-নূর মোহাম্মদ মিলু
১৬ শাওয়াল ৫২১ হিজরীর রোজ মঙ্গলবার পেয়ারে নবী হযরত মোহাম্মদ (সা) স্বপ্নযোগে বড়পীর আব্দুল কাদের গাউছুল আযমকে বলেন, হে আবদুল কাদির! তুমি মানুষকে কেন আল্লাহর পথে আহবান করছ না? মানুষকে কেন বঞ্চিত করছো। আবদুল কাদের বলেন, আমি রাসূল ও আলীর আওলাদ। আমি তো আরবী জানি না। যদি ইরাকের লোকজন এজন্য আমাকে তিরস্কার করে?। নবীজি বললেন, কাদের তুমি মুখ খোল। নবীজি কিছু একটা পড়ে ছয় বার মুখের মধ্যে ফু দিলেন এবং নবীর মুখের লালা আবদুল কাদের জিলানীর মুখে লাগিয়ে দিলেন। অত:পর বললেন, মানুষকে হিকমত এবং উত্তম উপদেশের মাধ্যমে তোমার প্রভুর পথে পরিচালিত করো। এরপর থেকে হযরত আবদুল কাদের জিলানীর মাহফিলে এমন তাসির হতো যে, প্রত্যেক মাহফিলে ২/৩ জন লোক প্রভুর প্রেমে ইশকে ফানা হয়ে লীন হয়ে যেত।
পরবর্তীতে বড়পীর হযরত গাউছুল আজম আবদুল কাদের জিলানী (রা) মদীনা মনোয়ারা গিয়ে হযরত রসূলে করিম (দঃ) এর রওজার পার্শ্বে দাঁড়িয়ে নিম্নোক্ত কবিতা পাঠ করেন-
“ফী হালাতীল বু’দি রূহী কুনতু উরসিলুহ
তুকারবিলুল আরদা আন্নী ওয়াহিয়া নায়িবাতী।
ওয়া হাযি-হি নবাতুল আশবাহি কাদ ক্ষদারতু
ফামদুদ ইয়মী নাকা কায় তাহযা বিহা শ্বাফাতী”।
অর্থঃ “হে রাসূল! দূরে অবস্থানকালে স্বীয় রূহকে রওজা আকদাসে পাঠিয়ে দিতাম যেন আমার পক্ষ থেকে আপনাকে কদমবুচি করে আসে। এখনতো আমি স্ব-শরীরে আপনার মহান দরবারে উপস্থিত হয়েছি। সুতরাং দয়া করে আপনার হাত মোবারক বাড়িয়ে দিন। যেন আমার ওষ্ঠ তা চুম্বনের সৌভাগ্য লাভ করে।”
এ কবিতা পাঠ করা মাত্র হযরত রাসূল করিম (দ)-এর হাত মোবারক রওজা থেকে বের হয়ে আসে এবং হযরত গাউছুল আজম বড়পীর (রা) তা মুসাফাহা ও চুম্বন করলেন এবং নিজ মাথা মোবারকে রাখলেন।
উল্লেখ্য যে, পরবর্তীকালে বিখ্যাত ওলী শায়খ সৈয়দ আহমদ কবির রেফাঈ (র) মদীনা শরীফে হযরত বড় পীর (রা)-এর অনুসরণে উক্ত কবিতা পাঠ করে হযরত রাসূল করিম (স)-এর দিদার লাভের আবেদন জানালে তিনিও এ বিরল সৌভাগ্য লাভে ধন্য হন।
………………………………………………..
তথ্যসুত্রঃ
(ক) আল-বুরহানুল মুশায়্যাদ, পৃঃ ১৪-১৫
(খ) আল-বুরহানুল মুআইয়্যাদ, পৃঃ জ
(গ) কাসিদা-ই-নমান, পৃঃ ৩৩৩-৩৪
(ঘ) সূরা নাহল, আয়াত-১২৫