-মূর্শেদূল কাইয়ুম মেরাজ
সিনাই পাহাড়ের উপর পূর্বনির্ধারিত নিদের্শনা অনুযায়ী মোশি ঈশ্বরের সাথে সাক্ষাত করলে ঈশ্বর তাকে দশটি আজ্ঞা প্রদান করেন। যা তার অনুসারিদের জন্য অবশ্যই পালনীয়। এই আজ্ঞাগুলোই দশ আজ্ঞা নামে পরিচিত-
১. আমা ভিন্ন অন্য কাউকে ঈশ্বর বলে মেন না।
২. প্রতিমা পূজা করো না।
৩. অনর্থক ঈশ্বরের নাম নিওনা।
৪. বিশ্রাম বারকে পবিত্র রুপে পালন করো।
৫. পিতা-মাতাকে সমাদর করো।
৬. নর হত্যা করো না।
৭. ব্যভিচার করো না।
৮. চুরি করো না।
৯. প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিওনা।
১০. প্রতিবেশীর কোন বস্তুতে লোভ করিও না।
জীবনের সব ক্ষেত্রে এসব নিয়ম কিভাবে কাজে লাগাবে ঈশ্বর মোশির কাছে বললেন আর মোশি তার অনুসারিদের কাছে তা ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিলেন। সকলে এই দশ আজ্ঞা মানতে রাজি হলে মোশি পাহাড়ের আরও উপরে উঠে গেলেন দশ আজ্ঞা লেখা পাথর নিয়ে আসবার জন্য।
এই সময় মোশি পাহাড়ের উপর অনেক দিন অবস্থান করেন। তার অনুসারিরা ধৈর্য্য রাখতে না পেরে হারোণকে বলল, ‘আমরা জানি না যিনি আমাদের মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছেন সেই মোশির কি হয়েছে। আমাদের জন্য একজন দেবতা তৈরি করুন সে যেন আমাদের পরিচালনা করতে পারে।’
হারোণ লোকদেরকে তাদের সোনার গয়না খুলে দিতে বললেন। তারপর তিনি সেই গয়না আগুনে গলিয়ে মিসরের একটি দেবতার মত একটি বেদি সহ বাছুরের মূর্তি তৈরি করলেন। লোকেরা বলল, ‘এই হল আমাদের ঈশ্বর যিনি আমাদের মিসর থেকে বের করে এনেছেন।’
তারা ভীষণ চিৎকার করে গান গেয়ে নেচে উৎসব পালন করতে লাগলো। ঈশ্বর যখন দেখলেন যে, কত তাড়াতাড়ি তার অনুসারিরা তাদেরই করা প্রতিজ্ঞা ভুলে গেল ও অন্য দেবতায় মত্ত্ব হয়েছে। তিনি ভীষণ রাগ হলেন। মোশিও পাহাড় থেকে নেমে এসে এসব দেখে ভীষণ রেগে দশ আজ্ঞা লেখা পাথরখন্ড ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করে ফেললেন এবং সেই সোনার বাছুর মাটিতে ফেলে ভেঙ্গে গুড়া করে ফেললেন।
মোশি বললেন, ‘তোমরা ভীষণ পাপ করেছ।’ কিন্তু তখনও তিনি লোকদের খুব ভালবাসতেন। তিনি লোকদের পক্ষে ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাইলেন। ঈশ্বর লোকদের দ্বিতীয়বারের মত একটি সুযোগ দিলেন। তাই ঈশ্বর আবারও পাথরের উপরে সেই দশ আজ্ঞা লিখে দিলেন। যা তার অনুসারিদের অবশ্য পালনীয় হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।
2 Comments