কোথায় আলো, কোথায় ওরে আলো!
বিরহানলে জ্বালো রে তারে জ্বালো।
রয়েছে দীপ না আছে শিখা,
এই কি ভালে ছিল রে লিখা-
ইহারচেয়ে মরণ সে যে ভালো।
বিরহানলে প্রদীপখানি জ্বালো।
বেদনাদূতী গাহিছে, “ওরে প্রাণ,
তোমার লাগি জাগেন ভগবান।
নিশীথে ঘন অন্ধকারে
ডাকেন তোরে প্রেমাভিসারে,
দু:খ দিয়ে রাখেন তোর মান।
তোমার লাগি জাগেন ভগবান।’
গগনতল গিয়েছে মেঘে ভরি,
বাদল-জল পড়িছে ঝরি ঝরি।
এ ঘোর রাতে কিসের লাগি
পরান মম সহসা জাগি
এমন কেন করিছে মরি মরি।
বাদল-জল পড়িছে ঝরি ঝরি।
বিজুলি শুধু ক্ষণিক আভা হানে,
নিবিড়তর তিমির চোখে আনে।
জানি না কোথা অনেক দূরে
বাজিল প্রাণ গভীর সুরে,
সকল গান টানিছে পথপানে।
নিবিড়তর তিমির চোখে আনে।
কোথায় আলো, কোথায় ওরে আলো!
বিরহানলে জ্বালো রে তারে জ্বালো।
ডাকিছে মেঘ, হাঁকিছে হাওয়া,
সময় গেলে হবে না যাওয়া,
নিবিড় নিশা নিকষঘন কালো।
পরান দিয়ে প্রেমের দীপ জ্বালো।
…………………………………
রাগ: দেশ
তাল: ঝম্পক
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): আষাঢ়, ১৩১৬
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): 1909
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন
স্বরলিপিকার: সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভীমরাও শাস্ত্রী, দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর