গোপালপুর দাঙ্গা ও নমঃশূদ্রের বিপদ
গোপালপুরেতে হ’ল দুরন্ত ঘটনা।
দাঙ্গা হাঙ্গামাতে লোক হারায় চেতনা।।
মুসলমানের সাথে নমঃশূদ্র ভাই।
করিল বিষম দাঙ্গা তুল্য দিতে নাই।।
সেই গ্রামে অত্যাচারী কিছু মুসলমান।
অকারণে নমঃশূদ্রে করে অপমান।।
‘যাক জান থাক মান’ করে অঙ্গীকার।
প্রতিকারে নমঃশূদ্র বদ্ধ পরিকর।।
এইমতে দুই দলে হ’ল মারামারি।
খুন হ’ল লোক মারা গেল জন চারি।।
আগে ভাগে মুসলিমে দরখাস্ত করে।
সংবাদ জানায় সব পুলিশ গোচরে।।
পুলিশ সংবাদ লিখে জানায় উপরে।
তদন্তে পাঠায় লাট কমিশনাররে।।
উচ্চ কৰ্মচারী যত কায়স্থ ব্রাহ্মণ।
মনে করে নমঃশূদ্রে করিব দমন।।
“পিটুনী পুলিশ” সেথা বসাইতে চায়।
সংবাদ শুনিয়া সবে পে’ল মহা ভয়।।
বিপদে বান্ধব কেবা গুরুচাঁদ বিনে ?
সবে মিলে উপস্থিত শ্ৰীগুরু সদনে।।
বলে কৰ্ত্তা! শুন বাৰ্ত্তা করি নিবেদন।
এইবারে যাবে মারা নমঃশূদ্রগণ।।
‘পিটুনী পুলিশ’ শুনি অতি ভয়ঙ্কর।
তার হাতে কোনজনে পাবেনা উদ্ধার।।
রাজ-সরকারে এই গেছে সমাচার।
নমঃশূদ্র দাঙ্গাবাজ করে অত্যাচার।।
তুমি বিনে এ বিপদে বন্ধু কেহ নাই।
রক্ষা কর গুরুচাঁদ চরণে দোহাই।।”
প্রভু বলে “রক্ষা করি কিসের কারণে ?
বাঁচিয়া থাকিয়া কিবা করিবে জীবনে ?
তোমাদের ব্যবহার সব আমি জানি।
কাঁদাকাটি যাহা কর কিছু নাহি মানি।।
কিবা কাজ হবে তোরা বাঁচিয়া থাকিলে।
কিবা কাজ করেছিস তোরা এতকালে।।
শয়ন ভোজন আর পুত্রকন্যা-জন্ম।
তোদের জীবনে মাত্র দেখি এই ধৰ্ম।।
না মানিলি গুরুবিষ্ণু না হ’লি বিদ্বান।
তোদের জীবনে বাপু! কেন এত টান।।
ইতর পশুরা আছে বেঁচে যেই ভাবে।
তোরাও তাদের মত কাজে কি স্বভাবে।।
এমন জীবনে বল বেঁচে কিবা ফল?
আকারে মানুষ বটে পশু একদল।