তুলসীর উৎপত্তি
সর্ব্বৌষধি রসেনৈব পূর্ব্বমমৃত মন্তনে।।
সর্ব্বোসত্ত্বোপকারায় বিষ্ণুনা তুলসী কৃতা।।
(তথাহি স্কন্দপুরাণে)
পুরাকালে দেবাসুর হইয়া মিলিত। সমুদ্র মন্থনে করে উৎপন্ন অমৃত।। জীবের মঙ্গল হেতু বিষ্ণু হিতময়। সর্ব্বগুণা তুলসীরে উদ্বৃত করয়।
তুলসী মাহাত্ব্য
নব বিপ্রসদৃশং পাত্রং ন দানং সুরভে সম্ম,
ন চ গঙ্গাসসং তীর্থংন পত্রং তুলসী সমম্।
অভিন্ন পত্রং হরিতাং হৃদ্যমঞ্জরী সংযুতাম,
ক্ষীরোদার্ণব সম্ভুতাং তুলসী আপদোদ্বার:।
(তথাহি স্কন্দপুরাণে)
ব্রাহ্মণ সমান পাত্র দেনুতুল্য দান। ধরাধামে তীর্থ নাহি গঙ্গার সমান।। তেমনি পত্রের মধ্যে হয় শ্রেষ্ঠতর।। তুলসী নামেতে পত্র খ্যাত এই ধরা।। যে তুলসী সমুদ্ভব ক্ষীরোদ সাগরে।। অচ্ছিন্ন হরিৎ পদ্ম কৃষ্ণ দান করে।। ক্ষীরোদ সাগরে জন্ম তুলসী হরিৎ।। অচ্ছিন্ন মঞ্জরী কৃষ্ণে হলে সমর্পিত। সকল আপদ নাশি মুক্ত হয় সেই। ছিন্ন ভিন্ন প্রকৃপত্র তুলসী না দেই।।
তুলসী প্রদক্ষিণ মন্ত্র-
যানি কানি চ পাপানি ব্রহ্মত্যাদিকানি চ।
ত্বং সর্ব্বং বিলয়ং যাতি তুলসী ত্বং প্রদক্ষিণাৎ।
তুলসী জাগরণ মন্ত্র-
উত্থিষ্টং তুলসীদেবী গাত্রোত্থানাং কুরু যথা
অরুণোদয়-প্রাত: শ্রীচরণে প্রণমাম্যহম।
তুলসী মূল লেপন মন্ত্র-
তুলসী নিয়তে গঙ্গা স্থানেমেকং বারাণসী
সেবনে পঞ্চতীর্থানি তুলসীভ্যাং নমো নম:।
তুলসী ত্বং সদা ভক্তা সর্ব্বতীর্থফলং ভবেৎ
লেপনাৎ তব মূল: সর্ব্বাপাপৈ প্রমুচ্যতে।
তম্মূলে সর্ব্বতীর্থানি তৎপত্রে সর্ব্বদেবতা
তদঙ্গে সর্ব্বপূণ্যানি কৃষ্ণভক্তি প্রদায়িনীং।
তুলসী স্নান মন্ত্র-
গোবিন্দবল্লভাং দেবী ভক্তচৈতন্যকারিণীং।
স্থাপয়ামি জগদ্বাত্রীংকৃষ্ণভক্তি প্রদায়িণীং।
তুলসী চরণ মন্ত্র-
তুলস্যমৃত জন্মাসি সদা ত্বং কেশব প্রিয়া
কেশবার্থে চিনেমি ত্বাং বরদা ভব শোভনে।
তদঙ্গ সম্ভবৈ, পত্রৈং পুজয়ামি যথা হরিং
তথা কুরু পবিত্রাঙ্গি, কলৌমলবিনাশনম।
চরনোদ্ভব দু:খান্তে যদ্দেবি! হৃদি বর্ত্ততে
তৎক্ষমস্ব জগন্মাতস্তুলসী ! ত্বং নমাম্যহম।
তুলসী অর্ঘ মন মন্ত্র-
শ্রিয়: শ্রিয়ে শ্রিয়বাসে নিতং শ্রীধরসৎকৃতে।
ভক্ত্যা দত্তং ময়া দেবী গৃহণার্ঘ্যৎ নমোহস্তুতে।।
গন্ধপুষ্প দেওয়ার মন্ত্র-
ইদং গন্ধং তুলসীদেব্যৈ নম:।
এতে গন্ধপুষ্পে তুলসীদেব্যৈ নম:।
পূজান্তে পাঠ্য-
নির্মিতা ত্বং পূরা দেবৈচিতা ত্বং সুরাসুরৈ:
তুলসী হর মে পাপং পূজা গৃহ নমোহস্তুতে।
তুলসীর স্তুতি-
মহাপ্রসাদ জননী সর্ব্বসৌভাগ্যবর্দ্ধিনী
আধিব্যাধিহরি নিত্যং তুলসী ত্বং নমোহস্তুতে।।
তুলসীর ধ্যান-
তুলসী সর্ব্বভুতানাং মহাপাতকনাশিনী।
স্বর্গাপবর্গদে দেবি বৈষ্ণবানাং প্রিয়ে সদা।।
সত্যে সত্যবতীচৈব ত্রেতায়াং মানবী তথা।
দ্বাপরে অবতীর্ণাসি বৃন্দা ত্বং তুলসী কলৌ।।
তুলসী প্রণাম-
বৃন্দাবৈ তুলসীদেব্যৈ প্রিয়ায়ৈ কেশবস্য চ
কৃষ্ণভক্তিপদে দেবি সত্যবত্যৈ নমো নম:।
যা দৃষ্টা নিখিলাঘ সঙ্খ সমীম স্পষ্টা বপু: পরানী
রোগানামভিবন্দিতা নিরসনী সিক্তান্তকত্রাসিনী।
প্রত্যাশক্তি বিধায়িনী ভগবত: কৃষশ্য সংরোপিতা
ন্যস্তা তচ্চরণে বিমুক্তি ফলদাতস্যৈ নম:।।
তুলসীচয়ন নিষিদ্দ তত্ত্ব-
আস্তানা তুলসীং ছিত্বা য: পূজা: কুরুতে নর:।
সোহপরাধা ভবেৎ সত্যং তৎসর্ব্বং নিষ্ফল: ভরেৎ।।
নস্নাতা তালসীং ছিদ্যাৎ দেবার্থে পিতৃকর্ম্মণি।
মাসান্তে পক্ষয়োবস্তে দ্বাদশ্যাং নিশি সন্ধ্যায়ো:।।
তুলসীচ্ছেদনেব বিষ্ণো: শিরসি ছেদনম্।
বিনা স্থানে করে যদি তুলসী চয়ন। তাহা দ্বারা করে যদি ভগবৎ অর্চ্চন।। দেবকর্ম্ম পিতৃকর্ম্ম বিফলে তার যায়। পদ্মপুরাণের মতে বর্ণিলাম তায়।। দ্বাদশী, সংক্রান্তি, সন্ধ্যা, অমা, পৌর্ণমাসী। রাত্রিকালে কখন না তুলিবে তুলসী। যদিস্যাৎ কোন লোক করয়ে চয়ন। বিষ্ণু শিরচ্ছেদ পাপ হইবে তখন।।
তুলসী আরতি
নমো নম: তুলসী শ্রীকৃষ্ণ প্রেয়সী
রাধাকৃষ্ণ পদ পাব এই অভিলাষী।।
যে তোমার শরণ লয়, তার বাঞ্ছা পূর্ণ হয়
কৃপা করি কর তারে বৃন্দাবনবাসী।
এই মনের অভিলাষ, বিলাশ কুঞ্জে করব বাস
নয়নে হেরিব সদা যুগলরূপরাশি।
এই নিবেদন ধর, সখীর অনুগা কর
সেবা অধিকার পেতে সদা অভিলাষী।
শ্রীরাধাগোবিন্দ প্রেমে সদা যেন ভাসি।।