ভবঘুরেকথা

শ্রীপ্রমথরঞ্জন ঠাকুর

মূলসূত্র ধরে এবে বলি কিছু কথা।
প্রমথ শুনিল গৃহে সকল বারতা।।
তের শ’ তেত্রিশ সাল বাংলা গণনায়।
ভাদ্র মাসে সে প্রমথ যাত্রা করি যায়।।
অমূল্যকুমার দাস দোঁহে এক সঙ্গে।
চলিল সাগর পথে অতি মনোরঙ্গে।।
গৃহ হ’তে বিদায়ের কি মধুর দৃশ্য!
বিষাদ মাখানো তা’তে আছিল অবশ্য।।
দেশবাসী সবে বটে আনন্দিত মন।
জনে জনে করিলেন সু-অভিনন্দন।।
উৎসাহ বাড়িল তা’তে কিছু সন্দ’ নাই।
কিন্তু সব গেল ডুবে এসে এক ঠাই।।
প্রভুর চরণে যবে করে প্রণিপাত।
আশীর্বাদ করে প্রভু শিরে রাখি হাত।।
বুকের জমাট বাধ বুঝি ভেঙ্গে গেল।
প্রমথের হাত ধরে প্রভুজী কান্দিল।।
প্রমথ লুটায়ে তা’তে পড়িলেন কোলে।
প্রভুর চরণে ভিজায় নয়নের জলে।।
প্রভু বলে “যাও দাদা! করি আশীর্বাদ।
পূর্ণ যেন করে প্রভু তব মনোসাধ।।
এ বংশ উজ্জ্বল কর স্বদেশে ফিরিয়া।
যেতে যেন পারি আমি চোখেতে দেখিয়া।।”
এইভাবে গৃহ হ’তে বিদায় হইল।
সঙ্গে সঙ্গে বড় মাতা কলিকাতা এল।।
নয়ন রঞ্জন পুত্র প্রমথরঞ্জন।
জননীর দুই চোখে ঝরিল শ্রাবণ।।
বিদায়ের পূর্বভাগে ডাকিল গোপালে।
সংবাদ পাইয়া সাধু এল দলে বলে।।
সাধুরে বিনয় করি আশীর্বাদ চায়।
কাঁদিয়া গোপাল বলে “বাঞ্ছা পূর্ণ হয়।।”
অসীম সাগর বুকে চলিলেন বীর।
মতুয়ারা দিল অর্ঘ্য ঢেলে অশ্রুনীর।।
প্রমথরঞ্জন তবে বিলাত পৌছিল।
পরে শোন মহাপ্রভু কি কার্য করিল?
শ্রীগুরুচরিত গাঁথা বিপদাপহারী।
মহানন্দ বলে সবে শোন নিষ্ঠা করি।।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!