ভবঘুরেকথা

১.
মালার উৎপতি কথা শুন সাধুজন।
গুরুবৈষ্ণব পাঠতত্ত্বে আছয়ে বর্ণন।।
স্বাতীর নীরদ বিন্দু সাগরে পড়িল।
শক্তি আদি পরশনে মুকুতা জন্মিল।।
বিশ্বামিত্র পেয়ে মুক্তা দিল নারায়ণে।
নারায়ণ দিল পরে লক্ষ্মীর সদনে।।
লক্ষ্মীদেবী গেঁথে দিল নারায়ণ গলে।।
কিবা অপরূপ শোভা দোলে বক্ষ:স্থলে।।
নারায়ণ সেই মালা লক্ষ্মীরে পরায়।
কিছু মুক্তা দিয়া দেবী কেশব সাজায়।।
তুলসী আসিয়া তথা মুকুতা মাগিল।
লক্ষ্মীদেবী তুলসীরে মালা নাহি দিল।।
শুন গো তুলসী প্রিয়ে বলে নারায়ণ।
মুকুতা মালার জন্য না কর ভাবন।

তোমার অঙ্গেতে হবে মালার জনম।
বিশ্বমিত্র সেই মালা করিবে কর্ত্তন।
তারপর গেঁথে এনে দিবে শিবস্থান।
নারদের শিক্ষাকালে মুণি পাবে দান।।
নারদ করিবে সর্ব্ব বৈষ্ণবে প্রদান।
হইবে তুলসী তায় তোমার সম্মান।।
পাপপ রূপেতে তব অংশ হতে হবে।
তুলসীর বৃক্ষ বলি সংসারে ঘোষিবে।
জলপদ্ম পুষ্প দ্বারা শ্রীকৃষ্ণ পূজন।
জন্মান্তরে করিবেক সর্ব্ব ভক্তগণ।।
দেবদেবীর পূজা আদি সকলে করিবে।
বৈষ্ণবমণ্ডলে তোমায় শিরেতে ধরিবে।।
বরদান তুলসীরে দিল নারায়ণ।
শুনিয়া তুলসীদেবী আনন্দিত মন।।
বর পেয়ে তুলসী তথা হৈতে যায়।
তুলসীরে ধন্য বলি জগতে ঘোষায়।।

২.
মালা কাটে মালাবতী মালার কিবা নাম।
সেবকে পরয়ে মালা পুরু দিল নাম।।
হস্ত নাই পদ নাই স্ফটিকের জ্যোতি।
কানাইর বাজারে মালা হয়েছে উৎপত্তি।।
সেই মালা ঘর্ম্মে খায় শোষে আর পিয়ে।
হরিনাম মহামন্ত্রে সেই মালা জীয়ে।।
মালা লয়ে গেল শিষ্য গুরুর সদন।
কার্পাসের সূত্রে মালা করিয়া গ্রন্থন।
পুষ্প চন্দন আর তুলসী শঙ্খজল।
সদ্যজাত মন্ত্রে মালা করিল নির্ম্মল।।
কৃষ্ণমন্ত্রে গুরুবীজে জীব দিল দান।
বৈরাগী বৈষ্ণব ভক্তে করিয়া সম্মান।।
মালার নাম মুক্তাহার নাম হরিবংশ।
যে না জানে মালার তত্ত্ব তার হয় ধ্বংস।।
গুরুজন বৈষ্ণবজন ভক্তগণ ঠাঁই।
বহু বহু সাধুজনের শ্রীমুখেতে পাই।।

Related Articles

1 Comment

Avarage Rating:
  • 0 / 10
  • শান্ত দাস , মঙ্গলবার ১৭ আগস্ট ২০২১ @ ৩:৩৩ অপরাহ্ণ

    স্বাতীর নীরদ বিন্দু সাগরে পড়িল ।
    শক্তি আদি পরশনে মুকুতা জন্মাইল ।।
    – এখানে স্বাতীর নীরদ এবং শক্তি আদি এর মানেটা একটু বলবেন দয়া করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!