মন দিয়া শুন-ধাম-তত্ত্বের বিচার।
দেহ মধ্যে বৃন্দাবন সর্ব্বসিদ্ধি সার।।
বাহ্যেত চুরাশী ক্রোশ বৃন্দাবন হয়।
দেহ মধ্যে সেই সব করিব নির্ণয়।।
ব্রাহ্মাণ্ডেতে যাহা আছে ভাণ্ডে তাহা পাই।
শ্রীগুরুর কৃপা হলে জানিবে সবাই।।
অতএব কহি শুন ধাম বিবরণ।
নিত্যানন্দময় স্থান ধাম বৃন্দাবন।।
বক্ষেতে মথুরা ধাম করিয়াছে স্থিতি।।
মুখদ্বারে শ্রীরাধিকা করেছে বসতি।।
ব্রহ্মরন্ধ্রে মস্তকেতে শ্রীগোলক ধাম।
কর্ণদ্বয় হয় বটে শ্রীগোকুল নাম।।
রাধাকুণ্ড শ্যামকুণ্ড হয় নেত্রদ্বয়।
কালিন্দী যমানা দুই নাসিকাতে রয়।।
জিহ্বার ভিতরে গোবর্দ্ধনের কুঠুরী।
কহিলাম ধাম-তত্ত্ব শুন কর্ণ ভরি।।
অত:পর কহি সবে শুন দিয়া মন।
আঠার মোকাম তত্ত্ব করহ শ্রবণ।
চূড়া মধ্যে চূড়ামণি ব্রহ্মপাশে স্থিতি।
পাট মধ্যে মহাবিষ্ণু করেন বসতি।।
চক্ষু মধ্যে কালাচাঁদ করিতেছে ধ্যান।
নাসিকাতে নিত্যানন্দ মধু করে পান।।
কর্ণেতে চৈতন্য গোসাই হয়ে সাবধান।
মুখেতে ভদ্রাক্ষ বসি বত্রিশ যোগান।।
জিহ্বাতে নারদ মুনি বাজায় কোন্দল।
জিহ্বা নিচে বসে নদী কায়া গঙ্গাজল।।
আলোজিহ্বারয় সরস্বতী বামেতে শ্রীদাম।
কণ্ঠদেশে শ্রীকানাই বাহুতে বলরাম।।
হস্ত মধ্যে শ্রীগোবিন্দ দান-অধিপতি।
সপ্তদ্বীপে জগন্নাথ করেন বসতি।।
নাভিমূলে ব্রহ্মা-সদা করিতেছে লীলা।
লিঙ্গে মহাদেব বসে লয়ে চন্দ্রকলা।।
গুহ্যদ্বারে বসিয়াছে নাড়ুয়া গোপাল।
কিমনীর সঙ্গে কেলী বড়ই রসাল।।
হাঁটুতে শক্তির স্থিতি বসুমতী পায়।
আঠার মোকাম তত্ত্ব শুন সমুদায়।।
এইসব তত্ত্বকথা যেই জন জানে।
নরলোক তুচ্ছ তারে দেবলোকে মানে।
শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য নিত্যানন্দ করি আশ।
পয়ার প্রবন্ধে কহে শ্রীচরণ দাস।।
……………………………………..
তত্ত্বরসামৃত জ্ঞানমঞ্জরী
-শ্রীশ্রী চরণ দাস
1 Comment