ভবঘুরেকথা
মতুয়া সংগীত

শ্রীহরি ঠাকুরের জন্ম বিবরণ
পয়ার

এবে শুন ঠাকুরের জন্ম বিবরণ।
যেই রূপে প্রভূ ভবে অবতীর্ণ হন।।
পূর্ব্বেতে কড়ার ছিল ভক্তগণ সঙ্গে।
উৎকলেতে দৈববানী ছিল যে প্রসঙ্গে।।
আর এক বাক্য ছিল শূন্যবাণী সনে।
শেষ লীলা করিব আমি ঐশন্য কোণে।।
নীচ হয়ে করিব যে নীচের উদ্ধার।
অতি নিন্মে না নামিলে কিসে অবতার।।
কৃষ্ণ প্রেম সুনির্ম্মল উচ্চেতে না র’বে।
নিম্ন খাদে থাকে বারি দেখ মনে ভেবে।।
নীচ জন উচ্চ হ’বে বুদ্ধ তপস্যায়।
বুদ্ধদেব অবতার যে সময় হয়।।
বুদ্ধের কামনা তাহা পরিপূর্ণ জন্য।
যশোমন্ত গৃহে হরি হৈল অবতীর্ণ।।
বুদ্ধদেব বহুদিন তপস্যা করিল।
তাতে ব্রহ্ম প্রণবাদি শূদ্রেতে পাইল।।
নীচ জন প্রতি দয়া বুদ্ধদেব করে।
প্রণবেতে অধিকারী শূদ্র তার পরে।।
বুদ্ধদেব তপস্যাতে হইয়া সদয়।
বরং গুরু বলে প্রভু বর দিতে চায়।।
বুদ্ধ বলে বর যদি দিবে মহাশয়।
অগ্রভাগে কর প্রভূ শূদ্রের উপায়।।
প্রভু বলে তব নামে অবতার হ’ব।
প্রণব ত্রিগুণ নাম শূদ্রেরে বিলা’ব।।
এক হরি নাম মধ্যে গুণ দিয়া সব।
নীচজনে করাইব পরম বৈষ্ণব।।
বুদ্ধ বলে যদি প্রভু হও অবতার।
এ দেশে থাকেনা যেন জাতির বিচার।।
আর এক প্রশ্ন তার মধ্যেতে উদয়।
সংক্ষেপে বলিব যাতে পুথি না বাড়ায়।।
কুবের নামেতে জোলা জাতি সে যবন।
পরম বৈষ্ণব রাম মন্ত্রে উপাসন।
তাহার নন্দন হ’ল নামেতে নকিম।
নিরবধি কৃষ্ণপ্রেম যাহার অসীম।।
কুবের আরোপে থেকে কৃষ্ণরূপ দেখে।
নকিম বুনায় তাঁত হরি বলে মুখে।।
কুবের আরোপে গাঁথে কুসুমের হার।
গলে দিবে সাজাইবে শ্যাম নটবর।।
ভক্তিফুলে মনোসূতে হার গাঁথি নিল।
সেই মালা ত্রিভঙ্গের গলে তুলে দিল।।
চূড়ায় ঠেকিয়া হার নাহি পড়ে গলে।
দিতে হার পুনর্ব্বার চূড়ায় ঠেকিলে।।
নকিম আরোপে তাঁত বুনা’য়েছে হাতে।
মুখে হরি বলে কৃষ্ণ দেখে আরোপেতে।।
বাপের আরোপ দেখি নকীমের সুখ।
বলে হাত আরো কিছু উপরে উঠুক।।
দেখহ জোলার এই প্রেমভক্তি গুণ।
কি করে তাহার কাছে স্বত্ত্বঃ রজঃ গুণ।।
দারু ব্রহ্ম অবতার হ’ল যে সময়।
কুবেরের কীর্ত্তি রাখিলেন এ ধরায়।।
কুবেরের তোড়ানী খাইবে যেইজন।
তার হ’বে দারু ব্রহ্ম রূপ দরশন।।
আর এক প্রস্তাব যে আসিল তাহাতে।
একদা নারদ মুনি গেল বৈকুন্ঠেতে।।
বিষ্ণুর প্রসাদ মুনি খাইল তথায়।
কৈলাসেতে আসি মুনি হইল উদয়।।
শিবেরে বলেন মুনি হরষিত মন।
অদ্য হৈনু শ্রীনাথের প্রসাদ ভাজন।।
শিব বলে আমারে ত দিলেনা কিঞ্চিৎ।
প্রভুর প্রসাদে মোরে করিলে বঞ্চিৎ।।
নারদের নখাগ্রে প্রসাদ কণা ছিল।
প্রেমভরে হরের বদনে তুলে দিল।।
প্রেমে মত্ত হইলেন নারদ শঙ্কর।
বঞ্চিতা হইয়া গৌরী করে আঙ্গীকার।।
আমি যদি সাধ্বী নারী হই তব ঘরে।
এ প্রসাদ বিলাইব বাজারে বাজারে।।
তপস্যা করিল হরি বর দিতে এল।
প্রসাদ বাজারে বিকি বর চেয়ে নিল।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!