শ্লোক
স্বকর্মফলনির্দিষ্টাং যাং যাং যোনীং ব্রজাম্যহম্।
তস্যাং তস্যাং হৃষীকেশ ত্বয়ার্ভক্তির্দৃঢ়াস্ত্ত মে।।
পয়ার
কলিরাজ্যে পাপ কার্যে সবে হ’ত বশ।
আমার ভয়েতে কেহ না করে সাহস।।
আমি যদি রাজ কার্যে না থাকিরে ভাই।
হরিভক্ত চূর্ণ হ’ত পাপীদের ঠাই।।
এনেছি তুলসী দল মিশ্রিত চন্দন।
ছেড়ে দেরে পূজি হরিচাঁদের চরণ।।
হরিভক্ত সঙ্গে অদ্য হইব মিলন।
করিব মধুর হরি নাম সংকীর্তন।।
সবে বলে যম এসে কীর্তনে মাতিল।
শমনের প্রতি ভাই হরি হরি বলি।।
অপিচ বৃদ্ধার বাচনিক ও মৃত্যু কন্যার আবির্ভাব
পয়ার
এ হেন কীর্তন হয় মৃত্যুঞ্জয় বাড়ী।
দৈবে কোথা হতে এসে নাচে এক বুড়ি।।
সে কহিছে যমভগ্নি আমি মৃত্যু কন্যে।
এসেছি দয়াল বাবা দেখিবার জন্যে।।
কর্ণেতে কলম দিয়া যমের মহুরী।
সংকীর্তনে নৃত্য করে বলে হরি হরি।।
দেখিব দয়াল হরি দু’নয়ন ভরি।
মুখে বলে হরি হরি হরি হরি হরি।।
বৃন্দাবন রাউৎখামার মল্লকাঁদি।
নবদ্বীপ ওঢ়াকাঁদি করজোড়ে বন্দি।।
মহাভাবে এইরূপ প্রলাপাদি হয়।
তার মধ্যে দুইজন উঠিয়া দাঁড়ায়।।
তারা কহে মোরা দোঁহে শমনের দূত।
সান্দীপানি মুনিবংশ ব্রাহ্মণের সুত।।
আর এক মেয়ে নাচে হ’য়ে প্রেম স্ফূর্তি।
বলে আমি যম ভার্যা নাম মোর মূর্তি।।
যমপুরী শূন্য করি আসি পুরিশুদ্ধ।
আমরা পূজিব হরিচাঁদ পাদপদ্ম।।
শূন্যে থেকে দৈববাণী হইল দৈবাৎ।
আবির্ভাবে হরিপদে করি প্রণিপাত।।
কমলে পূজিব হরি শ্রীপদ কমল।
প্রেমানন্দে তোরা সবে হরি হরি বল।।
রাউৎখামার মল্লকাঁদি দুই গ্রাম।
এই মত মত্ত হ’য়ে করে হরিনাম।।
ক্রমে বন্যা বেগে চলে হ’ল ধন্য ধন্য।
উঁচু নীচু ভেদ নাই দেশ পরিপূর্ণ।।
দিবা রাত্রি গত হয় হ’য়ে জ্ঞানশূন্য।
কীর্তন ছাড়িয়া লোক পাইল চৈতন্য।।
আয়োজন দশ বিশ জনের রন্ধন।
শতেক দ্বিশত লোকে করিল ভোজন।।
ঘরে কিংবা বাহিরে কি ঘাটে আর পথে।
হরি বল হরি বল সবার মুখেতে।।
মনোভৃঙ্গে মধুপায়ী শ্রীহরিপাদাব্জে।
পিপাসু তারকচন্দ্র কবি রসরাজে।।