রাম ভরতের পুনরাগমন।
পয়ার
একদিন মহাপ্রভু ওঢ়াকাঁদি ব’সে।
ভকত সুজন কত বসিয়াছে পার্শ্বে।।
তারকেরে কহিলেন প্রভু হরিচাঁদ।
কতদিন করে জীবে সংসারের সাধ।।
বাড়ী থেকে সকলেরে কহেন প্রকারে।
মানুষ আসিবে পুনঃ আমা দেখিবারে।।
যে মানুষের মিয়াদ খাটে রামধন।
সে মানুষ করিতেছে পুনরাগমন।।
আমি যে কি করি তার নাহি নিরূপণ।
তোমরা ভকতি তারে কর সর্বজন।।
কুটি নাটি সব কাটি করিবে দমন।
জানাইবে মূল ধর্ম সূক্ষ্ম সনাতন।।
কুটি নাটি কাটিয়া করিয়া পাপ ক্ষয়।
তোমরা সকলে কর সে মানুষে ভয়।।
এত বলি সতর্ক করিল সবাকারে।
প্রভু লীলা সাঙ্গ করিলে তারপরে।।
কতদিনে ওঢ়াকাঁদি রাজ-জী উদয়।
ঠাকুরে না দেখে কাঁদে পড়িয়া ধরায়।।
বড়কর্তা গুরুচাঁদে যায় ধেয়ে ধেয়ে।
তুমি দাদা দিলে কেন বাবারে ছাড়িয়ে।।
তুমি যদি না ছাড়িতে যাইত না ছেড়ে।
ভাল চা’স যদি তবে এনেদে আমারে।।
পুনঃ বলে নারে দাদা তোর দোষ নাই।
এইরূপে লীলা করে গোলোকের সাঞী।।
জগত পতির খেলা বুঝিবারে নারি।
যুগে যুগে এইরূপে বহুলীলাকারী।।
শেষে ধৈর্য ধরিয়া রহিলা ওঢ়াকাঁদি।
হরিচাঁদ বলিয়া ফিরিত কাঁদি কাঁদি।।
বড়কর্তা গুরুচাঁদ সঙ্গেতে ভ্রমণ।
দুষ্ট দুরাচার সব করিত দমন।।
কিছুদিন পরে গুরুচাঁদকে কহিয়া।
তীর্থ ভ্রমণের ছলে গেলেন চলিয়া।।
ফিরে না আসিল আর গিয়া তীর্থ ধাম।
তীর্থে তীর্থে করিতেন হরিচাঁদ নাম।।
প্রশস্ত গার্হস্থ্য ধর্ম জীবে শিক্ষা দিতে।
হরিচাঁদ অবতীর্ণ হন অবনীতে।।
ব্রাহ্মণ কায়স্থ সাহা শূদ্র সাধু নর।
ছত্রিশ বর্ণের লোক হ’ল একত্তর।।
দ্বিজ নমঃশূদ্র ছিল অকর্মে পতিত।
পতিত পাবন তার করিবারে হিত।।
পঞ্চ অংশে বঙ্গদেশে শেষ লীলা জন্য।
হরিচাঁদ নাম ল’য়ে হ’ল অবতীর্ণ।।
মহানন্দ চিদানন্দ গোলোক আদেশ।
হরিলীলা রচিবারে নরহরি বেশ।।
প্রভু গুরুচাঁদ পাদপদ্ম ভেবে হৃদে।
রচিল তারকচন্দ্র ভাবি হরিচাঁদে।।