তারকচন্দ্র-অমর
মার্গশীর্ষ শেষভাগে তারিখ একুশে।
কায়া ছাড়ি গোস্বামীজী চলে নিজে দেশে।।
দিকে দিকে উঠে ঘোর ক্রন্দোনের রোল।
পশুপাখী, নরনারী সবে উতরোল।।
অপূর্ব্ব শক্তির কথা প্রত্যক্ষ ঘটনা।
মৃত্যু-পরে যেই বার্ত্তা হইল রটনা।।
চন্দ্রদীঘলীয়াবাসী জগদীশ নাম।
ব্রাহ্মণ কুলেতে জন্ম সেই গুণধাম।।
যেদিন তারকচন্দ্র দেহ তেয়াগিল।
সে দিনতে তেঁহ বটে শহরেতে ছিল।।
নামেতে মাদারীপুর শহর সুন্দর।
আড়িয়ালখাঁর পার সুঠাম বন্দর।।
পথিমধ্যে সে তারক তারে দেখা পায়।
ডেকে বলে “জগদীশ শুনহে আমায়।।
ব্রহ্মপুত্রে যাইবারে করিয়াছি মন।
গৃহে ফিরে আর আমি যাবনা এখন।।
আমার দৌহিত্র আছে মম গৃহ পরে।
তার লাগি এই জুতা কিনেছি শহরে।।
তুমি এই জুতা দিয়ে যাও তার লাগি।
তব ঠাঁই এইবারে বিদায় যে গামি।।”
জগদীশ পরে তবে দেশেতে ফিরিল।
দেশে আসি জয়পুরে উপস্থিত হল।।
আসি শোনে সেই দিনে জুতা কিনিয়াছে।
একদিন পূর্ব্বে তাঁর গোস্বামী মরেছে।।
হায়! হায়! কবি দ্বিজ কান্দিতে লাগিল।
দেশে দেশে সে ঘটনা সকলে কহিল।।
আজো সেই জুতোজোড়া আছে জয়পুরে।
সকলে রেখেছে তাহা তারক-মন্দিরে।।
তারকের লীলা খেলা বেলা শেষ হল।
সাধু জনে সবে মিলে হরি হরি বল।।