শিক্ষা সূত্রং পরিত্যক্তা কৌপিং কটি করিয়েৎ।
বৃশলি সংযোগে বাস নরকে পতনং তিথি।।
(তথাহি ক্রিয়াযোগসারে)
এই ত কহিনু আমি গয়াতীর্থ কথা।
আর কিছু শুন কর্ম্ম ফলের বারতা।।
বৈরাগ্য ধর্ম্মের কথা কহিব এবার।
বৈরাগ্যতা বেদ কর্ম্ম শাস্ত্র ব্যবহার।।
বৈরাগ্য না হয় শুধু কৌপিন ধারণ।।
আচারে বিরাগ হলে বৈরাগ্য গণন।।
কৌপিন ধারণ দণ্ড কমন্ডলু লয়।
ছিন্নকন্হা গাতে তীথেতে ভ্রময়।।
আত্ম বান্ধবের মুখ না করে দর্শন।
সপ্ত গৃহে ভিক্ষা মাত্র জীবন রক্ষণ।।
না থাকে প্রকৃতি সঙ্গ নাহি করে গৃহ।
সেই যে, বৈরাগ্য ধর্ম্ম অবশ্য জানিহ।।
শ্রীকৃষ্ণ চরণ পাদপদ্ম করি আশ।
পয়ার প্রবন্ধে কহে শ্রীচরণ দাস।।
বিশুদ্ধ বৈরাগ্য ধর্ম্ম করি আচরণ।
ঈশ্বর চিন্তায় দেহ করিলে পাতন।।
সেই সাধুজন যে সারূপ্য মুক্তি পেয়ে।
চতুর্ভূজ পূর্ব্ব দ্বারে যমপুর যেয়ে।।
ভেক্ ভগবান গ্রাহ্য বলে সে কারণে।
কহি এবে সাধুজন শুন এক মনে।।
ততাকার ভোগকাল পূর্ণ হলে পরে।
পুনরপি জন্ম লয় পরি কর্ম্মফেরে।।
ধর্ম্ম কর্ম্ম নানাবিধ আছে কত আর।
গ্রন্থ বেড়ে যায় যদি কহি সবিস্তার।।
দেবধর্ম্ম লোকধর্ম্ম স্মৃতির আচার।
এ সমস্ত কর্ম্ম বলি কহে শাস্ত্রকার।।
ধর্ম্ম অর্থ কাম মোক্ষ চতুর্বর্গ ফল।
সারূপ্য সালোক্য সৃষ্টি সামীপ্য সকল।।
এইরূপ মুক্তি কেহ বলে থাকে কর্ম্ম।
কর্ম্মফলে বারণ না হয় পুনজর্ন্ম।।
ভগবৎ তুল্য হয় সারূপ্য মুক্তিতে।
সালোক্য মুক্তিতে জীব যায় বৈকুণ্ঠেতে।।
সৃষ্টি মুক্তি ভগবৎ তুলৈশর্য পায়।
সামীপ্যেতে ভগবৎ সমীপেতে যায়।।
চতুর্বিধা মুক্তি ভোগ আছয়ে নির্ণয়।
ভোগ অন্তে তার পুনর্জ্জন্ম প্রাপ্তি হয়।
যে যেই দেবতার উপাসনা তবে।
ভক্তি নিষ্ঠা দৃঢ় রাখি দেহত্যাগ করে।।
সেই দেবধামে যায় সাধনার ফলে।
পরিমিত কাল তথা থাকে সেই স্থলে।।
দেবমন্ত্র ইষ্টমন্ত্র জপ সংকীর্তণ।
ইষ্ট চিন্তা শুদ্ধচার সন্ধ্যাদি বন্দন।।
এ সকল পুণ্যফলে স্বর্গাদি ভোগয়।
জনম মরণ তাতে বারণ না হয়।।
স্বর্গভোগ নানামত হয় নিরূপণ।
সুখভোগ স্বর্গ বলি পুরাণ কথন।।
ক্রিয়াযোগসার গ্রন্থ আলোচনা করি।
কহিলাম সার কথা শুন কর্ণ ভরি।।
সাধুজন পাদপদ্ম মনে করি আশ।
পয়ার রচিয়া কহে শ্রীচরণ দাস।।
……………………………………..
তত্ত্বরসামৃত জ্ঞানমঞ্জরী
-শ্রীশ্রী চরণ দাস