ভবঘুরেকথা
মতুয়া সংগীত

দেবী ঋষিমণিকে গোস্বামীর দর্শনদান
পয়ার

গোস্বামীর লীলাসাঙ্গ বৈশাখ ঊনত্রিশে।
মহোৎসব জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রথম দিবসে।।
পরেতে দোসরা জ্যৈষ্ঠ মঙ্গল বাসরে।
দেখা দিল গিয়া দশরথের নারীরে।।
বাসুড়িয়া নিবাসী বিশ্বাস দশরথ।
বহুদিন হইতে নিয়াছে হরিমত।।
গোলোকের প্রিয়ভক্ত স্বপরিবারেতে।
পাগলামী সদা করিতেন সে বাড়ীতে।।
দশরথ বিশ্বাসের বাড়ীর দক্ষিণে।
পালানে বেগুন ক্ষেত্র নির্মিত যতনে।।
ঋমণি নামিনী দশরথের রমণী।
ক্ষেত্রে গিয়া বেগুন তুলিছে একাকিনী।।
গোস্বামীর রূপ চিন্তা হৃদয় মাঝার।
হেনকালে গোস্বামী ছাড়িল হুহুঙ্কার।।
গোস্বামীকে দেখে ধনী পূর্ণ ভাবোদয়।
পদরজ শিরে ধরি ধরণী লোটায়।।
মা! মা! বলিয়া প্রভু বলিল তাহারে।
যাত্রা করিয়াছি আমি গত শনিবারে।।
অদ্য আমি বিলম্ব না করিব এখন।
ওঢ়াকাঁদি যাইবারে হইয়াছে মন।।
ঠাকুরের লীলাসাঙ্গ হ’য়েছে যে দিনে।
সেই হ’তে ভ্রমি ঠাকুরের অন্বেষণে।।
যাত্রা করিয়াছি মাগো ভাবি সেই পদ।
দেখিব কোথায় আছে বাবা হরিচাঁদ।।
এদেশে বাবার ভক্ত আছে যত জন।
একপাক বাড়ী বাড়ী করিব ভ্রমণ।।
এত বলি যাত্রা করে দক্ষিণাভিমুখে।
ঋমণি দাঁড়ায়ে থাকে পাগলকে দেখে।।
সে মেয়ে ভাবিল মনে আজকে যাইবে।
এইরূপে আসে যায় আবার আসিবে।।
দুই দিন পরে পুনঃ সংবাদ আসিল।
জয়পুরে পাগলের লীলাসাঙ্গ হ’ল।।
শুনিয়া মূর্ছিতা হ’য়ে পড়িল ঋমণি।
পাগলের জন্য যেন হ’ল পাগলিনী।।
পরে গঙ্গাচর্ণা গ্রামে পাগল চলিল।
গঙ্গাধর বাড়ই তাহাকে দেখা দিল।।
গঙ্গাধরে বলে আন তামাক সাজিয়ে।
পরে কার্তিকের বাড়ী উঠিলেন গিয়ে।।
কার্ত্তিক তামাক খেয়ে হুঁকা থুয়ে যান।
পাগল আসিয়া সে হুঁকায় দিল টান।।
পরে রাইচরণের বাড়ীতে উঠিল।
হেনকালে গঙ্গাধর হুঁকা ল’য়ে এল।।
কার্তিকে জিজ্ঞাসা করে প্রভু গেল কই।
কার্তিকের স্ত্রী অম্বিকা বলে গেল অই।।
আপনি তামাক খেয়ে রাখিলেন হুঁকা।
ঘরে বসে তামাক খেলেন প্রভু একা।।
তারপর পাগল মণ্ডল বাড়ী গেছে।
দেখ গিয়া মণ্ডলের বাড়ীতেই আছে।।
হেনকালে সংবাদ আনিল একজন।
করেছেন জয়পুর লীলা সংবরণ।।
শুনিয়া কার্ত্তিক গঙ্গাধর রামমোহন।
পাগল পাগল বলে ধরাতে পতন।।
সে হইতে কার্ত্তিক সে তামাক সাজিয়ে।
নিত্য নিত্য রাখেন পাগলের লাগিয়ে।।
পাগলের জন্যে সবে করে হাহাকার।
কবি কহে নাহি পাবে খুঁজিলে সংসার।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!