শঙ্করের কাছ হতে লভি নবজ্ঞান।
দেবর্ষি নদীতে যান করিবারে স্নান।।
মহামুনি আসে যখন যা যাবে নদীর নিকটে।
দেব কন্যাগণ বসে হেরে নদী তটে।।
ফুল দুর্বা বিল্বপত্র ভাসি আসে জলে।
ঋষিরে জিজ্ঞাসে তারা অতি কৌতুহলে।।
কুহ মুনি প্রকাশিয়া কারণ ইহার।
কেন বা ভাসিয়া আসে পূজা উপচার।।
কোন দিন স্নানকালে এমত না দেখি।
আমরা বসিয়া হেথা সর্ব্বদা নিরখি।।
নারদ কহিল কেন পূজিয়া তারিণী।
পূজা অন্তে ফুল দুর্বা ফেলে অনুমানি।।
কন্যাগণ দেবর্ষিকে করিয়া বেষ্টন।
শুনিতে ইচ্ছুক হন পূজার বিবরণ।।
পূর্বে কভু এই পূজা তারা শুনে নাই।
নারদে বেষ্টন তারা করিল যে তাই।।
তখন নারদ কহে কৈলাস বারতা।
কেমনে জানিতে পারে তারিণীর কথা।।
একথা নারদ যবে কৈলাসেতে ছিল।
পঞ্চদাসী গৌরি পাশে আসিয়া জুটিল।।
কি কারণে নাম তাঁর বিপত্তারিণী।
অভিলাষ হইয়াছে শুনিতে সে বাণী।।
মহাদেবপানে চাহি কহিলেন গৌরি।
শুনিতে তারিণী কথা ইচ্ছা যে পদ্মারি।।
বিপত্তারিণী কথা কহে পঞ্চানন।
পদ্মা তাহা যদি শুনেন তখন।।
সমুদ্র মন্থিল যবে সুর ও অসুর।
সহসা গরল তাহে উঠিল প্রচুর।।
কি হবে উপায় তার ভাবি দেবগণ।
শিবের সাহায্য মাগি লইল স্মরণ।।
দুর্গা নাম উচ্চারিয়া সেই বিষ পানে।
শিব হে তিলেক মাঝে শান্তি ফিরে আনে।।
দুর্গা নামে মহাদেব রক্ষিল ধরাতে।
বিপত্তারিণী সবে কহিল দুর্গারে।।
গোষ্ঠে যাত্রাকালে দেবী যশোদা জননী।
কৃষ্ণের মঙ্গল চাহে হয়ে কর প্রার্থী।।
কালিয়ার বিষর্পূ ছিল কালিদহ।
রাখালেরা তথা যায় শ্রীদাম সহ।।
না জানিয়া খায় কবে সে বিষজল।
বিষের ক্রিয়ার দেহ হইল বিকল।।
দুর্গা নামে তেজো দৃপ্ত শ্রীকৃষ্ণ আসিয়া।
রক্ষিল সবারে নিজে কালীরে নাশিয়া।।
যখন যে ভাবে যায় যে বিপদ আসে।
বিপত্তারিণী নামে সে সকলি নাশে।।
বিপদে সম্পদে কিংবা যে কোন সময়।
বিপত্তারিণী নাম রাখিও হৃদয়ে।।