ে দেয় যে, মানুষ লোভের তাড়নায় অন্ধ হয়ে যায়, ন্তর এবং বুদ্ধি আর জ্ঞান সব বিপরীতে কাজ করতে শুরু করে।
(ঈমাম গাজ্জালি’র একটি বর্ননা)