গৌর-ভক্ত- খেদ ও দৈবাদেশ
দীর্ঘ-ত্রিপদী
তুই খালি শ্রীগৌরাঙ্গ, হইল রে লীলা সাঙ্গ,
আমরা এখন যাব কোথা।
যদি না গৌরাঙ্গ পাই, প্রাণে আর কার্য নাই,
পাষাণে কুটিব গিয়া মাথা।।
মরিলে বাঁচিত প্রাণ, পাবকি পাবকি ত্রাণ,
যে আগুনে দহিছে হৃদয়।
প্রহলাদ পুড়ে আগুনে, শ্রীকৃষ্ণের নামগুণে,
জলন্ত অনল নিভে যায়।।
গৌরাঙ্গ গৌরাঙ্গ বলে, জ্বলি বিচ্ছেদ অনলে,
কিসে মরি বাঁচিয়া কি ফল।।
বিরহে কাতর হ’য়ে, জগন্নাথ কাছে গিয়ে,
বলে দেরে শ্রীগৌরাঙ্গ রায়।
গৌরাঙ্গ গ্রাসিলি যবে, আমাদিগে গ্রাস সবে,
এত বলি মাথা পেতে দেয়।।
জগন্নাথের নিকটে, কেহ কহে মাথা কুটে,
কেহ বলে ওরে জগন্নাথ।
বক্ষে করাঘাত হানে, কেহ বা উন্মত্ত মনে,
জগন্নাথে মারে মুষ্ট্যাঘাত।।
দণ্ডাঘাত মুষ্ট্যাঘাত, কেহ মুচড়ায় হাত,
উদরেতে কেহ মারে ভূষ।
কেহ পিছু পিছাইয়া, ফিরে এসে আগুলিয়া,
নির্ভয় শরীরে মারে ঢুষ।।
ভক্তগণে দুঃখ হেরি, জগন্নাথ কষ্ট ভারি,
সদয় হইয়া শ্রীচৈতন্য।
ভক্তগণ প্রবোধিতে, জগন্নাথ দেহ হ’তে,
শূন্যবাণী কহে থেকে শূন্য।।
কেন জগন্নাথে মার, আমার এ বাক্য ধর,
স্থির হও যাও নিজ ঘরে।
এ লীলা হইল সাঙ্গ, আমার গৌরাঙ্গ অঙ্গ,
মিশে গেল আমার শরীরে।।
এবে না পাইবে দেখা, গুরুজন শিষ্য শাখা,
স্থির কর সবে শোক মন।
কলির মধ্যাহ্নকালে, করিব একটি লীলে,
তারপরে পাবে দরশন।।