বীর সাধক মহাত্মা দেবীচাঁদ গোস্বামীর জীবন কথা প্রণতি
প্রণাম চরণে দেব দেবীচাঁদ স্বামী।
জ্ঞানে কর্ম্মে ধর্ম্মে সদা ভক্ত-শ্রেষ্ঠ তুমি।।
মম গুরু শ্রীগোপাল তুমি তস্য গুরু।
মম পক্ষে তাই তুমি বাঞ্ছা-কল্পতরু।।
বালক বয়সে তোমা হেরেছি নয়নে।
আজি কিন্তু দাদু তাহা নাহি মোর মনে।।
পুত্র হতে পৌত্র নাকি হয় প্রিয়তর।
তাই নিবেদন পদে রহিল আমার।।
গুণ নাই জ্ঞান নাই নাহি ভক্তি লেশ।
তবোপরে তবু মোর দাবী নহে শেষ।।
এসোহে দয়াল দাদু! হৃদয় কন্দরে।
গাহ হরি-গুণ-গীতি মধুময় স্বরে।।
সেই ধ্বনি বিশ্বজনে করিব বন্টন।
তব পরিচয় মোর সফল জীবন।।
সুপুত্রের গুণে পিতা হয় পরিচিত।
সকলে সুপুত্র তব ভুবন-বিদিত।।
গোপাল বিপিন আর শ্রীতপস্বী রাম।
নেপাল মাধব এরা সবে গুণধাম।।
রত্নের আকর ছিল তোমার হৃদয়।
তাই বিশ্বে দিয়ে গেলে রতন নিশ্চয়।।
জহুরী সাজিয়া তুমি আনিলে জহর।
শুদ্ধ শান্ত শক্তিমন্ত সাধুর বহর।।
গুরুচাঁদ-রূপালোকে পতঙ্গের প্রায়।
ঝাঁপ দিয়ে গুণনিধি ত্যজি সমুদয়।।
আলোকের কণা তুমি তথা হতে নিলে।
দাবানল সম তাহা সর্ব্বত্র ছড়ালে।।
পাপ তাপ মায়া মোহ পুড়ে হল ছাই।
গলিত-কাঞ্চন সম বহু ভক্ত পাই।।
পতিত তরাতে ইচ্ছা গুরুচাঁদ করে।
তাঁর ইচ্ছা পূরাইলে অন্তরে বাহিরে।।
সবার বিরুদ্ধে-কর্ম্ম নিজ তেজোগুণে
হে বীর! করিলে তুমি শঙ্ক-হীন মনে।।
জ্ঞা কর্ম্ম সম্মিলনে তোমাতে হইল।
যতেক পতিত জাতি তাহাতে তরিল।।
বিধির বিধান বুঝি বুঝেছিলে মনে।
তাই গেলে নিজ-লোকে কর্ম্ম অবসানে।।
পুত্রগণে দিয়া গেলে নিজ কর্ম্ম ভার।
তাহাদের মধ্যে হেরি প্রকাশ তোমার।।
তোমার অসীম লীলা চাই লিখিবারে।
আপনা আপনি লীলা লেখ দয়া করে।।
মহাশান্ত বীর্য্যবন্ত সহজ সরল।
প্রেম-গঙ্গা হৃদি-মধ্যে করে টলমল।।
পবিত্র চরিত্র রক্ষা যাহে সবে করে।
বারে বারে শতবারে দন্তিতে সবারে।।
অগ্নি-মন্ত্রী হে তপস্বী! এসো পুনরায়।
দলিত পতিত নয় তোমাকেই চায়।।
প্রিয়তম দাদু মোর আজিকে কোথায়?
তোমার স্নেহের ছোঁয়া মহানন্দ চায়।।
পরম দয়অল তুমি এই জানি মনে।
দয়া করে এসো দাদু! মম হৃদাসনে।।
কল্পলোকে গল্প গুলি ভাসিয়া বেড়ায়।
প্রেম ডোরে বন্ধে এসে শুনাবে আমায়।।
তোমার রচিত গাঁথা তোমারে শুনাই।
তোমারে চিনুক সবে এই মাত্র চাই।।
তোমার চরণ তলে রাখিলাম শির।
হাসাও কান্দাও দাদু! ভক্ত-শ্রেষ্ঠ বীর।।”