ভবঘুরেকথা

নিষ্কাম বা আত্ম সমর্পণ
পয়ার

এইমত ঠাকুরের হইল প্রকাশ।
পরে এসে ওঢ়াকাঁদি করিলেন বাস।।
জ্যেষ্ঠ পুত্র প্রভুর যে শ্রীগুরুচরণ।
তাহার অনুজ নাম শ্রীউমাচরণ।।
বাস কৈল ওঢ়াকাঁদি আমভিটা খ্যাত।
পুরাতন ভিটা ছিল না ছিল বসত।।
ঠাকুরের পুত্র কন্যা কিছু না জন্মিতে।
অলৌকিক লীলা সব করেন ক্রমেতে।।
আমভিটা ঘর করি মহাপ্রভু কয়।
দেখি কার্য্য না করে কি খেতে পাওয়া যায়।।
দিবারাত্রি খাটি কেহ না পারে আটাতে।
অন্নহীন যায় দিন ভ্রমে পথে পথে।।
কর্ম ক্ষেত্রে কর্ম করে আশা হয় হানি।
দোকান পাতিয়া লভ্য না পায় দোকানী।।
অর্থ লোভে কার্য্যক্ষেত্রে জীবন কাটায়।
আত্মস্বার্থ খাটাইয়া লভ্য কই পায়।।
কেহ না করিয়া কার্য্য রাজ্যপ্রাপ্ত হয়।
কোটি লোকে দাস হ’য়ে পড়ে তার পায়।।
সুখদুঃখ সংসারের যত বাহ্য কার্য্য।
যে করায় তারে কেহ নাহি করে গ্রাহ্য।।
যখন গৌরাঙ্গ প্রভু লীলা প্রকাশিল।
কি কার্য্য করিল সবে কেবা খেতে দিল।।
মুনি ঋষি যোগী ন্যাসী তপস্যা করিত।
কহ দেখি কে কোথায় না খেয়ে মরিত।।
বহু জীব মীন পাখী কীট পতঙ্গম।
আত্মস্বার্থ কর্মত্যাগী নিষ্কাম নিয়ম।।
আজ হতে কাজ কর্ম সব ত্যাজিলাম।
পবিত্র চরিত্র নামে রুচি রাখিলাম।।
যদ্যপি আমরা নহে সে কাজের কাজি।
পাই কিনা পাই খেতে ব’সে থেকে বুঝি।।
এত বলি মহাপ্রভু নামধ্বনি দিল।
ভক্তগণে হরি বলি নাচিতে লাগিল।।
এ ভবসংসারে প্রভু বৃথা দিন যায়।
রসনা-বাসনা পাদ-পদ্ম মধু পায়।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!