ভবঘুরেকথা
ত্রিনাথ

[পয়ার]

শুনিয়া আকাশবাণী ব্রাহ্মণ-তখন।
মহানন্দে শিষ্যগৃহে করেন গমন।
আদি অন্ত সমুদয় শিষ্যেরে কহিল।
শ্রবণে শিষ্যে তবে বিস্মিত হইল।
ব্রাহ্মণ বলেন ভক্ত তুমি বাছাধন।
না জানিয়া তোমা প্রতি কহি কুবচন।।
এখন করহ তুমি মম প্রতিকার।
তোমার কল্যাণে পাই পুত্র-পরিবার।।
শিষ্য বলেন গুরু শুনহ বচন।
বিধিমতে কর তুমি ত্রিনাথ পূজন।।

শুনি ত্রিনাথের পূজা মানস করিল।
কল্কে পোড়া ভস্ম শিষ্য গুরুহস্তে দিল।।
এই ভস্ম লয়ে যাও শীঘ্র করি গিয়া।
তাঁদের অঙ্গেতে তুমি দিও মাখাইয়া।
হরষিত মনে গুরু গৃহেতে আসিয়া।।
মাখায় স্ত্রী পুত্র অঙ্গে যতন করিয়া।
সকলে পাইয়া প্রাণ উঠিল তখন।
আনন্দে ত্রিনাথ ধ্বনি করেন ব্রাহ্মণ।।
স্থাপন করিয়া ঘট পূজা আরম্ভিল।
ধনে পুত্রে লক্ষ্মীলাভ ক্রমেতে হইল।।
অনেক বসিল মেলা ত্রিনাথ পূজায়।
অদ্যবধি লক্ষ লোক আসে আর যায়।।

অন্ধ খঞ্জ দোঁহে আছে পথেতে বসিয়া।
জিজ্ঞাসা করিল খঞ্জ লোকেরে ডাকিয়া।।
কহ কহ মহাশয় কহ বিবরণ।
বলহ করিছ সবে কোথায় গমন।।
একজন কহে যাই ত্রিনাথ দেখিতে।
বর মাগি লইব তাঁহার শ্রীপদেতে।।
যেবা যাহা চায় সেজন তাহাই পায়।
দানে কল্পতরু দেব অতি দয়াময়।।
অন্ধ পায় চক্ষুদান, দরিদ্রেতে ধন।
মানস করিলে হয় খঞ্জের চরণ।।

শুনি দোঁহে মানস করিল যতনেতে।
অন্ধ পায় চক্ষু, পদ পাইল খঞ্জেতে।।।
আনন্দেতে নৃত্য করে তুমি দুই হাত।
ধন্য ধন্য মহাপ্রভু ধন্য হে ত্রিনাথ।।
হরি হরি বল সবে যত বন্ধুগণ।।
মহেশচন্দ্র দাস ভণে শুন ভক্তগণ।।
ইতি ত্রিনাথের পাঁচালী সমাপ্ত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!