মহাপ্রভুর ভোজন আরতি
(অদ্বৈত প্রভুর গৃহে)
ভজ পতিত উদ্ধারণ শ্রীগৌর হরি, শ্রীগৌরহরি,
নবদ্বীপ বিহারী জয় জয় দয়াময় দীন-হিতকরী।
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য প্রভু কর অবধান।
ভোগ মন্দিরে প্রভু করহ পরান।
বোমেতে অদ্বৈত প্রভু দক্ষিণে নিতাই।
মধ্য আসনে বসে চৈতন্য গোঁসাই।।
অদ্বৈত ঘরণ্য আর শান্তিপুরী নারী।
হুলাহুলি দিল সবে গৌরবদন হেরি।
শাক শুকুতা আদি নানা উপচার।
আনন্দে ভোজন করে শচীন কুমার।।
দধি দুগ্ধ ঘৃত ছানা আর লুচি পুরী।
আনন্দে ভোজন করে নদীয়াবিহারী।
ভোজন করিয়া প্রভু করিল আচমন।
সুবর্ণ খড়িকায় করে দন্তের শোধন।।
বসিতে আসন দিল রত্ন সিংহাসন।
কর্পূর তাম্বুল যোগায় প্রিয় ভক্তগণ।।
ফুলের চৌয়ারী ঘর ফুলের কেয়ারী।
ফলের রত্ন সিংহাসন চাঁদোয়া মশারী।।
ফুলের মন্দিরে প্রভু করিল শয়ন।
গোবিন্দ দাস করে চরণ সেবন।।
শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভুর দাসের অনুদাস।
সেবা অভিলাষ মাগে নরোত্তম দাস।।
মহাপ্রভুর ভোজন আরতি
(শ্রীবাস মন্দিরে)
ভজ শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ।
গদাধরের প্রাণ আমার প্রভু গৌরচান্দ্র।।
শ্রীবাস শ্রীচৈতন্যকে নিমন্ত্রণ করিল।
মধ্যাহ্ন সময়ে প্রভু তথায় আসিল।।
শ্রীবাস গৃহিণী দিল বসিতে আসন।
সুবর্ণ ভৃঙ্গারে প্রভুর ধোয়াল চরণ।।
এই নিবেদন দাসীর এই নিবেদন।।
ভোগ মন্দিরেতে প্রভু করহ গমণ।।
তবে মহাপ্রভু উঠি মন্দিরে চলিল।
ভক্তগোষ্ঠী সহ প্রভু ভোজনে বসিল।।
বামেতে অদ্বৈত প্রভু দক্ষিণে নিতাই।
মধ্য আসনে বসে চৈতন্য গোঁসাই।।
সঘৃত পলান্ন আর ব্যঞ্জন সারি সারি।
ভোগের উপরে দিল তুলসী মঞ্জরী।।
গঙ্গাজল তুলসী দিয়া কৈল নিবেদন।
আনন্দে ভোজন করে শচীন নন্দন।।
দধি দুগ্ধ ঘৃত ছানা নানা উপচার।
আনন্দে ভোজন করে শচীন কুমার।।
শ্রীবাস গৃহিণী আর নবদ্বীপ নারী।
উলুধ্বনি দেয় সবে গৌরবদন হেরি।।
নাহি জানি পরিপাটি না জানি রন্ধন।
শুখা রুখা একমুষ্টি করহ ভোজন।।
ভোজনের অবশেষ কহিতে না পারি।
সুবণ পাত্রেতে দিল সুবাসিত বারি।।
ভোজন করিয়া প্রভু করেন আচমন।
সুবর্ণ খড়িকায় করে দন্তের শোধন।।
আচমন করিয়া প্রভু বসে সিংহাসনে।
কর্পূর তাম্বুল যোগায় প্রিয় ভক্তগণে।।
তাম্বুল খাইয়া করে পালঙ্কে শয়ন।
গোবিন্দ দাস করে চরণ সেবন।।
ফুলের চৌয়ারী ঘর ফুলের কেয়ারী।
ফুলের রত্ন সিংহাসন চাঁদোয়া মশারি।।
ফুলের পাপড়ী প্রভুর উড়ে পরে গায়।
তার মধ্যে মহাপ্রভুর সুখে নিদ্রা যায়।
শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভুর দাসের অনুদাস।
সেবা অভিলাষ মাগে নরোত্তম দাস।।